Advertisement
E-Paper

টিম রাহুলে দুই বাঙালি কন্যা শর্মিষ্ঠা-সুস্মিতা

মুখচোরা হওয়ার মাসুল লোকসভা ভোটেই পেয়েছে কংগ্রেস! দলের ঘরোয়া বৈঠকে খোদ সনিয়া গাঁধী এ ব্যাপারে অন্তত দশ বার আক্ষেপ জানিয়েছেন। আজ এক ধাক্কায় কংগ্রেসের মুখপাত্রের সংখ্যা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিলেন সনিয়া-রাহুল! লক্ষ্য, দশ মুখে মোদী সরকারের সমালোচনা করা। নতুন মুখপাত্রদের তালিকায় যেমন পোড়খাওয়া প্রবীণরা রইলেন, তেমনই সর্বভারতীয় স্তরে কংগ্রেসের মুখ হিসেবে তুলে আনা হল এক ঝাঁক তরুণকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৫ ০৩:৪৭

মুখচোরা হওয়ার মাসুল লোকসভা ভোটেই পেয়েছে কংগ্রেস! দলের ঘরোয়া বৈঠকে খোদ সনিয়া গাঁধী এ ব্যাপারে অন্তত দশ বার আক্ষেপ জানিয়েছেন। আজ এক ধাক্কায় কংগ্রেসের মুখপাত্রের সংখ্যা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিলেন সনিয়া-রাহুল! লক্ষ্য, দশ মুখে মোদী সরকারের সমালোচনা করা।

নতুন মুখপাত্রদের তালিকায় যেমন পোড়খাওয়া প্রবীণরা রইলেন, তেমনই সর্বভারতীয় স্তরে কংগ্রেসের মুখ হিসেবে তুলে আনা হল এক ঝাঁক তরুণকে। যাঁরা শুধু আগ্রাসী বক্তাই নন, ইংরেজির পাশাপাশি হিন্দি ও আঞ্চলিক ভাষাতেও যথেষ্ট ঝরঝরে। এবং কংগ্রেসের মতাদর্শের কথা মাথায় রেখে যাঁরা যুক্তির সঙ্গে বিষয় উপস্থাপন করতে পারেন।

পশ্চিমবঙ্গের কোনও প্রবীণ বা নবীন নেতা ওই নতুন তালিকায় স্থান না পেলেও জায়গা করে নিয়েছেন দুই বাঙালি মেয়ে। সর্বভারতীয় কংগ্রেসের মুখপাত্র পদে তুলে আনা হল প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সন্তোষমোহন দেবের কন্যা তথা শিলচরের সাংসদ সুস্মিতা দেবকে। পাশাপাশি, বৈদ্যুতিন মাধ্যমে কংগ্রেসের পক্ষ নিয়ে সওয়াল করার দায়িত্ব পেলেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মেয়ে শর্মিষ্ঠা। সুস্মিতা পেশায় আইনজীবী। তর্কে পটিয়সী। কংগ্রেসে তাঁর রাজনৈতিক উচ্চতা বাড়ার ইঙ্গিত হালফিলে সংসদের অন্দরে ও কংগ্রেসের সব বিক্ষোভ-মঞ্চ থেকে পাওয়া যাচ্ছিল। আবার শর্মিষ্ঠা দিল্লির ভোটে হেরে গেলেও দিল্লির প্রদেশ কংগ্রেসের বিভিন্ন কর্মসূচি ও সাংবাদিক বৈঠকে হালফিলে খুবই সক্রিয় থাকছেন। এ ছাড়া, সর্বভারতীয় কংগ্রেসের মুখপাত্র হয়েছেন দীপেন্দ্র হুডা, তামিল অভিনেত্রী খুশবু, অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের পুত্র গৌরবের মতো তরুণরা। গুলাম নবি আজাদ, আনন্দ শর্মা, পি চিদম্বরম ও সলমন খুরশিদ আগেই কংগ্রেসের সিনিয়র মুখপাত্রের তালিকায় ছিলেন। সেই তালিকায় শাকিল আহমেদ, সি পি জোশী, সত্যব্রত চতুর্বেদীর মতো প্রবীণ নেতাদেরও আজ জোড়া হয়েছে। যার অর্থ, নবীন-প্রবীণে ভারসাম্য বজায় রাখছে হাইকম্যান্ড।

সনিয়া গাঁধীর তরফে আজ বিবৃতি দিয়ে এই তালিকা প্রকাশ করা হলেও দলের অন্দরে সন্দেহ নেই যে, এর নেপথ্য কারিগর রাহুল গাঁধীও। তিনি ছুটিতে থাকলেও তাঁর পছন্দের তরুণ নেতাদের স্থান দেওয়া হয়েছে ওই তালিকায়। কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতার কথায়, এই ঘটনা থেকে আরও একটি বিষয় স্পষ্ট। তা হল, রাহুল ছুটিতে থাকলেও মা-ছেলে আদতে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়েই এগোচ্ছেন। লোকসভা ভোট ও সম্প্রতি কিছু বিধানসভা ভোটের পর অনেকে এই সমালোচনা করছিলেন যে, গাঁধী পরিবারের মাহাত্ম্য শেষ হয়ে গিয়েছে। পরিবারের কর্তৃত্বের রাশও আলগা হচ্ছে। সনিয়া কখনও মনমোহন সিংহের বাড়ি পর্যন্ত মিছিল করেছেন, কখনও বিরোধীদের নেতৃত্ব দিয়ে জমি বিলের বিরুদ্ধে পদযাত্রা করেছেন রাষ্ট্রপতি ভবন পর্যন্ত। আর মা যখন এ ভাবে জমি তৈরি করছেন, ছেলে তখন মাথা ঠান্ডা করে টিম গড়ছেন।

তা বলে মুখপাত্রের সংখ্যা এত বাড়ানো হল কেন? জবাবে দশ জনপথ ঘনিষ্ঠ কংগ্রেসের এক নেতা আজ বলেন, লোকসভা ভোটের আগে থেকে বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদী সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয়। কংগ্রেস এত দিন চুপচাপ বসে দেখেছে। কিন্তু এখন তারা ঠেকে শিখেছে। দলীয় অবস্থান তুলে ধরা থেকে শুরু করে সরকার বিরোধী আক্রমণে ‘স্মার্ট’ ও ‘ক্ষিপ্র’ হতে হবে।

ওয়ার্কিং কমিটির এক নেতা বলেন, বৈদ্যুতিন মাধ্যমের সংখ্যা বেড়েছে। তাই যথাসম্ভব সেই মাধ্যমকে ব্যবহার করে মানুষের কাছে পৌঁছতে চাইছেন সনিয়া-রাহুল। মজার ব্যাপার, দলের মুখপাত্র বাছার সময় আগে দেখা হতো, কোন নেতা কত ভাল ইংরেজিতে কথা বলতে পারেন। কিন্তু আজকের তালিকায় হিন্দি ও আঞ্চলিক ভাষাকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

sharmistha mukhopadhyay sushmita deb rahul gandhi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy