Advertisement
E-Paper

মা-পিছু ৪ সন্তান, সাক্ষীর বচনে ফের বিতর্কে কেন্দ্র

কখনও সাধ্বী নিরঞ্জন, কখনও সাক্ষী মহারাজ। হিন্দুত্বের ধ্বজা তুলে ধরতে কুকথা বলা বা সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করা থেকে দলের সাংসদদের বিরত পারছেন না নরেন্দ্র মোদী। এ বার হিন্দুদের জন্য চার সন্তানের তত্ত্ব প্রচার ধরে মোদী সরকারকে আরও এক বার বেকায়দায় ফেলে দিয়েছেন ষাট ছুঁই ছুঁই বিজেপির সাংসদ সাক্ষী মহারাজ। গত কাল মেরঠে সন্ত মহোৎসবে গিয়ে তিনি বলেছেন, “হিন্দু ধর্ম সঙ্কটে। ধর্ম রক্ষায় প্রতিটি হিন্দু মহিলার উচিত চারটি করে সন্তানের জন্ম দেওয়া। তাদের এক জনকে তুলে দিতে হবে সেনাবাহিনীর হাতে। আর এক জনকে সন্ত সমাজের কাছে।” এর আগে প্রকাশ্যে সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করেও সংসদে দাঁড়িয়ে সাক্ষী বলেছিলেন, কই বলিনি তো!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৫৯
সাংসদ সাক্ষী মহারাজ।

সাংসদ সাক্ষী মহারাজ।

কখনও সাধ্বী নিরঞ্জন, কখনও সাক্ষী মহারাজ। হিন্দুত্বের ধ্বজা তুলে ধরতে কুকথা বলা বা সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করা থেকে দলের সাংসদদের বিরত পারছেন না নরেন্দ্র মোদী। এ বার হিন্দুদের জন্য চার সন্তানের তত্ত্ব প্রচার ধরে মোদী সরকারকে আরও এক বার বেকায়দায় ফেলে দিয়েছেন ষাট ছুঁই ছুঁই বিজেপির সাংসদ সাক্ষী মহারাজ। গত কাল মেরঠে সন্ত মহোৎসবে গিয়ে তিনি বলেছেন, “হিন্দু ধর্ম সঙ্কটে। ধর্ম রক্ষায় প্রতিটি হিন্দু মহিলার উচিত চারটি করে সন্তানের জন্ম দেওয়া। তাদের এক জনকে তুলে দিতে হবে সেনাবাহিনীর হাতে। আর এক জনকে সন্ত সমাজের কাছে।”

এর আগে প্রকাশ্যে সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করেও সংসদে দাঁড়িয়ে সাক্ষী বলেছিলেন, কই বলিনি তো! এই দফায় কিন্তু ভিডিও ক্যামেরায় ধরা পড়েছে তাঁর ওই বিতর্কিত বক্তৃতা। তা নিয়ে ফের মোদী সরকারকে চেপে ধরতে চাইছেন বিরোধীরা। কংগ্রেসের মতে, এটা শুধু সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়ানো নয়, মহিলাদের প্রতি ঘোর অপমান। দল ও সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে সমালোচনার ঝড় ওঠার আঁচ পেয়ে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ তড়িঘড়ি সতর্ক করে দিয়েছেন মহরাজকে। যদিও প্রকাশ্যে বিষয়টিকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ারই চেষ্টা করেছেন তিনি। ভুবনেশ্বরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে তিনি এ দিন বলেন, “ওই মন্তব্য সাক্ষী মহারাজের ব্যক্তিগত মত।” দলের তরফে সাক্ষী-সহ সব সাংসদকে সরকারের কাজকর্ম সাফল্য প্রচারে মন দিতে বলা হয়েছে।

ঘটনা হল, মোদী নিজে এটা বারবারই বলছেন। উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সংস্কারের দাওয়াই দিয়ে আধুনিক ভারত গড়ার স্বপ্ন দেখাতে চাইছেন তিনি। কিন্তু দলেরই সাধ্বী-মহারাজরা একের পর এক বল্গাহীন বেমক্কা সব মন্তব্য করে চলেছেন। এর জেরেই গত শীত অধিবেশনে সংসদ অচল করে রেখেছিলেন বিরোধীরা। ধাক্কা খেয়েছে সরকারের সংস্কার কর্মসূচি। মোদী কখনও সাধ্বীকে ক্ষমা চাইতে বলেছেন, কখনও নিজেই দুঃখপ্রকাশ করেছেন সংসদে। ধর্মান্তরণ-সহ সঙ্ঘ পরিবারের বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে দলে ও সঙ্ঘ-নেতাদের কাছে খেদ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্নে বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না সরকারে! গত সাত মাসে এমন শতাধিক নজির ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে রাজ্যে রাজ্যে!

বিজেপি ও সঙ্ঘ নেতৃত্ব দাবি করছেন, এমন নয় যে হিন্দুত্বের অ্যাজেন্ডা নিয়ে এটা দলের কোনও কৌশলের অঙ্গ। আসলে এঁরা সব এক একটা দিশাচ্যুত বাণ (মিস-গাইডেড মিসাইল)। সবাইকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। আঙুলের ফাঁক গলে বেরিয়ে পড়ছে। তাতে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে দল ও সরকারকে।

তা বলে বিরোধীরা ছেড়ে দেবে কেন! কংগ্রেস মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি আজ বলেন, “উন্নয়নের কথা স্রেফ বুজরুকি। এটা বিজেপির আসল চেহারা। পরের ভোটে ওদের স্লোগান হবে, আবকি বার / বাচ্চে চার!” তাঁর কটাক্ষ, সারা দুনিয়ার সমস্যা নিয়ে যিনি ঘনঘন কথা বলেন, সেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একটা টুইটও করেননি এ নিয়ে। যার একটাই অর্থ, বিজেপি আসলে দলের সাংসদদের দিয়ে বিভাজনের বিষ ছড়াচ্ছে।

কংগ্রেসের আরও বক্তব্য, সাক্ষীর মন্তব্য থেকে বোঝা যাচ্ছে, মহিলাদের কেবল সন্তান প্রসবের যন্ত্র বলে মনে করে বিজেপি। যেন সমাজে তাদের আর কোনও অবদান বা ভূমিকা নেই!

sakshi maharaj four children controversy centre modi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy