গোবিন্দ পানসারে
অজ্ঞাতপরিচিত বাইক-আরোহীদের গুলিতে গুরুতর জখম হলেন মহারাষ্ট্রের সিপিআই নেতা গোবিন্দ পানসারে ও তাঁর স্ত্রী উমা। সোমবার সকালে কোলহাপুরে নিজের বাড়ির কাছেই আক্রান্ত হন ওই নেতা। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাতর্ভ্রমণ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন সস্ত্রীক গোবিন্দ। তখনই তাঁদের উপর হামলা চালায় বাইক-আরোহীরা। গোবিন্দের তিনটি গুলি লাগে। একটি গুলি লেগেছে উমার শরীরেও। আততায়ীরা এখনও অধরা।
এমন হামলা অবশ্য মহারাষ্ট্রে প্রথম নয়। ২০১৩ সালের অগস্টে প্রায় একই ভাবে অজ্ঞাতপরিচিত আততায়ীদের হাতে গুলিতে খুন হন সমাজকর্মী নরেন্দ্র দাভোলকর। কুসংস্কার-বিরোধী প্রচার চালানোর জেরেই তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে ধারণা ছিল একাংশের। এ দিন গোবিন্দের উপর হামলার খবর চাউর হয়ে যাওয়ার পর একই রকম তত্ত্ব শোনা গিয়েছে নানা মহলে। সড়ক উন্নয়নের অর্থ যে জনতার কাছ থেকে মোটেও সংগ্রহ উচিত নয়, তা নিয়ে লাগাতার প্রচার চালাচ্ছিলেন ৮২ বছরের এই সিপিআই নেতা। তার জেরেই আজকের হামলা কি না, সে নিয়ে সন্দেহ উঠছে সব মহলেই। সিপিআই(এম) পলিটব্যুরো সদস্য সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, “এ ধরনের হামলা যেন রোজনামচা হয়ে উঠছে।...টোল ট্যাক্সের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন উনি। যা যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়েছিল। ...নিশ্চয়ই এর ফলে কারও স্বার্থে আঘাত লাগত। তাঁরাই হামলা চালিয়েছেন।” এই আক্রমণের নিন্দায় গোটা মহারাষ্ট্র জুড়ে বন্ধ ডেকেছে বাম দলগুলি।
ঠিক কী হয়েছিল এ দিন?
পুলিশ জানিয়েছে, সকাল সাড়ে আট’টা নাগাদ আচমকাই কানফাটানো আওয়াজ শোনেন কোলহাপুরের সাগরমালা এলাকার বেশ কিছু বাসিন্দা। প্রথমে তাঁরা ভেবেছিলেন, বিশ্বকাপে গত কাল ভারতের জয়ের আনন্দ করতে হয়তো পটকা ফাটানো হচ্ছে। কিন্তু পরক্ষণেই নজরে আসে, রাস্তায় রক্তে ভাসছেন গোবিন্দ ও উমা। তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অপারেশন করা হয়েছে। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গোবিন্দের ঘাড়ে, বগলে, ও ডান হাঁটুর তলায় তিনটি গুলি লেগেছে। তবে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহকারী নালীগুলি অক্ষত। তাঁর হৃদ্স্পন্দন ও নাড়ির গতিও স্বাভাবিক। অবস্থা আশঙ্কাজনক হলেও স্থিতিশীল। উমার খুলির ডান দিকে চিড় ধরেছে। সেখানে রক্তক্ষরণও হয়েছে। তবে তাঁর প্রাণের আশঙ্কা নেই।
তবে শুধু বামেরা নয়, এ দিনের হামলার নিন্দা করেছে মহারাষ্ট্রের প্রায় সব দলই। মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীস বলেন, “অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা।” আততায়ীদের দ্রুত ধরতে কোলহাপুরের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এ জন্য পুলিশের দশটি দলও গঠন করা হয়েছে বলে জানান ফড়ণবীস। সমালোচনায় মুখর হয়েছে শিবসেনা। একই রকম কড়া প্রতিক্রিয়া এসেছে কংগ্রেসের তরফ থেকেও। এনসিপি নেতা শরদ যাদব বলেন, “আমি ওঁকে (গোবিন্দ) ৪০-৪৫ বছর ধরে চিনি। ...নৈতিকতার সঙ্গে কখনও আপোষ করেননি উনি।” প্রশাসন যেন সর্বশক্তি দিয়ে দুষ্কৃতীদের ধরার চেষ্টা করে, অনুরোধ করেন শরদ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy