থামছে না বৃষ্টি। বেড়েই চলেছে কাদার স্তূপ। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছড়াচ্ছে ধ্বংসস্তূপে আটকে থাকা মানুষ ও গবাদি পশুগুলি থেকে ছড়িয়ে পড়া দুর্গন্ধ। মহারাষ্ট্রের মলিণ গ্রামের বর্তমান ছবিটি এমনই নারকীয়। গত রাত থেকে আরও ২৯টি দেহ উদ্ধার করার পর মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৮২-তে। আশঙ্কা আরও শ’খানেক মানুষ আটকে।
প্রতিকূল পরিস্থিতি অগ্রাহ্য করে চলছে উদ্ধারকাজ। দুর্গন্ধের জন্য মুখোশ পরেছেন কর্মীরা। আগে তাঁরা জানিয়েছিলেন, ৩ দিনেই উদ্ধারকাজ শেষ হবে। কিন্তু এখন বলছেন, কম করে আরও চার দিন লাগবে। এক অফিসার বললেন, “জল-কাদায় বড় ভারী যন্ত্র পৌঁছতে পারছে না ঘটনাস্থলে।” তার মধ্যে জেনারেটর চালিয়ে রাতভর চলছে উদ্ধারকাজ।
চার দিনের চেষ্টায় মাত্র আট জন জীবিত উদ্ধার হয়েছেন। দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর সহ-কম্যান্ড্যান্ট গৌতম সরকার বললেন, “কাদা-মাটি-বালি-পাথরের স্তূপ থেকে প্রাণের সন্ধান পাওয়ার সম্ভাবনা ক্রমেই ক্ষীণ হচ্ছে। নীচে হয়তো অক্সিজেন পৌঁছচ্ছে না।” দুর্গতদের পরিবারকে কেন্দ্রের তরফে দু’লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বৃহস্পতিবারই ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। মহারাষ্ট্র সরকার পরিবারপিছু আরও পাঁচ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আজ।
এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণ হিসেবে রাজ্য সরকারের দিকে আঙুল তুলেছেন পরিবেশকর্মীরা। এক কর্মীর অভিযোগ, প্রতি বছর বর্ষার আগে রাজ্যের কৃষি দফতর ওই এলাকার পাহাড় কেটে সমান চাষের জমি তৈরি করে। কাটা হয় গাছপালাও। ফলে আলগা হয়ে যায় মাটি। জলের গতি আটকে পুকুরও তৈরি করা হয় মাছ চাষের জন্য। কিন্তু প্রকৃতির এই কৃত্রিম পরিবর্তনের জন্য যা যা আগাম ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, তার কিছুই করে না সরকার। সরকারের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন তিনি।