Advertisement
E-Paper

জম্মুতে সেনা-জঙ্গি সংঘর্ষ, নিহত ১০

সীমান্তে লাগাতার অশান্তি। তার উপর বন্যার প্রকোপ। এত বাধা সত্ত্বেও বিধানসভা ভোটের প্রথম দফায় ব্যাপক সাড়া দিয়েছিলেন জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দাদের একাংশ। কিন্তু তার কয়েক দিনের মধ্যেই অশান্ত হল জম্মুর আর্নিয়া এলাকা। বৃহস্পতিবার সকালে সেখানে সেনা-বিএসএফের যৌথ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে চার জঙ্গি-সহ ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। হতদের মধ্যে রয়েছেন তিন সেনা জওয়ান।

সাবির ইবন ইউসুফ

শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:০৫
নিহত এক সাধারণ মানুষ। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।

নিহত এক সাধারণ মানুষ। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।

সীমান্তে লাগাতার অশান্তি। তার উপর বন্যার প্রকোপ। এত বাধা সত্ত্বেও বিধানসভা ভোটের প্রথম দফায় ব্যাপক সাড়া দিয়েছিলেন জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দাদের একাংশ। কিন্তু তার কয়েক দিনের মধ্যেই অশান্ত হল জম্মুর আর্নিয়া এলাকা। বৃহস্পতিবার সকালে সেখানে সেনা-বিএসএফের যৌথ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে চার জঙ্গি-সহ ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। হতদের মধ্যে রয়েছেন তিন সেনা জওয়ান। সংঘর্ষ এখনও চলছে। ২ ডিসেম্বর জম্মুতে দ্বিতীয় দফার ভোট। তার আগে শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আসার কথা। এই সময়ই জঙ্গি-হামলা হওয়ায় পুলিশের একাংশের ধারণা, নির্বাচন বানচাল করতেই এই ষড়যন্ত্র। এবং তাতে সম্ভবত পাক সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সাহায্য পেয়েছে জঙ্গিরা।

জম্মু ও কাশ্মীরের ডিরেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (ডিজিপি) কে রাজেন্দ্র কুমার বলেন, “এ দিন সকালে ওরা (পাকিস্তান রেঞ্জার্স) হঠাৎ বিএসএফের ছাউনি লক্ষ্য করে গুলিবৃষ্টি শুরু করে। সম্ভবত তার ফাঁকেই আর্নিয়ায় ঢুকে পড়ে জঙ্গিরা।” বিএসএফ বিষয়টি অনুপ্রবেশ বলতে নারাজ। জম্মু ফ্রন্টিয়ারে বিএসএফের আইজি রাকেশ শর্মা বলেন, “সীমান্তের প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় নজরদারি চালানো হয়েছে। কোথাওই অনুপ্রবেশের চিহ্ন নেই। সীমান্তের কাঁটাতারও অক্ষত।”

শুক্রবার আর্নিয়া থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে উধমপুর জেলা ও পুঞ্চে মিছিল করার কথা মোদীর। তার আগে এই ঘটনায় বিষয়টি অন্য মাত্রা পেয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাও বলেন, “এটা নিছক সমাপতন হতে পারে না।”

কাশ্মীরে লাগাতার হামলায় তিক্ত হয়েছে ভারত-পাক কূটনৈতিক সম্পর্কও। সার্ক শীর্ষবৈঠকের প্রথম দিনে সৌজন্য বিনিময়টুকুও করেননি নরেন্দ্র মোদী এবং পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। শেষ দিনে দুই রাষ্ট্রনায়কের মধ্যে করমর্দন হলেও তাতে যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বরফ গলবে এমনটা মনে করছেন না কেউই। তার উপর আজকের হামলার পিছনেও পাকিস্তান রেঞ্জার্সের মদত রয়েছে বলে জানিয়েছে কাশ্মীর পুলিশ। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে মনে করছেন কূটনীতিবিদরা।

ঠিক কী হয়েছে এ দিন? প্রাথমিক ভাবে পুলিশের দাবি, এ দিন সকালে চার-পাঁচ জন জঙ্গির একটি দল সীমান্ত পেরিয়ে আর্নিয়ায় ঢুকে গুলিবর্ষণ শুরু করে। গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে পাল্টা জবাব দেয় সেনা, বিএসএফ এবং পুলিশবাহিনী। শুরু হয় তল্লাশিও। এর পর পিন্ড খোটে গ্রামের দু’টি পরিত্যক্ত সেনা বাঙ্কারে ঢুকে পড়ে জঙ্গিরা। সেখান থেকেই তীব্র আক্রমণ শুরু করে তারা। জবাবে হামলা জোরদার করে সেনা-বিএসএফের যৌথ বাহিনীও। তখনই মারা যায় চার জঙ্গি। মৃত্যু হয় তিন সেনা জওয়ানেরও। তবে এক জঙ্গি এখনও বাঙ্কারেই রয়েছে। তাকে মারতে বাঙ্কারটি উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সেনা।

একটি গাড়িও পেয়েছে সেনাবাহিনী। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হয় এই গাড়িতে চেপেই হামলা চালাতে এসেছিল জঙ্গিরা, নয় তো এটিকে কব্জা করেই নাশকতা চালানোর ছক ছিল তাদের।

আর্নিয়ার পাশাপাশি এ দিন সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ জম্মুর রাজৌরি জেলার লাম ব্যাটেলিয়ন এলাকাতেও সন্দেহজনক গতিবিধি নজরে এসেছে সেনার। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ওখানেও অনুপ্রবেশের চেষ্টা চলছিল। তল্লাশি চালানোর পর আদুল কায়ুমি ওরফে পাঞ্জাবি নামে এক সন্দেহভাজন জঙ্গিকে আটক করেছে সেনা।

terrorist attack army jammu death shabir ibn yusuf
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy