Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

প্রতারণা মামলায় কোর্টের সমন সনিয়া ও রাহুলকে

‘ন্যাশনাল হেরাল্ড’ পত্রিকার প্রকাশক সংস্থা ‘অ্যাসোসিয়েটেড জার্নাল’ নিয়ে মামলায় সনিয়া ও রাহুল গাঁধী-সহ বেশ কয়েক জন শীর্ষ কংগ্রেস নেতাকে সমন পাঠাল দিল্লির আদালত। কংগ্রেস নেতাদের বিরুদ্ধে এই মামলা করেছেন বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। কংগ্রেস নেতাদের বিরুদ্ধে অসাধু উদ্দেশ্যে সম্পত্তি সরানো, বিশ্বাসভঙ্গ, প্রতারণা ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছেন স্বামী।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৪ ০৩:১০
Share: Save:

‘ন্যাশনাল হেরাল্ড’ পত্রিকার প্রকাশক সংস্থা ‘অ্যাসোসিয়েটেড জার্নাল’ নিয়ে মামলায় সনিয়া ও রাহুল গাঁধী-সহ বেশ কয়েক জন শীর্ষ কংগ্রেস নেতাকে সমন পাঠাল দিল্লির আদালত।

কংগ্রেস নেতাদের বিরুদ্ধে এই মামলা করেছেন বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। কংগ্রেস নেতাদের বিরুদ্ধে অসাধু উদ্দেশ্যে সম্পত্তি সরানো, বিশ্বাসভঙ্গ, প্রতারণা ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছেন স্বামী। তিনি জানিয়েছেন, মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে সনিয়া-রাহুলের সাত বছর থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। বিজেপি নেতার অভিযোগই ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে কংগ্রেস।

স্বামী তাঁর আর্জিতে জানিয়েছেন, বিপুল ঋণ থাকায় ২০০৮ সালে ‘অ্যাসোসিয়েটেড জার্নাল’ বন্ধ হয়ে যায়। ২০১০ সালে ‘ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেড’ বলে একটি সংস্থা তৈরি হয়। তার শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে ছিলেন সনিয়া, রাহুল, এআইসিসি-র কোষাধ্যক্ষ মোতিলাল ভোরা, কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অস্কার ফার্নান্ডেজের মতো ব্যক্তিত্বরা। জওহরলাল নেহরু প্রতিষ্ঠিত ‘ন্যাশনাল হেরাল্ড’ পত্রিকার সঙ্গে কংগ্রেসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। স্বামীর দাবি, কংগ্রেসের কাছে ৯০ কোটি টাকা ঋণ ছিল ‘অ্যাসোসিয়েটেড জার্নাল’-এর। ‘ইয়ং ইন্ডিয়ান’ তৈরির পরেই ‘অ্যাসোসিয়েটেড জার্নাল’-এর পরিচালন পর্ষদ সিদ্ধান্ত নেয়, তাদের সম্পত্তি থেকে ৯০ কোটি টাকা ঋণ মেটানো সম্ভব নয়। ফলে, ৫০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ওই ঋণ মেটানোর দায় ও ‘অ্যাসোসিয়েটেড জার্নাল’-এর সব শেয়ার ‘ইয়ং ইন্ডিয়ান’-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ‘জার্নাল’-এর শেয়ারহোল্ডারদের অনুমতি নেওয়া হয়নি।

‘অ্যাসোসিয়েটেড জার্নাল’ হস্তগত হওয়ার পরে রাহুল গাঁধীরা ওই সংস্থার ৯০ কোটি টাকা ঋণ আদায় করা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেন। স্বামী জানিয়েছেন, ‘জার্নাল’-এর অন্তত ২ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে বলে ওই সংস্থার ব্যালেন্সশিট থেকেই বোঝা যাচ্ছে। ফলে, ৯০ কোটি ঋণ মেটানো যাবে না বলে পরিচালন পর্ষদ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তা একেবারেই উদ্দেশ্য প্রণোদিত। তাঁর অভিযোগ, ওই ২ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি রাহুল গাঁধীদের হস্তগত করানোর জন্যই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

স্বামীর যুক্তি প্রাথমিক ভাবে মেনে নিয়েছে দিল্লির মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত। বিচারক গোমতী মানোশা জানিয়েছেন, সাক্ষ্যপ্রমাণ দেখে তাঁর ধারণা জনসাধারণের অর্থ ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্যই ‘ইয়ং ইন্ডিয়ান’ তৈরি করা হয়েছিল। সনিয়া, রাহুল, মোতিলাল ভোরা, অস্কার ফার্নান্ডেজ কংগ্রেসের তহবিলের ট্রাস্টি। কংগ্রেস দলের এই তহবিল কোনও বাণিজ্যিক সংস্থাকে ‘সাহায্য’ করার জন্য ব্যবহারের অধিকার আইন তাঁদের দেয়নি। আবার ‘জার্নাল’ সংস্থা ও তার শেয়ারহোল্ডারদের সঙ্গেও বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে। মানুষের কাছ থেকে অনুদান হিসেবে পাওয়া অর্থ বাণিজ্যিক কাজে লাগিয়েছে কংগ্রেস। সেই অনুদানের উপরে কর ছাড় চাওয়া হয়েছিল। তাই জাতীয় কোষাগারকেও ঠকানো হয়েছে।

৭ অগস্ট সনিয়া, রাহুল-সহ অভিযুক্তদের কোর্টে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। ‘ইয়ং ইন্ডিয়ান’ সংস্থার নামেও সমন জারি হয়েছে।

কংগ্রেস মুখপাত্র ও কৌঁসুলি অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির কথায়, “সুব্রহ্মণ্যম স্বামী বরাবরই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে আক্রমণ শানান। এই সব অভিযোগ আইনি পথেই নস্যাৎ করবে দল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

sonia rahul court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE