Advertisement
০৪ মে ২০২৪

অসম-ত্রিপুরায় গাছ পুঁতে লগ্নির টোপ রোজভ্যালির

কলকাতায় অভিযোগ করা হয়েছে একাধিক। বেসরকারি অর্থ লগ্নি সংস্থা রোজভ্যালির বিরুদ্ধে এ বার গুয়াহাটি এবং ত্রিপুরাতেও লিখিত অভিযোগ দায়ের করে তদন্ত শুরু করে দিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। অভিযোগ, অসম-ত্রিপুরায় বেআইনি ভাবে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা তুলেছে ওই সংস্থা। এর আগে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ওড়িশায় রোজভ্যালির বিরুদ্ধে একই অভিযোগ দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে ইডি। পশ্চিমবঙ্গে রোজভ্যালি প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা তুলেছে বলে অভিযোগ এনেছে তারা। এ বার তার সঙ্গে জুড়ল আরও দু’টি রাজ্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা ও গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:৪১
Share: Save:

কলকাতায় অভিযোগ করা হয়েছে একাধিক। বেসরকারি অর্থ লগ্নি সংস্থা রোজভ্যালির বিরুদ্ধে এ বার গুয়াহাটি এবং ত্রিপুরাতেও লিখিত অভিযোগ দায়ের করে তদন্ত শুরু করে দিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। অভিযোগ, অসম-ত্রিপুরায় বেআইনি ভাবে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা তুলেছে ওই সংস্থা।

এর আগে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ওড়িশায় রোজভ্যালির বিরুদ্ধে একই অভিযোগ দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে ইডি। পশ্চিমবঙ্গে রোজভ্যালি প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা তুলেছে বলে অভিযোগ এনেছে তারা। এ বার তার সঙ্গে জুড়ল আরও দু’টি রাজ্য।

তদন্তকারীদের অভিযোগ, সারদা গোষ্ঠী বাজার থেকে যত টাকা তুলেছে, তার প্রায় পাঁচ গুণ তুলেছে রোজভ্যালি। ইডি সূত্রের খবর, প্রধানত জমি দেখিয়ে এবং হোটেলের ঘর বুক করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের দু’টি রাজ্যে টাকা তুলেছে ওই সংস্থা। মূল্যবান গাছের চারা দেখিয়েও টাকা তোলা হয়েছে।

কী ভাবে?

ইডি-র এক অফিসার জানান, লগ্নিকারীকে গাছের চারা দেখিয়ে একটি নির্দিষ্ট জমিতে তা পুঁতে দেওয়া হয়েছে। সেই জমির মালিকানা রয়েছে রোজভ্যালির হাতে। বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে দফায় দফায় টাকা নিয়ে বলা হয়েছে, ২০ বছর পরে ওই গাছ বড় হলে তার মালিকানা পাবেন তিনি। তখন ওই গাছ বিক্রি করে যত টাকা পাওয়া যাবে, তা বিনিয়োগ করা টাকার থেকে অনেক গুণ বেশি হবে। “এ ভাবে প্রলোভন দেখিয়ে বিনিয়োগকারীর কাছে থেকে টাকা তোলা সম্পূর্ণ বেআইনি,” বললেন ইডি-র ওই অফিসার।

এর মধ্যেই ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে রোজভ্যালির ২৮০৭টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সিল করে দিয়েছে ইডি। ওই সব অ্যাকাউন্টের প্রায় ২৯৫ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তবে ইডি যে-হিসেব দিয়েছে, রোজভ্যালি অসম থেকে তার থেকে অনেক বেশি টাকা তুলেছে বলে ওই রাজ্যের পুলিশের দাবি। তাদের হিসেব অনুযায়ী রোজভ্যালি হলিডে মেম্বারশিপ প্ল্যান এবং রোজভ্যালি রিয়েল এস্টেট মিলিয়ে শুধু অসম থেকেই তোলা হয়েছে এক হাজার ছ’কোটি টাকা। অসম পুলিশের এক কর্তা জানান, সেবি গত বছরই নিয়ম না-মেনে আমানত সংগ্রহের জন্য রোজভ্যালির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। পরে গুয়াহাটি হাইকোর্ট সেই নিষেধাজ্ঞার উপরে স্থগিতাদেশ দিলেও রোজভ্যালিকে নির্দেশ দেয়, এক খাতে তোলা টাকা অন্য খাতে পাঠানো বা ব্যবহার করা চলবে না।

শুধু ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নয়, জমি ও বাড়ি-সহ রোজভ্যালির যাবতীয় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে ইডি। তদন্তকারীরা জানান, যে-ভাবে সারদা কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পরে ওই গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের যাবতীয় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল, রোজভ্যালির ক্ষেত্রে তেমনটাই করা হচ্ছে।

ইডি-র খবর, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে তোলা টাকায় রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিলাসবহুল হোটেল ও রিসর্ট বানিয়েছে রোজভ্যালি। সেই সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে। তদন্তকারীরা জানান, সিল করে দেওয়া ২৮০৭ অ্যাকাউন্টের বাইরে তাদের দু’টি সহযোগী সংস্থার প্রায় ২০০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে এখন লেনদেন চালাচ্ছে রোজভ্যালি।

রোজভ্যালির পক্ষ থেকে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, তাদের বাজার থেকে তোলা ১২ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। তার প্রেক্ষিতে ইডি সমস্ত টাকা বাজেয়াপ্ত করে নিয়েছে। সেই অভিযোগ নিয়েই তারা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

rose valley gautam kundu ed
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE