Advertisement
E-Paper

কন্যা সুস্মিতার বড় পুঁজি বাবা সন্তোষমোহনই

কালীমোহন দেব থেকে সুস্মিতা দেব। শিলচরের দেব পরিবারে এখন চলছে রাজনীতির চতুর্থ প্রজন্ম। এক অদ্ভুত মিল রয়েছে এই চার প্রজন্মের মধ্যেকালীমোহন, সতীন্দ্রমোহন, সন্তোষমোহন এবং সুস্মিতা, সকলেরই সংসদীয় রাজনীতির হাতেখড়ি শিলচর পুরসভা থেকেই। কালীমোহন ১৮৮২ থেকে ১৮৮৬ সাল পর্যন্ত পুরসভার সদস্য ছিলেন।

উত্তম সাহা

শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৪ ০৩:৩৫
শিলচর লোকসভা আসনে কংগ্রেসের টিকিট পাওয়ার পরে বাবা সন্তোষমোহন দেবের সঙ্গে সুস্মিতা দেব। স্বপন রায়ের তোলা ছবি।

শিলচর লোকসভা আসনে কংগ্রেসের টিকিট পাওয়ার পরে বাবা সন্তোষমোহন দেবের সঙ্গে সুস্মিতা দেব। স্বপন রায়ের তোলা ছবি।

কালীমোহন দেব থেকে সুস্মিতা দেব। শিলচরের দেব পরিবারে এখন চলছে রাজনীতির চতুর্থ প্রজন্ম। এক অদ্ভুত মিল রয়েছে এই চার প্রজন্মের মধ্যেকালীমোহন, সতীন্দ্রমোহন, সন্তোষমোহন এবং সুস্মিতা, সকলেরই সংসদীয় রাজনীতির হাতেখড়ি শিলচর পুরসভা থেকেই। কালীমোহন ১৮৮২ থেকে ১৮৮৬ সাল পর্যন্ত পুরসভার সদস্য ছিলেন। তাঁকে বাদ দিলে সতীন্দ্রমোহন, সন্তোষমোহন, বীথিকা ও সুস্মিতা দেব সবাই পুরপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। সতীন্দ্রমোহন ও বীথিকা দেবী পরবর্তী পর্যায়ে বিধানসভার সদস্যও হন। সন্তোষমোহন পুরসভা থেকে সোজা সংসদে, লোকসভায়। সুস্মিতা পুরসভা থেকে বিধানসভা হয়ে এ বার কংগ্রেসের লোকসভা প্রার্থী। জিতলে সম্পূর্ণ হবে দেব পরিবারের চতুর্থ প্রজন্মের একটি বৃত্ত।

২০০৯-এ শিলচর পুর নির্বাচনে প্রথম ভোটে দাঁড়ান আইনবিদ সুস্মিতা। পরে ২০১১-তে বিধানসভার ভোটে মা বীথিকা দেবের আসনে সুস্মিতাকে প্রার্থী করে কংগ্রেস। এ বার তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাবার জায়গায় পৌঁছনোর জন্য। সুস্মিতার কথায়, “আমার কাছে এই লড়াই একটা চ্যালেঞ্জ। পুরসভা, বিধানসভা কিংবা লোকসভাটিকিট পাওয়ার পর এখন লক্ষ্য জয়ের জন্য সর্বতোভাবে ঝাঁপানো।” জয়ের ব্যাপারে তিনি আশাবাদী। এ পর্যন্ত হারেননি কখনও। লোকসভা নির্বাচনেও তার ব্যতিক্রম হবে না বলে তাঁর দাবি। তিনি ভোট চাইবেন শিলচরের দেব পরিবারের দীর্ঘ দিনের কাজের নিরিখেই।

সন্তোষমোহন দেবের কন্যা, সতীন দেবের নাতনি, এই পরিচিতিটা শিলচরে তাঁর বড় পুঁজি। ২০০৯-এর লোকসভা ভোটে কবীন্দ্র পুরকায়স্থ ও বদরুদ্দিন আজমলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তৃতীয় স্থানে ছিটকে যান সন্তোষমোহন। সেই থেকেই সন্তোষবাবুর শরীর ভাল যাচ্ছিল না।

এর আগেও একবার পরাস্ত হয়েছিলেন। ১৯৯৮ সালে। সে বার সরকার গঠন করে এনডিএ। প্রথম দিন থেকে সেই সরকারের অস্থিরতা টের পাওয়া যাচ্ছিল। ১৩ মাসে তার পতন ঘটে। ফলে পরাজয়ের অবসাদ নয়, সে বার ফল ঘোষণার দিন থেকেই সন্তোষবাবু প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন পরবর্তী নির্বাচনের জন্য। কিন্তু ২০০৯-এর ছবিটা ভিন্ন। তবে ২০১১-র বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত স্থানীয় রাজনীতিতে সময় দিয়েছিলেন তিনি। তবে শরীর একেবারেই ভেঙে গিয়েছে। গত বছর রথযাত্রার দিন ঘর থেকে উঠোনে গিয়েছেন হুইল চেয়ারে। দুর্গাপুজোর উদ্বোধনে গিয়ে একটি বাক্যও বলতে পারেননি। শত শত মানুষের সামনে শিশুর মতো হাউহাউ করে কেঁদেছেন। সহজে মেজাজ হারানো এবং অসংলগ্ন কথাবার্তার জন্য অনেক দিন থেকেই কাউকে তাঁর সঙ্গে দেখাও করতে দেওয়া হচ্ছিল না। প্রায় ঘরবন্দি হয়ে পড়েন দোর্দণ্ডপ্রতাপ সন্তোষমোহন। তবে গত রবিবার শিলচর লোকসভা আসনের কংগ্রেসের টিকিটটি নিয়ে কন্যা সুস্মিতা যখন বিমানবন্দর থেকে শিলচরের কংগ্রেস অফিসে পৌঁছন, তখন অসুস্থ সন্তোষমোহনকেও সেখানে হাজির করানো হয়। অনেক দিন পর এত লোকের সান্নিধ্য পেয়ে সে দিনও দেববাড়ির প্রবীণতম সদস্যটি কেঁদে ভাসালেন।

সুস্মিতার দাবি, সন্তোষবাবুকে হারানোর ফল গত পাঁচ বছরে শিলচরবাসী টের পেয়েছেন। সংসদের ভেতরে কি বাইরে, কাছাড়ের উন্নয়ন নিয়ে কথা বলার মতো কেউ ছিলেন না। তাই ২০০৯-এর ভুল আর কেউ করবেন বলে মনে হয় না।

এক দিকে দেশজুড়ে কংগ্রেস-বিরোধী হাওয়া, অন্য দিকে পুরপ্রধান ও বিধায়ক পদে থেকে লোকসভা নির্বাচন লড়া তাঁর রাজনৈতিক জীবন বাজি রাখার সামিল। এ কথা স্বীকার করে নিয়েও সুস্মিতা আশাবাদী, “বাবার অসুস্থতায় যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা পূরণে ভোটদাতারা আমাকেই নির্বাচিত করবেন।”

uttam saha silchar kalimohan deb susmita deb lok sabha election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy