Advertisement
E-Paper

থাপা পরিবারের ১১৮ ভোটার

বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের সর্ব বৃহৎ উৎসবে, সব দলেরই লক্ষ্য দেশের বৃহত্তম দুই পরিবার। একটির ঠিকানা অসমের শোণিতপুর। অন্যটির সাকিন মিজোরাম। এক পরিবার আজ তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করলেন। অন্য পরিবারটি ৯ এপ্রিলের মিজোরাম লোকসভা ভোটের অপেক্ষায়। আজ দেশের প্রথম দফা তথা অসমেরও প্রথম পর্বের ভোট গ্রহণ শেষ হল। ভোট হল উজানি অসমের পাঁচটি কেন্দ্রে।

রাজীবাক্ষ রক্ষিত

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৪৬

বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের সর্ব বৃহৎ উৎসবে, সব দলেরই লক্ষ্য দেশের বৃহত্তম দুই পরিবার। একটির ঠিকানা অসমের শোণিতপুর। অন্যটির সাকিন মিজোরাম। এক পরিবার আজ তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করলেন। অন্য পরিবারটি ৯ এপ্রিলের মিজোরাম লোকসভা ভোটের অপেক্ষায়।

আজ দেশের প্রথম দফা তথা অসমেরও প্রথম পর্বের ভোট গ্রহণ শেষ হল। ভোট হল উজানি অসমের পাঁচটি কেন্দ্রে। তার মধ্যেই পড়ে তেজপুর লোকসভা আসনটি। আর তেজপুরের বিশ্বনাথ চারিয়ালি এলাকায় থাপা পরিবার একাই একশো! রাঙাপাড়ার ফুলগুড়ি নেপালিপাম গ্রামে, থাপা পরিবারে ভোটারের সংখ্যা ১১৮! গ্রামের জনসংখ্যা যেখানে ১২৬৭, সেখানে একটি পরিবারের ভোটার সংখ্যা ১১৮ হলে প্রার্থীরা তো সেই পরিবারের কৃপাদৃষ্টি চাইবেনই। ওই গ্রামে চা-জনজাতি, বাঙালি, বড়ো, সংখ্যালঘু পরিবারের বাস থাকলেও বেশিরভাগ গ্রামবাসীই নেপালি। আর তাদের মধ্যমণি এই থাপা পরিবার। কথিত আছে, ১৮৮৮ সালের মহামারিতে পরিবারের বাকিদের হারিয়ে এঁদের এক পূর্বপুরুষ তাঁর একমাত্র নাতিকে নিয়ে বিশ্বনাথের এই জঙ্গলে আশ্রয় নেন।

পরের দু’দশকের মধ্যে নাতি রণবাহাদুর থাপা সেখানে একটি গ্রাম পত্তন করেন। ১৯০৬ সালে তিনিই হন গ্রাম প্রধান। পাঁচটি বিয়ে করে তিনি নিজে যেমন পরিবার বাড়াতে থাকেন, তেমনই আশপাশে ছড়িয়ে থাকা সব আত্মীয়কে এনে এই গ্রামেই বসান। ৫ স্ত্রীর ১২টি সন্তান হয়। এদের মধ্যে ৭ মেয়ের বিয়ে হলেও, জামাইদের জমি-জায়গা দিয়ে গ্রামেই রেখে দেন রণবাহাদুর। এরপর থেকে পরিবারে যাঁদেরই কন্যা সন্তান হয়েছে, তাঁরাও বিয়ের পরে জামাইদের গ্রামেই রাখার চেষ্টা করেছেন। বহরে বাড়তে থেকেছে পরিবার। ১৯৯৭ সালে ১১৫ বছর বয়সে রণবাহাদুরের মৃত্যু হয়। বর্তমানে তাঁর উত্তরপুরুষদের মধ্যে ছেলের দিকে ৬০ ও মেয়েদের দিকে ৫২ জন ভোটার রয়েছে। তুতো ভাই রুদ্রবাহাদুরের পরিবারে ভোটার ৬ জন। তাই নির্বাচন এলেই প্রার্থীরা একটিবার থাপাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেনই। প্রার্থনা করেন ১১৮টি ভোট। নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, আজ ভোট দিয়েছেন থাপা পরিবারের ভোটাররা।

অন্য দিকে, মধ্য মিজোরামের বাকটাওং গ্রামে জিওনা চানার পরিবারে ২০৯ জন সদস্যের মধ্যে এ বার মোট ভোটারের সংখ্যা ১০০। ৩৯ জন স্ত্রী, ৪১ জন ছেলে, ৪৬ জন মেয়ে, ২২ জন নাতি, ২৬ জন নাতনি ইত্যাদি নিয়ে জিওনার মেগা-সংসার। কেবল পরিবারে নয়, নিজের হাতে গড়া গ্রাম ও চানা সম্প্রদায়ের মধ্যেও তিনিই সর্বেসর্বা। তাই ভোটের বাজারে তিনি এক্কেবারে ভিভিআইপি। লোকসভায় মিজোরামের একটিই আসন। সেখানে আগামী ৯ এপ্রিল ভোট গ্রহণ। বর্তমানে আসনটি কংগ্রেসের দখলেই রয়েছে। গত বছর বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার পর এ বারের লোকসভাতেও বিরোধীপক্ষ তেমন আশা দেখছে না। আর মুখ্যমন্ত্রী লাল থানহাওলার সঙ্গে চাওনা পরিবারের সখ্য সুবিদিত। জিওনার কথা কেবল পরিবার নয়, গোটা গ্রাম ও সম্প্রদায়ের কাছেই আদেশ। তাই চাওনা পরিবারের শ’খানেক ভোট ও সম্প্রদায়ের হাজার দুয়েক ভোট নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মোটামুটি নিশ্চিত। চাওনা সম্প্রদায়ের সবচেয়ে প্রবীণ ভোটদাতা হলেন ১০৩ বছরের লিয়ানহেলি।

rajibakkha rakshit thapa
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy