ভারতের পরমাণু চুল্লিতে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে ক্ষতিগ্রস্তরা সংশ্লিষ্ট যন্ত্রাংশ সরবরাহকারী সংস্থার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিল বিদেশ মন্ত্রক। সেই অধিকার থাকবে শুধুমাত্র পরমাণু চুল্লি ব্যবহারকারী সংস্থার (এ ক্ষেত্রে যে সংস্থা হল ভারতীয় পরমাণু বিদ্যুৎ কর্পোরেশন বা এনপিসিআইএল)। অর্থাৎ, ভারতের সঙ্গে পরমাণু চুক্তির ক্ষেত্রে মার্কিন সংস্থাগুলির সীমাহীন দায়বদ্ধতার আশঙ্কা যে নেই, সে কথাই আজ স্পষ্ট করে দিল দিল্লি।
মনমোহন সিংহের জমানায় সূচনার পরেই হিমঘরে চলে যাওয়া ভারত-মার্কিন পরমাণু চুক্তির বিভিন্ন জট কাটিয়ে গত মাসে সেটিকে কার্যত নবজন্ম দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী ও বারাক ওবামা। সেই সমঝোতা সংক্রান্ত কিছু তথ্যই আজ নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রশ্নোত্তরের আকারে প্রকাশ করেছে বিদেশ মন্ত্রক। যাতে বলা হয়েছে, ভারতের পরমাণু দায়বদ্ধতা আইনে কোনও সংশোধন করা হচ্ছে না।
আর এখানেই ভারতীয় পরমাণু দায়বদ্ধতা আইনের ৪৬ নম্বর ধারার কথা উল্লেখ করে বিদেশ মন্ত্রক স্পষ্ট করে দিয়েছে, পরমাণু জ্বালানি ও যন্ত্রাংশ সরবরাহকারী সংস্থাগুলির দায়বদ্ধতা শুধু ব্যবহারকারী সংস্থার কাছেই। এমনকী ক্ষতিগ্রস্তরা বিদেশের আদালতেও যেতে পারবেন না। এ ব্যাপারে গত কাল আমেরিকাকে লিখিত ভাবে আশ্বস্ত করেছে দিল্লি।
২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে ভারত-মার্কিন পরমাণু সহযোগিতা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে একটি কন্ট্যাক্ট গ্রুপ গঠন করা হয়েছিল। আজ বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, পরমাণু চুক্তির বিভিন্ন জট ছাড়াতে তিন দফা বৈঠক করেছিল সেই গ্রুপ। শেষ বৈঠকটি হয় লন্ডনে, ওবামার ভারত সফরের তিন দিন আগে। সেই বৈঠকে ভর করেই পরমাণু সহযোগিতা নিয়ে বকেয়া দু’টি বিষয়ে শেষ পর্যন্ত ঐকমত্য হয়। গত ২৫ জানুয়ারি তাতেই সিলমোহর দেন মোদী-ওবামা।
আমেরিকা চাইছিল, ভারতের পরমাণু চুল্লিতে ব্যবহৃত তেজষ্ক্রিয় পদার্থগুলিকে তাদের পর্যবেক্ষণের আওতায় রাখতে। এতে আপত্তি ছিল ভারতের। তবে ওবামা এসে মোদীকে জানিয়ে দেন, তাঁরা এই পর্যবেক্ষণ চান না। এ বিষয়ে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সৈয়দ আকবরুদ্দিন আজ বলেন, “আমরা শুধু আইএইএ (আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা)-র রক্ষাকবচ মেনে চলব। এর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক কোনও রক্ষাকবচ নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy