Advertisement
E-Paper

ধার নিয়ে ফেরাল না দিল্লি, কাঁটা কমলো গডকড়ীর

তিন মাসের জন্য ধার দেওয়া হল দিল্লিকে। এর পরে মহারাষ্ট্রের নেতৃত্ব দেবেন গোপীনাথ মুন্ডেই। পোস্টার পড়েছিল মুম্বইয়ে। নরেন্দ্র মোদীও ভেবে রেখেছিলেন সেই রকমই। বছর শেষে রাজ্যে বিধানসভা ভোটে দলের মুখ করা হবে গরিব ঘর থেকে উঠে আসা এই দাপুটে নেতাকে। বস্তুত তারই মঞ্চ সাজাতে আজ মুম্বইয়ে বিজয়সভায় যাচ্ছিলেন গোপীনাথ। কিন্তু দিল্লি ফেরাল তাঁর মৃতদেহ!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৪ ০২:৫৫

তিন মাসের জন্য ধার দেওয়া হল দিল্লিকে। এর পরে মহারাষ্ট্রের নেতৃত্ব দেবেন গোপীনাথ মুন্ডেই। পোস্টার পড়েছিল মুম্বইয়ে। নরেন্দ্র মোদীও ভেবে রেখেছিলেন সেই রকমই। বছর শেষে রাজ্যে বিধানসভা ভোটে দলের মুখ করা হবে গরিব ঘর থেকে উঠে আসা এই দাপুটে নেতাকে। বস্তুত তারই মঞ্চ সাজাতে আজ মুম্বইয়ে বিজয়সভায় যাচ্ছিলেন গোপীনাথ। কিন্তু দিল্লি ফেরাল তাঁর মৃতদেহ!

বিধানসভা ভোটের মুখে এক ধাক্কায় বদলে গেল রাজ্য রাজনীতির মোড়। কী ভাবে পূরণ হবে মুন্ডের শূন্যতা, সেটাই এখন সব থেকে বড় প্রশ্ন বিজেপির কাছে।

মুন্ডের মেয়ে পঙ্কজা রাজনীতিতে এসেছেন আগেই। রাজ্যে বিধায়কও তিনি। তাঁকে সামনে রেখে মুন্ডে-আবেগকে কাজে লাগানোর একটা ভাবনা প্রাথমিক ভাবে উঠে এলেও বিজেপি নেতৃত্ব বুঝতে পারছেন, মুন্ডের অভাব পূরণ কার্যত অসম্ভব। কারণ, মহারাষ্ট্রের জটিল রাজনীতিতে পঙ্কজা এখনও তেমন অভিজ্ঞ নন। বয়সও কম। রয়েছে আরও প্রশ্ন। যেমন মুন্ডের আকস্মিক মৃত্যুতে দলে তাঁর বিপক্ষ শিবিরের নেতা নিতিন গডকড়ীর প্রভাব বাড়বে মহারাষ্ট্রে। তাঁর সঙ্গে এখন নরেন্দ্র মোদীর সম্পর্কও ভাল। মোদীর অঘোষিত কোর টিমে রাজনাথ সিংহ, অরুণ জেটলির পাশাপাশি আছেন গডকড়ীও। ফলে ভবিষ্যতে তাঁরই পছন্দের কাউকে মুখ্যমন্ত্রী করার চেষ্টা হবেই। দলের এক নেতা তো আজ বলেই ফেললেন, “সন্দেহ নেই, মুন্ডের অবর্তমানে শক্তি বাড়ল গডকড়ীর। তাঁর পছন্দের লোকই মুখ্যমন্ত্রী হবেন।” আজ মুন্ডের দুর্ঘটনার খবর আসতেই সক্রিয় হন গডকড়ী। শোকার্ত পরিবারের পাশেও থেকেছেন সর্বক্ষণ।

মহারাষ্ট্রে বর্তমান বিধানসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৭ ডিসেম্বর। ফলে সেপ্টেম্বর নাগাদই শুরু হয়ে যাবে ভোটের বাদ্যি। তবু মাত্র এক সপ্তাহ আগেই মোদী তাঁকে গ্রামীণ উন্নয়ন মন্ত্রকের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তলে তলে স্থিরই ছিল যে, মহারাষ্ট্রে বিধানসভা ভোটে তাঁকেই দলের মুখ করে পাঠানো হবে। গত কাল বিজেপির শরিক শিবসেনা যে উদ্ধব ঠাকরেকে ভাবী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরার কথা ঘোষণা করেছে, তারও লক্ষ্য মুন্ডেকে প্রতিহত করা। কারণ, পিছিয়ে পড়া শ্রেণির পরিবার থেকে উঠে আসা মুন্ডের শক্তি ক্রমশই বাড়ছিল। এ বারের লোকসভা ভোটে মহারাষ্ট্রের ৪৮টি আসনের মধ্যে ৪২টিই যে বিজেপি-জোট দখল করেছে, তার পিছনে মোদী-হাওয়া ছাড়াও ছিল মুন্ডের দাপট। ফলে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনেও কংগ্রেস-এনসিপির থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়ে রাজ্য দখলের প্রস্তুত হচ্ছিলেন মুন্ডে।

গোড়া থেকেই গডকড়ী রাজ্যে তাঁর বিরোধী নেতা হিসাবে পরিচিত। সেই গডকড়ী দলের সভাপতি হওয়ায় মহারাষ্ট্রের রাশ যাতে হাত থেকে ফসকে না যায়, তার জন্য বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিলেন মুন্ডে। কংগ্রেসে যাওয়ার প্রস্তুতিও শুরু করে দেন। শেষ পর্যন্ত মহারাষ্ট্রের রাশ মুন্ডের হাতে তুলে দিয়েই তাঁকে সামলান দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বিজেপির নেতারা মনে করেন, রাজধানীতে এলেও মুন্ডে কোনও দিনই দিল্লির নেতা হয়ে ওঠেননি। বরাবরই মহারাষ্ট্র তাঁর পাখির চোখ। মরাঠাওয়াড়ার নেতা হলেও গোটা রাজ্যের সামাজিক রসায়ন জানা ছিল তাঁর। ফলে গোটা রাজ্যেই নিজের প্রভাব ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। যে কারণে এ বারের লোকসভা নির্বাচনে শরদ পওয়ার তাঁকে হারানোর মরিয়া চেষ্টা চালিয়েও সফল হননি। মহারাষ্ট্রের জন্য দলে এই উচ্চতার নেতা যে এখন নেই, সে কথা এক বাক্যে মানছেন বিজেপি নেতারা।

মুন্ডের আসনে এ বার মেয়ে পঙ্কজাকে প্রার্থী করা হতে পারে। তবে বিজেপির নেতারা বলছেন, পঙ্কজাকে সামনে রেখেই গোটা রাজ্যে প্রচার চালানো হবে। যারা উদ্ধবকে ভাবী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরার কথা বলে মুন্ডেকে চাপে রাখতে চেয়েছিল, সেই শিবসেনাকেও পাল্টা চাপে রাখা যাবে এতে। মুন্ডে সম্পর্কে সহানুভূতির হাওয়া থাকয়া তার বিপক্ষে কিছু বলা দুষ্কর হবে শিবসেনার পক্ষেও।

বিজেপি নেতাদের দাবি, শিবসেনা যতই হম্বিতম্বি করুক, তাদের সঙ্গে অলিখিত বোঝাপড়া আছে দলের। সেটি হল, বিধানসভা ভোটের পর যাদের বিধায়ক বেশি হবে, সেই দল থেকেই মুখ্যমন্ত্রী হবেন। অতীতে বিরোধী নেতার আসনও স্থির হয়েছে এই সূত্র ধরেই। মুন্ডে সেই দৃষ্টান্ত তুলে ধরেই শিবসেনার সঙ্গে দর কষাকষির প্রস্তাব দিয়েছিলেন দলকে। কিন্তু সেই সমীকরণ এখন কোন দিকে এগোবে, তার অনেকটাই নির্ভর করবে গডকড়ীর উপরে। অথবা যতক্ষণ না মুন্ডে শিবির থেকে কোনও প্রভাবশালী নেতার আবির্ভাব হচ্ছে। তবে তার জন্য ভোটের আগে সময় বড় কম।

gopinath munde accident bjp nitin gadkari
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy