কাছাড়ে বনবাসীদের পাট্টা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল ৯ বছর আগে। কিন্তু এখনও সেই কাজে গতি আসেনি। অভিযোগ উঠছে, পাট্টার আবেদন মহকুমা থেকে জেলাস্তরে পৌঁছতে কয়েক বছর সময় লাগছে।
তবে রাজ্যের বন বিভাগ দাবি করেছে, ইতিমধ্যেই জঙ্গল এলাকার প্রায় ১ হাজার ৭০০ পরিবার পাট্টা হাতে পেয়েছেন। বাকি আবেদনগুলির ক্ষেত্রেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ‘কাছাড় আইন সেবা কর্তৃপক্ষ’ সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিকে দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ করার নিদের্শ দিয়েছে।
কাছাড়ের বিভিন্ন অরণ্যে প্রচুর বসতি রয়েছে। অভিযোগ, বনকর্মীরা মাঝেমধ্যেই সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। বাড়ি থেকে হঠিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। তার জেরে উপজাতি ও অনুপজাতি বনবাসীরা ক্ষুব্ধ। তাঁদের বক্তব্য, পাট্টার আবেদন গ্রামসভার মাধ্যমে মহকুমাশাসকের কাছে যায়। তার পর রেঞ্জ অফিসারের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়। লালপানির যুবক স্টিফেন মার, জামালপুরের প্রৌঢ় জাকির হোসেনের মতো বনবাসীদের অভিযোগ, কারও কারও আবেদন মহকুমাশাসকের অফিসেই পড়ে রয়েছে, কারও বা রেঞ্জ অফিসারের টেবিলে। খোঁজ করতে গেলে, কোথাও সদুত্তর মেলে না। পাট্টা না-পাওয়ায় তাঁরা আর্থিক ভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হন। নতুন সড়ক তৈরি বা রাস্তা চওড়া করা, বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে বা বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনে সরকার তাদের জমি অধিগ্রহণ করে কিন্তু পাট্টা না থাকায় ঠিকমতো ক্ষতিপূরণ মেলে না।
সম্প্রতি ‘কাছাড় জেলা আইনি সেবা কর্তৃপক্ষের’ সচিব মাহমুদ হোসেন বড়ভুঁইয়া সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে তাঁর দফতরে আসা অভিযোগপত্র দেখিয়ে তিনি জানতে চান, কেন অনেক বনবাসী এখনও পাট্টা পাননি। বন বিভাগের তরফে আনিসুর রহমান জানান, কাছাড়ে এখনও পর্যন্ত ১ হাজার ৭০০ পরিবারকে পাট্টা দেওয়া হয়েছে। আরও অনেক আবেদন রেঞ্জ অফিসগুলিতে পড়ে রয়েছে। সেগুলি দ্রুত ডিএফও অফিসে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হবে।
বড়ভুঁইয়া বলেন, “অনুপজাতি কোনও পরিবার ৭৫ বছর ধরে বনাঞ্চলে বসবাস করলে, তাঁরা বনবাসী হিসেবে চিহ্নিত হবেন। উপজাতিদের ক্ষেত্রে এমন কোনও সময়সীমা নেই।”
কাছাড়ের অতিরিক্ত জেলাশাসক এস এন সিংহ বলেন, “কাজ কেন দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে না, তা তদন্ত করে দেখা হবে। আইন মেনে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পাট্টা বিতরণের ব্যবস্থা করবে প্রশাসন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy