সারা ভারত যখন কংগ্রেসের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে তখন উত্তর-পূর্বের মানুষ অনেকটাই তাদের পাশে রয়েছে। কিন্তু সেখানেও একের পর এক রাজ্যে অন্তর্দ্বন্দ্বের জেরে নাজেহাল রাজ্য নেতৃত্ব। অসমের পর মণিপুর ও মেঘালয়েও কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দল সংক্রমণের মতো ছড়িয়ে পড়ছে।
অসমে মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের বিরুদ্ধে বিধায়কদের বড় অংশ বিদ্রোহ করায় এআইসিসির দুই প্রতিনিধি এখানে এসে সকলের সঙ্গে কথা বলে গিয়েছেন। পরিস্থিতি এমন হয়েছে, কলহ না মিটলে লোকসভা ভোটের মতোই পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনেও অসমে কংগ্রেস কোণঠাসা হতে পারে। সম্ভবত পরের সপ্তাহেই অসম সরকারের নেতৃত্ব বদল নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। তার মধ্যেই মণিপুরে কংগ্রেসের প্রায় অর্ধেক বিধায়ক মন্ত্রিত্ব চেয়ে বিদ্রোহী হয়ে উঠেছেন। মেঘালয়েও মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তৈরি হয়েছে বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী। মণিপুরের বিদ্রোহীরা মন্ত্রিত্ব চান। মেঘালয়ের বিদ্রোহীরা বলছেন, মুখ্যমন্ত্রীর স্বৈরাচারে হাইকম্যান্ড রাশ না টানলে তাঁরা মন্ত্রিত্বও নেবেন না।
মণিপুরে বিদ্রোহীদের দাবি, পরবর্তী বিধানসভা অধিবেশনের আগেই মন্ত্রিসভায় রদবদল করতে হবে। দলীয় সূত্রে খবর, বিদ্রোহী বিধায়কের সংখ্যা ২২-২৪ জন। ৬০ সদস্যের বিধানসভায় কংগ্রেসের হাতে রয়েছে ৪৭টি আসন। বিদ্রোহীরা অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে মন্ত্রিত্বের ব্যাপারে নিশ্চিত প্রতিশ্রুতি চাইছেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে তাঁরা এ বার দিল্লির দ্বারস্থ। তাঁদের বক্তব্য, হাইকম্যান্ড দাবি না মানলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। অবশ্য বিদ্রোহীরা কেউই প্রকাশ্যে আসতে চাইছেন না। তাঁদের দাবি, ইবোবিকে নিয়ে তাঁদের আপত্তি নেই। নেতৃত্ব বদলও তাঁরা চাইছেন না। কিন্তু মন্ত্রিসভায় ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বাকিদেরও ঠাঁই দিতে হবে।
মেঘালয়ে সমস্যা অন্য। সেখানে কংগ্রেস বিধায়কদের একাংশের আক্রমণের নিশানা পূর্তমন্ত্রী স্নিয়াউভালাং ধর ও মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা। মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে বিদ্রোহী বিধায়কদের অভিযোগ, নিজের হাতে অনেকগুলি দফতর রেখে দিলেও মুকুল অধিকাংশ সময়ই সচিবালয়ে আসেন না। মাসে মাত্র দিন দশেক সচিবালয়ে থাকেন তিনি। ফলে বহু দফতরের সরকারি ফাইল আটকে থাকে। তাঁর কাজ করার ভঙ্গীও স্বৈরতান্ত্রিক। মুখ্যমন্ত্রীর অমনোযোগের ফলেই রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ছে। পাশাপাশি তাঁদের অভিযোগ, লোকসভা নির্বাচনের সময় দলের অনুশাসনের বিপক্ষে গিয়ে সাংসদ ভিনসেন্ট পালার প্রচারে যেতে রাজি হননি ধর। কিন্তু তা সত্ত্বেও মুকুল তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে সরাচ্ছেন না। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও পালার হয়ে লোকসভা ভোটে প্রচার করেননি। তাঁদের দাবি, হাইকম্যান্ড অবিলম্বে হস্তক্ষেপ না করলে পরবর্তী
বিধানসভা নির্বাচনে অন্তর্দ্বন্দ্বের জেরেই কংগ্রেস পরাজিত হবে। বিদ্রোহীরা নিজেদের মধ্যে আলোতনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, মন্ত্রিসভায় অদল-বদল হলেও তাঁরা কেউ মন্ত্রিত্ব গ্রহণ করবেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy