অনেক বছর পর এ বারই মনস্থির করেছিলেন, লোকসভা নির্বাচনে লড়বেন। কিন্তু দল চাইছে, অরুণ জেটলি ভোটে না লড়ে বরং দলের কাজেই মনোনিবেশ করুন।
দলের নেতা মোক্তার আব্বাস নকভি আজ বলেন, “এটা ঠিক যে, জেটলি এ বারের নির্বাচনে লড়তে চাইছেন। কিন্তু আপাতত স্থির হয়েছে, দলের বেশ কিছু শীর্ষ নেতা ভোটে লড়বেন না।” এই নেতাদের মধ্যে জেটলি, বেঙ্কাইয়া নাইডু, নরেন্দ্র সিংহ তোমর, ধর্মেন্দ্র প্রধান এবং নকভি নিজেও রয়েছেন। যদিও জেটলি ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, নির্বাচনে লড়া বা না লড়া নিয়ে এখনও দলে কোনও আলোচনা হয়নি।
বিজেপির অনেক নেতা অবশ্য মনে করেন, জেটলি চাইলে এখনও নির্বাচনে লড়তে পারেন। ক’দিন আগেও এবিপি নিউজের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, “দল যা সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই মেনে নেব।” কিন্তু জেটলিকে যাঁরা কাছ থেকে জানেন তাঁরা মনে করছেন, রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা নিজেও এ নিয়ে ধন্দে। এর আগে কখনও তিনি লোকসভায় লড়েননি। বরং বদ্ধ ঘরে বসে কৌশল রচনা করতেই মূলত দেখা গিয়েছে তাঁকে। এবং সে কাজে নিজের পারদর্শিতাও প্রমাণ করেছেন। দলের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদীর প্রধান সেনাপতি কার্যত তিনিই। এখন সেই জেটলি যদি নিজেই ভোটে দাঁড়িয়ে যান, তা হলে নির্বাচনী কেন্দ্র যত নিরাপদই হোক, ভোটের আগে তাঁকে সেখানে গিয়ে ঘাম ঝরাতে হবে। সে ক্ষেত্রে ভোটের ঠিক মুখে মোদীর কৌশল রচনার কাজও ধাক্কা খাবে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।
যদিও নিতিন গডকড়ী যখন দলের সভাপতি ছিলেন, তখন ঠিক হয়েছিল যে ২০১৪-র লোকসভা ভোটে জেটলি লড়বেন। জেটলিও তিনটি আসনের কথা ভেবে রেখেছিলেন জয়পুর, অমৃতসর কিংবা দিল্লির একটি আসন। বিশেষত রাজস্থানের বিধানসভা নির্বাচনে বসুন্ধরা রাজের বিপুল জয়ের পরে জয়পুর এখন বেশ নিরাপদ আসন। গত লোকসভা নির্বাচনের সময়ে অসুস্থ থাকায় স্ত্রী ভোটে লড়তে বারণ করেছিলেন জেটলিকে। এ বার তিনিও ছাড়পত্র দিয়ে দিয়েছেন। তাই জেটলি একটু একটু করে ভোটে লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। নিজের শহুরে ভাবমূর্তি বদলানোর চেষ্টা করছিলেন। নিজের জন্মদিনে ফি-বছরের মধ্যাহ্নভোজ বাতিল করে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে কম্বল বিতরণ করতে ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এখন দলের তরফেই তাঁকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে লোকসভায় না লড়ার।
মোদীর কৌশল রচনা ব্যাহত হওয়া ছাড়াও আরও একটি কারণে জেটলিকে লোকসভায় চাইছেন না দলের অনেকে। প্রথমত, মোদী এ বার লোকসভা নির্বাচনে লড়বেন। সুষমা স্বরাজ ইতিমধ্যেই লোকসভার বিরোধী দলনেত্রী হয়েছেন। লালকৃষ্ণ আডবাণী, রাজনাথ সিংহরাও লোকসভার সাংসদ। তাঁরা সকলেই লড়বেন। এই অবস্থায় দলীয় নেতৃত্ব মনে করছেন, জেটলিও লোকসভায় জিতে এলে লোকসভায় পাল্লা ভারী হয়ে পড়বে। বরং রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা হিসেবে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন জেটলি। তিনি লোকসভায় এলে রাজ্যসভার টিম দুর্বল হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy