Advertisement
E-Paper

খাগড়াগড়ের মতোই হিন্দপিড়ির গলিতে ছিল জঙ্গি ডেরা

বর্ধমানের খাগড়াগড়, কলকাতার মেটিয়াবুরুজের বসতির সঙ্গে খুব একটা তফাত্‌ নেই রাঁচির হিন্দপিড়ি কলোনির। ছবিটা অনেকটা এক সিঠিও-তেও সন্ত্রাসের ছক কষতে ঘিঞ্জি সে সব জনবসতির অলিগলিই বেছে নিয়েছিল মুজাহিদিন জঙ্গিরা।

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৫২

বর্ধমানের খাগড়াগড়, কলকাতার মেটিয়াবুরুজের বসতির সঙ্গে খুব একটা তফাত্‌ নেই রাঁচির হিন্দপিড়ি কলোনির। ছবিটা অনেকটা এক সিঠিও-তেও।

সন্ত্রাসের ছক কষতে ঘিঞ্জি সে সব জনবসতির অলিগলিই বেছে নিয়েছিল মুজাহিদিন জঙ্গিরা।

২০১৩ সালে পটনায় নরেন্দ্র মোদীর সভাস্থল, বুদ্ধগয়ার মহাবিহারে একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটায় জেহাদিরা। এনআইএ তদন্তে জঙ্গিদের ডেরার হদিস পাওয়া যায় রাজধানী রাঁচির ব্যস্ত এলাকা হিন্দপিড়ি, শহরতলির সিঠিও বসতিতে। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত সেই সব এলাকার বাড়ি, হোটেল থেকে উদ্ধার করা হয় বিস্ফোরক, ডিটোনেটর, জিলাটিন স্টিক, জেহাদি বই, সিডি।

ঠিক যেমনটা মিলেছে খাগড়াগড়ে।

রাঁচি শহরের জনবহুল এলাকা হিন্দপিড়ি। সেখানকার লজে বসেই পটনায় মোদীর সভায় হামলার ‘ব্লু-প্রিন্ট’ তৈরি করেছিল ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন, সিমি জঙ্গিরা। খাস রাজধানীতে বসেই দিব্যি পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে জেহাদিরা নির্বিঘ্নে তাদের কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছিল। পটনায় বিস্ফোরণের পর ধরা পড়ে মূল অভিযুক্ত ইমতিয়াজ আনসারি। তাকে জেরা করার পরেই হিন্দপিড়ির ‘ইরম লজে’ হানা দেন গোয়েন্দারা। খোঁজ মেলে ইমতিয়াজের সিঠিও বসতির বাড়ির।

নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ওই লজে তল্লাশি চালায় এনআইএ। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে, গত প্রায় ৭-৮ মাস ধরে ঘর ভাড়া নিয়ে সেখানে থাকত মুজিবুল্লাহ নামে স্নাতক স্তরের এক কলেজ ছাত্র। শহরের ‘প্রাণকেন্দ্র’ ফিরায়ালাল চকের কাছেই হিন্দপিড়ি যাওয়ার রাস্তা। সেখানে হরেক রকম দোকানের জটলা। জমজমাট অলিগলির অনেক বাড়িতেই রয়েছে বাইরে থেকে আসা লোকেদের থাকার জায়গা।

সেখানেই রয়েছে ইরম লজ। সকাল-বিকেল নাম না জানা প্রচুর লোকজনের যাতায়াত। কে কখন আসছেন, যাচ্ছেন হিসেব রাখেন না কেউই। এই প্রসঙ্গে তদন্তকারী অফিসারদের বক্তব্য, সব দিক দেখে নিয়ে তার পরেই ওই লজে ঘর নিয়েছিল মুজাহিদিন জঙ্গি মুজিবুল্লাহ। পটনায় বিস্ফোরণের ছক কষা হয় সেই লজে বসেই। এনআইএ-র তল্লাশির সময় সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল মোদীর সভাস্থলের নকশাও। গোয়েন্দারা জেনেছিলেন, বিস্ফোরণের অন্যতম চক্রান্তকারী হায়দরও কয়েক বার গোপন বৈঠক করেছিল ঘিঞ্জি গলির ওই লজেই। কিন্তু কেউ নজর রাখেনি। তখন টের পায়নি পুলিশও।

২০১২ সালের এপ্রিল মাসে কলকাতার মেটিয়াবুরুজ এলাকায় লোহা গলির মসজিদ তালাওয়ে আইইডি তৈরির সময় বিস্ফোরণের পরই যেমন জঙ্গি আস্তানার খোঁজ পেয়েছিল পুলিশ।

কাঁচা রাস্তার দু’ধারে নিম্নবিত্ত মানুষের সারি সারি ঘর সিঠিওতে। তারই মধ্যে ইমতিয়াজের বাড়িটি দোতলা। তাতে আবার ৩০টিরও বেশি ঘর। তদন্ত করতে সেখানে গিয়ে প্রথমে কয়েকশো বাসিন্দার বিক্ষোভের মুখে পড়েথিল এনআইএ-র তদন্তকারীরা। পরে, ধৃত জঙ্গির পরিজনদের কাছ থেকে তদন্ত সংস্থার প্রতিনিধিরা জানতে পেরেছিলেন, নিয়মিত মসজিদে যেত স্বল্পভাষী ইমতিয়াজ। কিন্তু তার ঘরে ঢুকে গোয়েন্দারা অবাক হয়ে যান। সেই ঘরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল ওসামা বিন লাদেনের ছবিওয়ালা জেহাদি বই। বোমার টাইমার, ভিন্‌ দেশের সঙ্গে যোগাযোগের আধুনিক যন্ত্র, সন্ত্রাস ছড়ানোর নথি ছড়িয়ে ছিল চার পাশে।

militant prabal gangopadhyay ranchi khagragar hindpiri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy