Advertisement
২০ মে ২০২৪

জেলেও ফেসবুকে আসক্তি কাটেনি জঙ্গিনেতার

এই ‘নেশা’র জন্যই ধরা পড়েছিলেন তিনি। এরপরেও সেই নেশা ছাড়তে পারেননি জিএনএলএ জঙ্গি গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান চ্যাম্পিয়ন সাংমা। কারাগারে মধ্যে বসেও কারাকর্মীদের ঘুষ দিয়ে জেলের ভিতরেই মোবাইল নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন ফেসবুক, হোয়াটস্অ্যাপ।

রাজীবাক্ষ রক্ষিত
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৪ ০৩:২৫
Share: Save:

এই ‘নেশা’র জন্যই ধরা পড়েছিলেন তিনি। এরপরেও সেই নেশা ছাড়তে পারেননি জিএনএলএ জঙ্গি গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান চ্যাম্পিয়ন সাংমা। কারাগারে মধ্যে বসেও কারাকর্মীদের ঘুষ দিয়ে জেলের ভিতরেই মোবাইল নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন ফেসবুক, হোয়াটস্অ্যাপ।

রাজ্যে ত্রাস সৃষ্টিকারী জঙ্গি বাহিনীর প্রধান তিনি। এক সময় পুলিশের ডিএসপি ছিলেন। শেষ পর্যন্ত পুলিশের চাকরি থেকে পালিয়ে গিয়েই চ্যাম্পিয়ন সাংমা গড়ে তোলেন গারো জঙ্গি বাহিনী। ২০১০ সালে তৈরি তাঁর এই জঙ্গি বাহিনীতে এখন প্রশিক্ষিত জঙ্গির সংখ্যা প্রায় ২০০। অস্ত্র ব্যবহারে যেমন দড় ছিলেন চ্যাম্পিয়ন, সংগঠন গড়ায়ও ছিল দক্ষতা। আর তাঁর নেশা ছিল ইন্টারনেট। শেষ পর্যন্ত তাঁর কাল হয় ওই ফেসবুকই।

বাড়ি ও বান্ধব ছেড়ে বাংলাদেশে ঘাঁটি গেড়ে থাকার সময় এই ফেসবুকই ছিল চ্যাম্পিয়নের নিত্যসঙ্গী। এবং সেই সূত্র ধরেই র্যাব ও ভারতীয় গোয়েন্দারা চ্যাম্পিয়নকে নজরবন্দি করে ফেলে। পরে ধরা পড়েন ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে। ধরা পড়ার পর একাধিকবার শান্তি আলোচনার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার জানিয়ে দেয়, সেনাধ্যক্ষ সোহন ডি শিরার নেতৃত্বে তাঁর জিএনএসএ জঙ্গি গোষ্ঠী যে সন্ত্রাস চালাচ্ছে তা বন্ধ না হলে কোনও আলোচনাই সম্ভব নয়।

অগত্যা, কারাকর্মীদের ‘হাত’ করার কাজ শুরু। এক্ষেত্রে প্রয়োজন ছিল একটি মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট সংযোগ। দু’টি সিম এবং মোবাইল যোগাড় করার পরেই জানুয়ারি মাস থেকে ফের চ্যাম্পিয়নের ফেসবুক-যাপন শুরু। পুলিশ জানতে পেরেছে, রংবিল সাংমা-সহ বিভিন্ন নামে চ্যাম্পিয়ন পাঁচটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট চালান। সেখান থেকে উত্তেজক বার্তা প্রচার এবং বন্ধুদের সঙ্গে চ্যাট করার পাশাপাশি, দু’টি নম্বর থেকে হোয়াট্সঅ্যাপও চালাচ্ছিলেন তিনি। এমন কী, আজ সকাল ৯টা ৯ মিনিট অবধি হোয়াট্সঅ্যাপে বার্তা চালাচালি করেছেন তিনি।

দুর্গম গারো পাহাড়-জঙ্গলে না হয় জিএনএলএ বাহিনীকে কব্জা করতে পারছে না পুলিশ। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, জেল হেফাজতে থাকা চ্যাম্পিয়নের বজ্র আঁটুনি কী ভাবে এমন ফস্কা গেরো হয়ে গেল? পুলিশ কর্তারা এ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ। ডিজি (কারা) প্রেম সিংহ জানান, “বিষয়টি জানি। এ নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।” তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রোশন ওয়ারজিরি ফোনে বলেন, “আজ রাতের মধ্যেই ডিজি (কারা)-কে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছি। শিলং-এর জেলাশাসককেও বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

guwahati rajibaksha rakshit
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE