করের ভয়ে শহুরে পৌর নিগমের অন্তর্ভুক্ত হতে চান না তাঁরা। তাই রাউরকেলায় রেল অবরোধ শুরু করেছিলেন মঙ্গলবার বেলা ১১টায়। কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে বুধবার বিকেলে উপজাতিরা যখন অবরোধ তুললেন, তত ক্ষণে বিপর্যস্ত হয়ে গিয়েছে ট্রেন চলাচল। একটানা ২৯ ঘণ্টার অবরোধে ইস্পাত এক্সপ্রেস-সহ দূরপাল্লার বেশ কিছু ট্রেন বাতিল করতে হয়েছে। ঘুরপথে চলতে বাধ্য হয়েছে বহু ট্রেন।
পৌর নিগম গঠনের শর্ত মানতেই ওড়িশার সুন্দরগড় জেলার কয়েকটি উপজাতি এলাকাকেও রাউরকেলা কর্পোরেশনের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছিল। তার প্রতিবাদেই মঙ্গলবার ট্রেন আটকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। দীর্ঘ ক্ষণ সেই অবরোধ চলায় হাওড়া-মুম্বই ও রাঁচি-মুম্বই ট্রেন চলাচল থমকে যায়। অবরোধ এত দীর্ঘ হল কেন?
সরকারি সূত্রের খবর, সুন্দরগড় জেলা প্রশাসনের কর্তারা মঙ্গলবারেও বিষয়টি নিয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনায় বসেন। কিন্তু ফল হয়নি। হাজির হয় পুলিশও। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা অনুন্নত এলাকার বাসিন্দা বলে সরকার বল প্রয়োগ করতে চায়নি। বুধবার সকালে ফের শুরু হয় আলোচনা। ওই সব এলাকাকে নিগমের আওতায় রাখা হবে কি না, তা নিয়ে ফের মন্ত্রিসভায় আলোচনার প্রস্তাব দেওয়ার পরে অবরোধ ওঠে।
ওড়িশা প্রশাসন সূত্রের খবর, রাউরকেলা ইস্পাত কারখানা-সহ গোটা শহরটিকে কর্পোরেশন বা পৌর নিগমের চেহারা দেওয়ার জন্য আরও ২৬ হাজার জনসংখ্যার প্রয়োজন ছিল। তাই গ্রামীণ কিছু এলাকাকে যুক্ত করা হয়। কিন্তু উপজাতিাদের বক্তব্য, গ্রামীণ এলাকা কর্পোরেশনে যুক্ত হলে তাঁদের নানা সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার বিনিময়ে কর বসাবে সরকার। উপরন্তু তাঁরা পঞ্চায়েতের দেওয়া সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন। এই নিয়েই শুরু হয় বিক্ষোভ। তাঁরা রেল অবরোধ করায় মুশকিলে পড়েন ট্রেনযাত্রীরা।
ওই অবরোধের দরুন মঙ্গলবারেও হাওড়া থেকে মুম্বইমুখী কয়েকটি ট্রেন অন্য রুট দিয়ে চালাতে হয়েছে। আবার ফিরতি পথে হাওড়ায় ট্রেন না-আসায় বুধবারেও কিছু ট্রেন বাতিল করতে হয়। তার মধ্যে ছিল ইস্পাত, গীতাঞ্জলি, মুম্বই দুরন্ত এক্সপ্রেসও। একই কারণে জ্ঞানেশ্বরী ও আজাদ হিন্দ এক্সপ্রেস বুধবারের বদলে আজ, বৃহস্পতিবার সকালে ছাড়ার ব্যবস্থা করতে হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের কর্তারা জানান, যে-সব ট্রেন বাতিল হয়েছে, সেগুলোর যাত্রীদের ভাড়ার পুরো টাকাই ফেরত দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy