আফিমের নেশায় বুঁদ অরুণাচলের চিন, মায়ানমার সীমান্তের গ্রামবাসীরা। চিন্তায় পড়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। পড়শি দেশের সেনা-গতিবিধি, অনুপ্রবেশের খবর পাচ্ছে না নিরাপত্তা বাহিনীও।
নেহরু-জমানা থেকে অরুণাচলপ্রদেশ সীমান্তে সন্দেহজনক ঘটনার কথা জানতে প্রশাসনের ভরসা স্থানীয় গ্রামবাসী, পশুপালকরাই। ছবিটা এখন বদলেছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, আফিমের নেশায় মজেছেন সেখানকার অনেকেই। নিয়ন্ত্রণরেখায় নজর রাখা তো দূর, প্রতিদিনের কাজেই মন নেই তাঁদের। দিবাং উপত্যকা, আপার সিয়াং, তিরাপ, চাংলং, রোয়িং, লোহিতের চিন ও মায়ানমার ঘেঁষা এলাকায় পরিস্থিতি একই রকম। ‘অশনি সঙ্কেত’ দেখে রাজ্যকে সতর্ক করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, সীমান্ত-সংলগ্ন কয়েকটি গ্রামে আফিম চাষকেই জীবিকা করেছেন বাসিন্দারা। বছর দু’য়েক আগে শুরু হওয়া সচেতনতা অভিযানে কাজ হয়নি। কার্যত অরক্ষিত মায়ানমার সীমান্তের দু’দিকে আফিমের রমরমা ব্যবসা ছড়িয়েছে। ৬-৭ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ মাদকের পুরিয়া। অবাধে চলছে হেরোইনের কারবার।
সরকারি সাহায্যে মুরগি, চা, সব্জি চাষের উদ্যোগে তাই তেমন সাড়া মিলছে না।
এ কথা মেনে নিয়ে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টাঙ্গা বায়ালিং জানান, আফিম চাষ রুখতে বিশেষ পদক্ষেপ করছে সরকার। এখনও পর্যন্ত মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে ১৪০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে মাদক পাচার বন্ধ করতে জেলা পুলিশকে সতর্ক করা হয়েছে। সীমান্তে কঠোর নজরদারি চলছে। প্রায় সাড়ে পাঁচশো হেক্টর আফিম ক্ষেত নষ্ট করা হয়েছে। গ্রামবাসীদের জন্য বিকল্প রোজগারের ব্যবস্থাও করেছে সরকার।
কেন্দ্রীয় ‘মাদক নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো’র (এনসিবি) তরফে রাজ্যের কাছে সতর্কবার্তা পৌঁছেছে। এনসিবি-র আশঙ্কা, রাজ্যের প্রভাবশালী কয়েক জন সীমান্তের গ্রামে আফিম চাষ এবং পাচারে জড়িত। উপগ্রহ-চিত্রে দেখা গিয়েছে, পাহাড় ঘেরা দুর্গম এলাকায় আফিমের চাষ চলছে। সে সব নষ্টে সেনার সাহায্য চেয়েছে এনসিবি।