Advertisement
E-Paper

লকভির জামিনে ক্ষুব্ধ মোদী সরব সংসদে

জাকিউর রহমান লকভির জামিন পাওয়ার ঘটনায় পাক সরকারের নিন্দায় সরব হল গোটা সংসদ। মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রীও। নরেন্দ্র মোদী আজ সংসদে বলেন, “যাঁরা মানবতায় বিশ্বাস করেন তাঁদের জন্য এটা একটা বড় ধাক্কা।” ভারত যে গোটা বিষয়টিতে ক্ষুব্ধ ইতিমধ্যেই তা পাকিস্তানকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। লকভি প্রশ্নে পাক সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করে একটি সর্বসম্মত প্রস্তাবও আজ পাশ হয়েছে লোকসভায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৫৪
জাকিউর রহমান লকভি

জাকিউর রহমান লকভি

জাকিউর রহমান লকভির জামিন পাওয়ার ঘটনায় পাক সরকারের নিন্দায় সরব হল গোটা সংসদ। মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রীও। নরেন্দ্র মোদী আজ সংসদে বলেন, “যাঁরা মানবতায় বিশ্বাস করেন তাঁদের জন্য এটা একটা বড় ধাক্কা।” ভারত যে গোটা বিষয়টিতে ক্ষুব্ধ ইতিমধ্যেই তা পাকিস্তানকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। লকভি প্রশ্নে পাক সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করে একটি সর্বসম্মত প্রস্তাবও আজ পাশ হয়েছে লোকসভায়।

মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী লকভির জামিনের খবর জানাজানি হওয়ায় আন্তর্জাতিক মহলেও পাক সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে। তাই দেরিতে হলেও আজ মুখ রক্ষা করতে তৎপর হয় শরিফ সরকার। লকভির জামিনে যে সরকারেরই মুখ পুড়ছে, তা বুঝতে পেরে আজ আইন-শৃঙ্খলার প্রশ্নে আরও তিন মাস তাকে আটকে রাখার সিদ্ধান্ত নেন শরিফ। গত পরশু ইসলামাবাদের সন্ত্রাসবিরোধী আদালতে জামিনের আর্জি জানায় লকভি। তার এক দিনের মাথায় তার আর্জি মঞ্জুরও করে দেয় পাক আদালত। তার পরেই পাক সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশ আসার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে প্রচণ্ড উদ্বিগ্ন ছিল শরিফ সরকার। প্রধানমন্ত্রীর কাছে সে খবর পৌঁছনোর পর পরই তিনি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষার প্রশ্নে লকভিকে আটকে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। সেই মতো জেল কর্তৃপক্ষের কাছে আজ ভোর ভোর সেই খবর পৌঁছে দেওয়া হয়। জামিনে ছাড়া পেয়ে লকভি যাতে গা ঢাকা দিতে না পারে, তাই এই তৎপরতা বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে। সরকারি কৌঁসুলি চৌধুরি আজহার জানান, সন্ত্রাসবিরোধী আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিল পাক সরকার। আগামী সোমবার এ নিয়ে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে আর্জি জানাতে চলেছে সরকার। মুম্বই হামলায় অভিযুক্ত লকভিকে ২০০৯ সালে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তার পর থেকে এখনও পর্যন্ত ৪৬ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। আজহারের কথায়, “এখনও পর্যন্ত এই মামলায় ১৫ জনের সাক্ষ্য নেওয়া বাকি রয়েছে। তার আগেই আদালত কেন লকভিকে জামিন দিল, সেটাই সরকার বুঝতে পারছে না।” সরকারি কৌঁসুলি আরও জানিয়েছেন, ইসলামাবাদের এই সিদ্ধান্তের কথা ইতিমধ্যে নয়াদিল্লিকে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে।

তবে তাতে অবশ্য চিঁড়ে বিশেষ ভিজছে না। লকভির জামিনের সিদ্ধান্ত ভারত যে ভাল চোখে দেখেনি, তা আজ সংসদেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “স্কুলে গণহত্যার ঘটনায় পাকিস্তানের মানুষ যতটা দুঃখ পেয়েছিলেন, ঠিক ততটাই বেদনা কিন্তু ভারতীয়রাও অনুভব করেছেন। প্রত্যেক ভারতবাসীর চোখে জল এসে গিয়েছিল সে দিন। কিন্তু তার পরেই পাকিস্তান যে মনোভাব দেখিয়েছে তা মানবতার পক্ষে একটা বড় আঘাত।” গত কালই পাকিস্তানের হাই কমিশনারকে ডেকে এ বিষয়ে ভারতের কড়া মনোভাব বুঝিয়ে দিয়েছিলেন বিদেশ মন্ত্রকের কর্তারা। আপাতত ইসলামাবাদ পরবর্তী কী পদক্ষেপ করে, তা দেখেই ভবিষ্যতের রণকৌশল নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সাউথ ব্লক। আজ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “আগামী সোমবার এ বিষয়ে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ সংসদকে বিস্তারিত জানাবেন।”

কেন হঠাৎ জামিন পেল লকভি?

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একাংশের ব্যাখ্যা, পাকিস্তানের সব চেয়ে বড় শত্রু তেহরিক-ই-তালিবান গোষ্ঠী। তিন দিন আগে এরাই পেশোয়ারের স্কুলে হত্যালীলা চালিয়েছিল। নীতিগত ভাবে এদের সঙ্গে মতপার্থক্য রয়েছে লস্কর-ই-তইবা প্রধান হাফিজ সইদ এবং জাকিউর রহমান লকভির। ফলে কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার রণনীতি মেনেই লকভির প্রতি নরম মনোভাব দেখানো হয়েছে বলে মনে করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তাদের মতে, সম্ভবত তেহরিক-ই-তালিবানের বিরুদ্ধে লড়াইতে লস্করকে ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে পাক প্রশাসনের একাংশের। আর তাই লকভিকে ছাড়ার সিদ্ধান্তটা নেওয়া হয়।

কিন্তু ওই রণকৌশল পাকিস্তানের জন্যই ব্যুমেরাং হতে পারে বলে মনে করছে ভারত। আজ সংসদে সর্বদলীয় প্রস্তাবে বলা হয়েছে, পেশোয়ারের ঘটনার পরেও পাকিস্তান বুঝতে পারছে না যে, জঙ্গিদের সঙ্গে কোনও ভাবেই সমঝোতা করা যায় না। সর্বদলীয় ওই প্রস্তাবে পাকিস্তানকে তাদের দেশ থেকে জঙ্গি পরিকাঠামো সম্পূর্ণ ধ্বংস করার অনুরোধও করা হয়েছে।

লকভি জামিন পাওয়ায় ভারতের পাশাপাশি প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে পাকিস্তানের সোশ্যাল মিডিয়াতেও। ঘরে-বাইরে প্রবল চাপের মুখে পড়েই পাক সরকার লকভিকে আটকে রাখার সিদ্ধান্ত নিতে কার্যত বাধ্য হয়েছে বলে মনে করছে ভারত।a

Zaki ur Rehman Lakhvi pakistan india
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy