পাঁচ বছরে অন্তত পাঁচ জন মন্ত্রী বদল হয়েছেন। কিন্তু রেলে পরিষেবার মানের কোনও বদল হল না!
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-যশোবন্তপুর প্রিমিয়াম এক্সপ্রেসে পচা খাবার পরিবেশন নিয়ে তুলকালাম হয়েছিল। তার পরে ফের খাবার নিয়ে তীব্র ক্ষোভ উগরে দিলেন দিল্লি-শিয়ালদহ স্পেশ্যাল (ডুপ্লিকেট রাজধানী এক্সপ্রেস) ট্রেনের যাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ দূরপাল্লার নামীদামি ট্রেন চলাচলে অনিয়ম নিয়েও।
মির্জাপুর ও মোগলসরাইয়ে নেমে বিক্ষোভ দেখান যাত্রীরা। বাংলার কয়েক জন যাত্রী ট্রেন থেকেই রাজ্য সরকারের কর্তা ও নেতা-নেত্রীদের কাছে বারবার ফোন করে দুর্দশার কথা জানান। কোনও লাভ হয়নি। যাত্রীদের কথায়, “রাজ্য সরকার নিজেরাও কিছু করতে পারল না। যোগাযোগ করতে পারল না দিল্লিতেও।” জাসমিন হক নামে এক যাত্রী বলেন, “বারবার ফোন করেও কোনও কাজ হয়নি।”
ঠিক কী ঘটেছিল ট্রেনে?
৫ জুন সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটে নয়াদিল্লি স্টেশন থেকে বিকল্প রাজধানী এক্সপ্রেসের ছাড়ার কথা ছিল। প্রথমেই বিপত্তি। ট্রেন ছাড়ে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা দেরিতে। যাত্রীদের অভিযোগ, এই দেরি নিয়ে স্টেশনে কোনও ঘোষণাই করেনি রেল। যাত্রীরা বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করে জানতে পারেন, ৪ জুন শিয়ালদহ থেকে ট্রেনটি দিল্লি রওনা হয়। কিন্তু দিল্লি পৌঁছতে অনেক দেরি হয়েছে। তাই তা ছাড়তেও দেরি।
আর দেরির জেরে বদলে যায় খাবারের সময়সূচি এবং খাবারের তালিকাও। যাত্রীদের অভিযোগ, বুধবার রাত এবং বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁরা কার্যত কোনও খাবার পাননি।
খাবার নিয়ে গণ্ডগোল কেন?
ট্রেনটির সময়সূচি অনুযায়ী আইআরসিটিসি রাজধানী এক্সপ্রেসের মানের খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করে রেখেছিল। কিন্তু এই গরমে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা দেরি হওয়ায় সেই খাবার নষ্ট হয়ে যায় বলে অভিযোগ। এই নিয়েই গণ্ডগোল। ট্রেনটির শিয়ালদহে পৌঁছনোর কথা ছিল এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ। তাই দুপুরের খাবার দেওয়ার কথা নয়। কিন্তু দেরিতে ট্রেন ছাড়ায় এ দিনের দুপুরের খাবারের ব্যবস্থাও করতে হয় ওই সংস্থাকে। আচমকা দেড় হাজার যাত্রীর খাবার আয়োজন করতে গিয়ে বিপত্তি বাধে। দফায় দফায় দেরিতে চলতে থাকায় ট্রেনটি রাতে না-পৌঁছে আজ, শুক্রবার সকালে শিয়ালদহে ঢুকবে বলে রেলকর্তাদের অনুমান। ফলে রাতের খাবারেরও ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। এবং তাতে ফের বিপত্তি।
বিকল্প রাজধানী এক্সপ্রেসের মতো ট্রেন চলাচলেও এত দেরি কেন?
এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি নন রেলকর্তারা। ট্রেনটি যাদের, সেই উত্তর রেলের সদর দিল্লিতে। রেল বোর্ডের সদর সেখানেই। দুই দফতরের কর্তারাও মুখে কুলুপ এঁটেছেন। শুক্রবার দিল্লি থেকে রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান-সহ একাধিক কর্তা কলকাতায় এসে মেট্রো, দক্ষিণ-পূর্ব, পূর্ব রেলের কর্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে বৈঠক করবেন। সাত দিন আগেই কলকাতা ঘুরে গিয়েছেন রেল বোর্ডের এক সদস্য (ইঞ্জিনিয়ারিং)। তিনিও অনেক বৈঠক করেছেন। কিন্তু তাতেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
আজ, শুক্রবার রেল বোর্ডের প্রধানের বৈঠকের পরে পরিষেবার মান উন্নত হয় কি না, সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy