মুম্বইয়ের সভায় মোদী। পাশে উদ্ধব ঠাকরে। ছবি: এএফপি
আক্রমণের সুর চড়িয়ে বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে এ বার সরাসরি খুনের ঘটনায় ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলল কংগ্রেস। দলের তরফে আজ এই আক্রমণ শানান কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কপিল সিব্বল। তাঁর বক্তব্য, গুজরাতে ভুয়ো সংঘর্ষের নামে সোহরাবুদ্দিন, কৌসর বি ও তুলসীরাম প্রজাপতিকে খুনের ঘটনায় সম্ভাব্য অভিযুক্ত দুই ব্যক্তি হলেন মোদী ও তাঁর ভাবশিষ্য অমিত শাহ। ভুয়ো সংঘর্ষে জড়িত পুলিশ-কর্তাদের সঙ্গে অমিত শাহ ও মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের এক আমলার সবিস্তার ‘কল রেকর্ড’ তুলে ধরে এ ব্যাপারে আজ সিবিআই তদন্তও দাবি করেন সিব্বল। কংগ্রেস সভানেত্রী গুজরাতে প্রচারে যাচ্ছেন আগামী বৃহস্পতিবার। মোদী নিরন্তর যে ভাবে তাঁকে ও রাহুল গাঁধীকে, এমনকী গাঁধী পরিবারের জামাই রবার্ট বঢরাকেও তীব্র ভাবে আক্রমণ করে যাচ্ছেন সনিয়া চড়া সুরেই তার জবাব দেবেন বলে দলীয় সূত্রের ইঙ্গিত। সিব্বল তারই জমি তৈরি করে রাখলেন।
ভুয়ো সংঘর্ষ মামলায় মোদী প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ নতুন নয়। কিন্তু ২০০৬ সালের ওই ঘটনা নিয়ে গত ছ’মাসে সরাসরি মোদীকে এত জোরালো ভাবে আক্রমণ করেনি কংগ্রেস। তা হলে আজ কেন? ভোট-পর্বের মাঝে এসে খোদ আইনমন্ত্রী যে ভাবে সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন, তা বিজেপি-সহ অনেকের কাছেই হাস্যকর মনে হচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, কেন্দ্রে সরকারে থেকেও এত দিন সিবিআইয়ের মাধ্যমে তদন্ত করায়নি কেন কংগ্রেসের সরকার? কপিলের অভিযোগ মোকাবিলায় বিজেপি অস্ত্র করছে এই প্রশ্নটিকেই।
এই প্রশ্নের স্পষ্ট ও যুক্তিসঙ্গত জবাব দিতে পারেননি সিব্বল। তবে ঘরোয়া আলোচনায় কংগ্রেস নেতারা আজ বলেন, লোকসভা ভোটের প্রচার-কৌশল রচনায় এ বার ডাহা ভুল হয়েছে। এখন সেটাই শোধরানোর চেষ্টা হচ্ছে। এখন দেখা যাচ্ছে, পেশাদার সংস্থাকে দিয়ে প্রচারের মাধ্যমে মোদীকে ‘লার্জার দ্যান লাইফ’ বানিয়ে দিয়েছে বিজেপি। লোকসভা ভোটের ৬ দফার পর এখন মোদীর সেই ইমেজ ভেঙে দেওয়ার দিকে নজর দিতে হচ্ছে কংগ্রেসকে।
এআইসিসি সূত্রে বলা হচ্ছে, সিব্বলের আক্রমণের পর রাহুল গাঁধীও এ বার ভুয়ো সংঘর্ষ নিয়ে মোদীর বিরুদ্ধে সরাসরি প্রশ্ন তুলবেন। বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর বিরুদ্ধে খুনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে প্রশাসক হিসেবে তিনি কতটা বিপজ্জনক তা নিয়ে সংশয় ঢোকানোর চেষ্টা করবেন ভোটারদের মনে।
সাংবাদিক বৈঠকে সিব্বল এ দিন বলেন, ভুয়ো সংঘর্ষে মৃত সোহরাবুদ্দিন ও কৌসর বি-কে অপহরণের একমাত্র সাক্ষী ছিলেন তুলসীরাম প্রজাপতি। সেই তুলসীরামকেও খুন করে ভুয়ো সংঘর্ষ বলে চালানো হয়। ওই খুনের ঘটনার দিন অভিযুক্ত পুলিশ-কর্তাদের সঙ্গে মোদী-রাজ্যের তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অমিত শাহ এবং মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের আমলা পরাগ শাহের ফোনে বারবার কথা হয়। তারই কল রেকর্ড আজ দেন সিব্বল।
ঘরোয়া আলোচনায় বিজেপি নেতারা বলছেন, হতে পারে রবার্ট বঢরা প্রসঙ্গে মোদীর সমালোচনা আড়াল করতেই ভুয়ো সংঘর্ষের প্রসঙ্গ তুলেছে কংগ্রেস। তবে এটা স্পষ্ট, প্রচার যতই শেষের দিকে এগোচ্ছে ততই আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়ছে। এ লড়াইয়ে শেষ অস্ত্রও উজাড় করে দিতে প্রস্তুত দুই শিবির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy