ঘরের ‘সদস্য’ হয়ে ওঠা একটি কুকুরের আচমকা মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছিলেন ওই পরিবারের সকলে। শোক কাটাতে শেষে আটটি কুকুর বাড়িতে নিয়ে এলেন সুষমা ঠাকুররা। স্বামী-স্ত্রী, দুই ছেলের সংসারে মিলেমিশে গিয়েছে গোল্ডেন রিট্রিভার প্রজাতির ওই সারমেয়রা।
সকাল ৮টায় প্রাতরাশ, দুপুরে হাল্কা কিছু খাবার, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার মধ্যে নৈশাহার ঠাকুর পরিবারে এমনই আদর-যত্নে পালিত হচ্ছে প্রিন্সেস, বাবুল, ম্যাজিকরা।
সুষমাদেবীর বড় ছেলে হর্ষের বয়স ১৩ বছর। ছোট ছেলে যশের ৭। সন্তানদের মতোই প্রিন্সেসদেরও ভালবাসেন ওই দম্পতি। ওই মহিলা জানান, মাস ছ’য়েক আগে সেনা বাহিনীর কর্নেল স্বামীর বদলির পর, গাড়ি ভাড়া করে পোষ্যদের জব্বলপুর থেকে শিলচরে নিয়ে এসেছিলেন।
সুষমাদেবী জানান, আগে তাঁদের বক্সার প্রজাতির একটি কুকুর ছিল। সেটির মৃত্যুর পর মনমরা হয়ে পড়েছিল গোটা পরিবার। শোক কাটাতে দিল্লি থেকে একটি গোল্ডেন রিট্রিভার প্রজাতির কুকুর নিয়ে আসা হয়। নাম দেওয়া হয় বাবুল। কিন্তু বক্সারের অভাব পোষাতে পারছিল না সে। সারাদিন চুপচাপই থাকত। সুষমাদেবীরা বুঝলেন, একা বলেই মনমরা বাবুল। এরপরই চেন্নাই থেকে নিয়ে আসা হয় ম্যাজিককে। এ বার তাঁদের ঘর জমজমাট। বাবুলেরও খেলার সঙ্গী হাজির। দু’টির মেজাজই ভালো দেখে নিয়ে আসা হয় আরও দু’টি কুকুর। চারটির মধ্যে তিনটিই মাদী। একটি পুরুষ। কিছুদিন পর চারটি বাচ্চার জন্ম হয় তিনটি ছেলে, একটি মেয়ে।
আটটি কুকুরকে নিয়েই ‘শিলচর কেনেল ক্লাব’-এর প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার ইচ্ছা ছিল সুষমাদেবীর। কিন্তু, যাতায়াতের সমস্যার জন্য প্রিন্সেস, বাবুল আর ম্যাজিককে নিয়েই যান সেখানে। বিভিন্ন প্রজাতির মোট ৮২টি কুকুর ওই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল।
প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছিল রামপুর হাউন্ড, ডোবারম্যান, জার্মান শেফার্ড, পাগ-সহ নানা প্রজাতির সারমেয়। বেঙ্গালুরু, কলকাতা, শিলং, আইজল, গুয়াহাটি থেকে পোষ্যদের নিয়ে শিলচরে পৌঁছেছিলেন অনেকে। দর্শকের মন জিতলো সুষমাদেবীর তিনটি কুকুরও।
সংগঠনের সভাপতি জয়ন্তকুমার ঘোষ জানান, ১৯৯১ সালে শিলচরে কেনেল ক্লাব তৈরি হয়। পরের বছর থেকে সেখানে জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতার সূত্রপাত। ২০০৫ সাল পর্যন্ত চ্যাম্পিয়নশিপের আয়োজন করা হয় এরপর, ৮ বছর নানা কারণে প্রতিযোগিতা বন্ধ ছিল। তিনি জানিয়েছেন, এ বার একইসঙ্গে অনুষ্ঠিত হল ২০ ও ২১ তম সারমেয় প্রদর্শনী ও প্রতিযোগিতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy