ফের তৃণমূল কংগ্রেসকে দূরে ঠেলে দিল ঝাড়খণ্ড। লোকসভার পর বিধানসভার ভোট-যুদ্ধেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়ালেন না রাজ্যের মানুষ।
ঝাড়খণ্ডে ১০টি আসনে লড়তে নামা তৃণমূল প্রার্থীদের মধ্যে ৯ জনেরই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। মাণ্ডরে কোনও মতে তা বেঁচে যায়। শুধু তাই নয়, কয়েকটি বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের পক্ষে ভোট এতটাই কম পড়েছে যে সহজে মেলেনি তার শতকরা হিসেবও!
ঝাড়খণ্ডের দুই নির্দল বিধায়ক চামরা লিণ্ডা, বন্ধু তিরকিকে দলে টেনে কয়েক মাস আগে রাজ্য বিধানসভার অন্দরমহলে ঢুকেছিল তৃণমূল। কিন্তু ভোটের আগে দলের ‘তরী’ ডুবে যাওয়ার আঁচ পেয়ে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার হাত ধরেন চামরা। দলের রাজ্য সভাপতি হয়ে তৃণমূল শিবিরেই থেকে যান বন্ধু। আজ ফলপ্রকাশের পর দেখা যায়, বিজেপি প্রার্থীকে প্রায় ১১ হাজার ভোটে হারিয়ে নিজের পুরনো আসন বিষুণপুর দখলে রেখেছেন চামরা। ৪৬ হাজার ৫১৫টি ভোট পেয়ে বন্ধু শুধু বাঁচাতে পেরেছেন জমানতের টাকাটুকু! রাজ্যের তৃণমূল নেতাদের একাংশ বলছেন, ওই ভোটও বন্ধু পেয়েছেন নির্দল প্রার্থীর পরিচয়ে। পরাজয়ের পর বন্ধুর কথাতেই তা স্পষ্ট। তিনি বলেছেন, “তৃণমূলের প্রতীকটাই ভোটাররা চিনতে পারেননি। ঘাসফুলের বদলে ছাপ দিয়েছেন পদ্মফুলে।”
সন্ধেয় কমিশনের দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, তৃণমূলের পক্ষে কাঁকে কেন্দ্রে ১ হাজার ৯৬৮টি, খিজরিতে ৫ হাজার ৫১৫, জামতাড়ায় ১ হাজার ১৬৪, তোরপাতে ২ হাজার ৩২৪, নিরসায় ১ হাজার ৭৩৬ ভোট পড়েছে। বিরোধী শিবিরের বক্তব্য, ঝাড়খণ্ডের নির্বাচনে কোনও বারই তৃণমূল প্রভাব ফেলতে পারেনি। আগের লোকসভা ভোটেও তার প্রমাণ মিলেছে। এখনও এ রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে সাধারণ মানুষ তেমন ভাবে চেনেনই না। যাঁরা ওই দলের খোঁজখবর রাখেন, সারদার মতো আর্থিক কেলেঙ্কারির পর তৃণমূলের উপর তাঁদেরও ভরসা হারিয়েছে। আসন্ন ‘বিপদ’ টের পেয়ে চামরা তড়িঘড়ি দল বদলানোর পর তাই সকলের নজর ছিল বন্ধুর মাণ্ডর আসনের দিকে। তৃণমূলের হয়ে লড়তে নেমে নিজের সেই পুরনো দুর্গও হারালেন বন্ধু।
তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একাংশ বলছেন, অন্য দলের নেতারা যা করেছেন, তার সিকিভাগও করেননি মমতা-মুকুলরা।
বিধানসভা ভোটের আগে বাবুলাল মরাণ্ডির ‘ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চা’র সঙ্গে জোট গড়েছিল তৃণমূল। দু’টি আসনেই হেরেছেন বাবুলাল। কিন্তু তাঁর দল জিতেছে ৮টি আসনে।
মমতার তৃণমূল না পারলেও, ঝাড়খণ্ডে দু’জন বাঙালি বিজয়-পতাকা উড়িয়েছেন। তাঁদের এক জন নিরসার ‘মার্কসিস্ট কো-অর্ডিনেশন কমিটি’র অরূপ চট্টোপাধ্যায়। অন্য জন ধনওয়ারে সিপিআই(এমএল)-এর রাজকুমার যাদব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy