ভূস্বর্গে বেড়াতে এসে যত্রতত্র ধূমপান করলে এ বার বিপদে পড়তে পারেন পর্যটকরা। কারণ জম্মু-কাশ্মীরকে ‘স্মোকিং ফ্রি’ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পর্যটন দফতর। আর তাই হাউসবোট থেকে শুরু করে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে ধূমপানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। আইন না মানলে দিতে হচ্ছে জরিমানা। তবে শুধু সিগারেটই নয়, গুটখা বা তামাকজাত যে কোনও দ্রব্যের উপরেই বসেছে এই নিষেধাজ্ঞা।
কাশ্মীরে হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলির যে সংগঠন রয়েছে, তার সভাপতি সৌকত চৌধুরি আনন্দবাজারকে জানাচ্ছেন, এখানকার হোটেল ব্যবসায়ীরা বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন। তাঁর কথায়, “এই স্বপ্নকে সত্যি করার জন্য সংগঠনের প্রত্যেকেই খুব উৎসাহী। হোটেল-রেস্তোরাঁগুলিকে একশো শতাংশ তামাক বর্জিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা সবাই।” সৌকতের আরও বক্তব্য, সাম্প্রতিক বন্যায় যে ভাবে পর্যটন শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা থেকে মাথা তুলে দাঁড়াতে যথেষ্ট কাঠখড় পোড়াতে হচ্ছে এখানকার ব্যবসায়ীদের। তবে সেই সঙ্গেই যেখানে সেখানে ধূমপান বর্জনের জন্য যে নির্দেশিকা চালু হচ্ছে তা যাতে সকলে মেনে চলেন, তার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।
সৌকত একা নন। তাঁর মতো আরও অনেক ব্যবসায়ীই মনে করছেন, তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার রোধে যে ‘কটপা’ আইন চালু রয়েছে, তা কাশ্মীর উপত্যকায় কঠোর ভাবে জারি করার সময় এসেছে। আপাতত রাজ্যের ২৬.৬ শতাংশ মানুষ তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার করেন। সেই সংখ্যাটা এখন কমিয়ে আনাই মূল লক্ষ্য। সৌকত জানিয়েছেন, তামাকজাত দ্রব্যের অপকারিতা লোকজনকে বোঝানোর জন্য তাঁরা সদস্যদের উদ্বুদ্ধ করছেন। তবে সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার আর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলিকেও তাদের ভূমিকা পালন করতে হবে। দেশে প্রতি বছর দশ লাখ মানুষ ক্যানসার আর হৃদ্রোগ জনিত সমস্যায় মারা যান। তার জন্য সিগারেট আর গুটখার মতো তামাকজাত দ্রব্যই দায়ী।”
‘হাউসবোট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর চেয়ারম্যান মহম্মদ ইউসুফ চাপরির কথায়, “সিগারেট আর অন্য তামাকজাত দ্রব্য সমাজে আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষত যুব সমাজ এই নেশায় আকৃষ্ট হচ্ছে। আর সেটা আটকাতে হাউসবোট ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত সকলকেই আমরা বিশেষ ভাবে অনুরোধ জানিয়েছি।” ইউসুফ জানিয়েছেন, হাউসবোটের মধ্যে ধূমপান করার জন্য ইতিমধ্যেই অনেকের ৫০০ টাকা জরিমানা হয়েছে। তালিকায় স্থানীয়দের সঙ্গে রয়েছে পর্যটকদের নামও। তিনি আরও জানিয়েছেন, হাউসবোটের কর্মীরা অতিথিদের বারবার ধূমপানের বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করছেন। আর হাউসবোটের কর্মীরা ধূমপান করলে?
ইউসুফ জানালেন, এক্ষেত্রে মাফ করা হবে না তাঁদেরও। বাকিদের মতোই শাস্তি দেওয়া হচ্ছে তাঁদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy