Advertisement
E-Paper

বর্জ্য শোধন ছাড়াই হোটেলে ছাড়পত্র কেন

পাঁচশোরও বেশি হোটেল রয়েছে পুরীর সমুদ্রসৈকতের আশেপাশে। কিন্তু তার মধ্যে মাত্র পাঁচটি হোটেল পরিবেশ আইন মেনে নিকাশি শোধন যন্ত্র বসিয়েছে বলে জানাচ্ছে ওড়িশার দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদই। তা হলে নিকাশি বর্জ্য শোধনের যন্ত্র না-বসানো সত্ত্বেও অন্যান্য হোটেল চালানোর অনুমতি দেওয়া হল কী ভাবে, সেই প্রশ্ন তুলেছে জাতীয় পরিবেশ আদালত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৫৯

পাঁচশোরও বেশি হোটেল রয়েছে পুরীর সমুদ্রসৈকতের আশেপাশে। কিন্তু তার মধ্যে মাত্র পাঁচটি হোটেল পরিবেশ আইন মেনে নিকাশি শোধন যন্ত্র বসিয়েছে বলে জানাচ্ছে ওড়িশার দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদই। তা হলে নিকাশি বর্জ্য শোধনের যন্ত্র না-বসানো সত্ত্বেও অন্যান্য হোটেল চালানোর অনুমতি দেওয়া হল কী ভাবে, সেই প্রশ্ন তুলেছে জাতীয় পরিবেশ আদালত।

পুরীর দূষণের অন্যতম বড় কারণ সমুদ্রসৈকতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা বেআইনি হোটেলের বর্জ্য। আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে হোটেলগুলি কী ভাবে চলছে, সেই প্রশ্ন দীর্ঘদিনের। সেই হোটেলগুলিকে ছাড়পত্র দেওয়া নিয়ে এ বার জাতীয় পরিবেশ আদালতে প্রশ্নের মুখে পড়েছে ওড়িশা। পুরীর দূষণ সংক্রান্ত মামলায় বুধবার ওড়িশার দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ জানায়, সৈকতের পাশে পাঁচ শতাধিক হোটেলের মধ্যে ৩৭টিকে নতুন নিয়ম মেনে ব্যবসা চালানোর অনুমতি দিয়েছে তারা। তবে পরিবেশ আইন মেনে নিকাশি শোধন যন্ত্র বসিয়েছে মাত্র পাঁচটি হোটেল। ওই শোধন যন্ত্র না-বসানো সত্ত্বেও কী ভাবে অন্যান্য হোটেলকে ব্যবসার অনুমতি দেওয়া হল, তা নিয়ে এক মাসের মধ্যে পর্ষদের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে পরিবেশ আদালত।

পুরীর দূষণ নিয়ে দিল্লির জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলা করেছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। সেই মামলাতেই হোটেল, নিকাশি ব্যবস্থা এবং স্বর্গদ্বার শ্মশান নিয়ে একাধিক নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। উপকূল বিধি ভেঙে সমুদ্রসৈকত ঘিরে কী ভাবে এত হোটেল গজিয়ে উঠল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে আদালত। বেআইনি হোটেল এবং অন্যান্য অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিল তারা। কোনও হোটেলেরই নিকাশি বর্জ্য যাতে সরাসরি সমুদ্রে না-মেশে, সেটাও দেখতে বলা হয়েছিল।

ওড়িশা এ দিন আদালতে জানায়, পুরীর সৈকত সংলগ্ন এলাকায় মোট ৫২৫টি হোটেল রয়েছে। তার মধ্যে ৪৬৮টি হোটেল উপকূলীয় সংরক্ষিত এলাকার মধ্যে। ইতিমধ্যেই বেআইনি ন’টি হোটেল বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে বন্ধও হয়ে গিয়েছে দু’টি। নতুন বিধি মেনে ১১৩টি হোটেল ‘কনসেন্ট টু অপারেট’ বা ব্যবসা চালানোর অনুমতি চেয়েছে। তার মধ্যে ৩৭টি হোটেল সেই অনুমতি পেয়েছে। সুভাষবাবুর অভিযোগ, নিজস্ব নিকাশি শোধন যন্ত্র না-থাকায় ওই হোটেলগুলি পরিবেশ বিধি অনুযায়ী বর্জ্য শোধন না-করেই তা বার করে দিচ্ছে। এই প্রেক্ষিতেই বিচারপতি স্বতন্ত্র কুমারের নেতৃত্বে চার সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, বাকি হোটেলগুলিকে অনুমতি দেওয়ার পদ্ধতিটা কী, সেই বিষয়ে এক মাসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে হবে।

বেআইনি হোটেলের সঙ্গে সঙ্গে এ দিন স্বর্গদ্বার শ্মশানের দূষণ নিয়েও আদালতে প্রশ্নের মুখে পড়েছে ওড়িশা। আদালতের নির্দেশে ওই শ্মশানে কাঠের চুল্লিতে চিমনি-সহ বিশেষ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে তারা। সুভাষবাবু এ দিন আদালতে জানান, ২৪ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ওই চুল্লিতে মাত্র দু’টি মৃতদেহ দাহ করা হয়েছে। নতুন চুল্লির নির্মাণে কিছু ত্রুটি থাকার ফলেই লোকে তাতে শব দাহ করার ব্যাপারে আগ্রহী হচ্ছে না বলে তাঁর অভিযোগ। ওই সব ত্রুটি সংশোধন করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ওই শ্মশানের আশেপাশে খোলা খাবারের দোকান নিয়ে পুরী পুরসভার রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।

প্লাস্টিক দূষণও পুরীর পরিবেশের বড় বিপদ। এ দিন সেই দূষণের ব্যাপারেও আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সুভাষবাবু। তিনি বলেন, “পুরীর মোট কঠিন বর্জ্যের ৫০ ভাগই প্লাস্টিক। তার ফলে পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।” আগামী জুন-জুলাইয়ে পুরীর ‘নব কলেবর’ উৎসবের জন্য কয়েক লক্ষ দর্শনার্থীর সমাগম হবে। তখন প্লাস্টিক দূষণ কয়েক গুণ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই বিষয়ে সুভাষবাবুর কাছে হলফনামা চেয়েছে আদালত। আগামী ২৫ মার্চ মামলাটির পরবর্তী শুনানি হবে।

puri illegal hotels pollution
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy