কয়েক মাস আগের ঘটনা। এআইইউডিএফ প্রধান বদরুদ্দিন আজমলের বিষয়ে অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ বলেছিলেন ‘হু ইজ বদরুদ্দিন?’
ছবিটা এ বার একেবারেই বদলেছে।
লোকসভা ভোটে ভরাডুবির হতাশা কাটতে না কাটতেই, পুর-নির্বাচনে বিজেপি ঝড়ে রাজ্যে খড়কুটো হয়েছে কংগ্রেস। বিধানসভা ভোটের আগে তাই গেরুয়া-বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়তে আজমলকে পাশে পেতে চাইছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। এমনকী বিরোধী কৃষক-নেতা অখিল গগৈ রাজনৈতিক দল গড়লে, তাঁর দিকেও বন্ধুত্বের হাত এগোনোর ইঙ্গিত দিয়েছেন গগৈ। কংগ্রেস নেতৃত্বের আশঙ্কা, তাঁদের আগে আজমল ও অখিলের সঙ্গে বিজেপির বন্ধুত্ব হয়ে গেলে, অসমে দল আরও বিপদে পড়তে পারে। বিরোধী ওই দুই নেতা অবশ্য স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলাতে তাঁরা রাজি নন।
আসন্ন বিধানসভা ভোটের রণকৌশল ঠিক করতে দু’দিন ধরে এআইসিসি নিযুক্ত অসমের পর্যবেক্ষক সি পি যোশী রাজ্যের দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছেন। কংগ্রেস সূত্রে খবর, বৈঠকের সময়ই রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল এআইইউডিএফ-এর সঙ্গে জোট গঠনের প্রস্তাব দেন গগৈ। পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এআইইউডিএফ-এর সঙ্গে কংগ্রেস প্রাক নির্বাচনী সমঝোতা করলে আপত্তির কিছু নেই।” কিন্তু, কয়েক মাস আগে তো তিনিই আজমলকে ব্যঙ্গ করেছিলেন? গগৈয়ের জবাব, “ওঁর (আজমল) দলে এখন ১৮ জন বিধায়ক, ৩ সাংসদ রয়েছেন। এ সব কথা আর বলা যায় না।” পাশাপাশি তাঁর মন্তব্য, “কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি রাজনৈতিক দল গড়লে তাঁদেরও স্বাগত। তবে, ওই দলের সঙ্গে কংগ্রেসের নীতি ও আদর্শের মিল থাকতে হবে। বন্ধুত্ব করতে গেলে দু’পক্ষকে সমান আগ্রহী হতে হয়।” যোশি বলেছেন, “এ নিয়ে সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
আজমল বর্তমানে মুম্বইয়ের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গগৈয়ের বক্তব্য শোনার পর তিনি বিবৃতি দিয়ে জানান এ সব কথা বলে কংগ্রেস সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে। কংগ্রেস ও বিজেপির সঙ্গে সমান দুরত্ব বজায় রেখে চলবে এআইইউডিএফ। তাঁরা ‘একলা চলো’ নীতিতে বিশ্বাসী।
এআইইউডিএফ-এর মতো অখিলের কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতিও গগৈয়ের প্রস্তাব নাকচ করেছে। সমিতির সাধারণ সম্পাদক কমলকুমার মেধি বলেন, “আমরা তৃতীয় রাজনৈতিক মঞ্চ গড়ার পরিকল্পনা করছি। সেখানে অসম গণ পরিষদ, বামদল ও বিভিন্ন উপজাতি সংগঠন থাকবে। ওই মঞ্চ কংগ্রেস ও বিজেপির বিরুদ্ধেই লড়বে।” তিনি জানান, কৃষক মুক্তি কোনও রাজনৈতিক দল গড়বে কি না, তা নিয়ে সমিতির আগামী সাধারণ সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে, সে ক্ষেত্রেও নবগঠিত দলের সঙ্গে কংগ্রেসের বন্ধুত্বের সম্ভাবনা থাকবে না। উল্লেখ্য, দিল্লিতে আম আদমি পার্টির জয়ের পর অসম গণ পরিষদ রাজ্যে ‘তৃতীয় মঞ্চ’ গড়ার আহ্বান জানায়। অখিল জানিয়েছেন, তিনি সেই মঞ্চের নেতৃত্বের দায়িত্ব নিতেও প্রস্তুত।
প্রাক নির্বাচনী সমঝোতা নিয়ে কংগ্রেসের মধ্যেও দ্বিমত রয়েছে। গগৈ বিরোধী শিবিরের বিধায়ক সিদ্দেক আহমেদের বক্তব্য, “এআইইউডিএফ-এর সঙ্গে বন্ধুত্ব কংগ্রেসের পক্ষে বুমেরাং হতে পারে।” গগৈ বিরোধী শিবিরের নেতা হিমন্তবিশ্ব শর্মার কথায়, “আগে নিজেদের শক্তিশালী করতে হবে। দুর্বল দল বন্ধুত্বের হাত বাড়ালেও কেউ তা ধরতে চাইবে না।” গগৈ শিবিরের মন্ত্রী রকিবুল হুসেন বলেন, “দু’টি দলের নীতি ও আদর্শে মিললে সমঝোতা হতেই পারে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy