Advertisement
E-Paper

লঙ্কাকাণ্ডে হত ২, উধাও ১৫

পুলিশ ও কারারক্ষীদের চোখে লঙ্কার গুঁড়ো ছিটিয়ে চাইবাসার জেল চত্বর থেকে পালাল ১৫ জন বিচারাধীন বন্দি। তবে পালানোর মুখে পুলিশ ও কারারক্ষীদের গুলিতে নিহত হয়েছে দুই বন্দি। গুলিতে গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও তিন জন। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে এক মাওবাদী জঙ্গিও রয়েছে। এই ঘটনায় রাজ্য প্রশাসন চাইবাসা জেলের ১৪ জন কারাকর্মীকে সাসপেন্ড করেছে।

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৪:০০
জেল চত্বরে পড়ে রয়েছে দুই বন্দির দেহ। ছবি: পার্থ চক্রবর্তী

জেল চত্বরে পড়ে রয়েছে দুই বন্দির দেহ। ছবি: পার্থ চক্রবর্তী

পুলিশ ও কারারক্ষীদের চোখে লঙ্কার গুঁড়ো ছিটিয়ে চাইবাসার জেল চত্বর থেকে পালাল ১৫ জন বিচারাধীন বন্দি। তবে পালানোর মুখে পুলিশ ও কারারক্ষীদের গুলিতে নিহত হয়েছে দুই বন্দি। গুলিতে গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও তিন জন। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে এক মাওবাদী জঙ্গিও রয়েছে। এই ঘটনায় রাজ্য প্রশাসন চাইবাসা জেলের ১৪ জন কারাকর্মীকে সাসপেন্ড করেছে।

আজ সকালে চাইবাসা জেল থেকে ৫৪ জন বিচারাধীন বন্দিকে সাত-আট কিলোমিটার দূরে, আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। বিকেল চারটে নাগাদ তাদের ফিরিয়ে আনা হয় জেল চত্বরে। জেলের প্রথম, বড় গেট দিয়ে বন্দিদের নিয়ে প্রিজন ভ্যান দু’টি জেল চত্বরে এসে দাঁড়ায়। এখানেই ভ্যান থেকে নামিয়ে ছোট একটি গেট দিয়ে বন্দিদের মূল জেলে ঢোকানো হয়। আজও সেই ভাবেই বন্দিদের জেলে ঢোকানো হচ্ছিল। আচমকাই এক বন্দি তার টিফিন বাক্স খুলে আশপাশের পুলিশ-কারারক্ষীদের চোখে লঙ্কার গুঁড়ো ছিটিয়ে দেয়। তাঁরা যখন চোখ নিয়ে ব্যস্ত, সেই সুযোগে জনা কুড়ি বন্দি খোলা প্রধান ফটকের দিকে দৌড় মারে। অন্য কারারক্ষী ও পুলিশকর্মীরা ঘটনার গুরুত্ব বুঝে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালান। গুলিতে পাঁচ বন্দি জেল চত্বরেই ছিটকে পড়ে। বাকি ১৫ জন তত ক্ষণে মূল ফটক পেরিয়ে গিয়েছে।

চাইবাসা শহরের মধ্যেই জেল। আদালতও শহরের কেন্দ্রেই। এই পরিবেশে বন্দিরা যে জেল পালানোর চেষ্টা করতে পারে তা পুলিশ বা কারারক্ষীদের কখনও মনেই হয়নি বলে স্বীকার করেছেন কারা দফতরের এক পদস্থ কর্তা। ঘটনার আকস্মিকতায় তাঁরা হতবাক। তবে তাঁরা নিশ্চিত, এই পরিকল্পনার পিছনে মাওবাদীদের মদত রয়েছে। ফেরার বন্দিদের মধ্যে কত জন মাওবাদী তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের একাংশের মতে, সাধারণ বন্দিরা এই ধরনের দুঃসাহস দেখাবে না। একমাত্র মাওবাদীরাই এই ধরনের ঘটনা ঘটানোর সাহস রাখে।

পুলিশ জানিয়েছে, নিহত দুই বন্দিকে শনাক্ত করা হয়েছে। এক জনের নাম টিপা দাস। টিপা চাইবাসার ছোটানাগরা এলাকার মাওবাদী জঙ্গি বলে জানিয়েছে পুলিশ। অন্য জনের নাম রামবিলাস তাঁতি। তার পরিচয় সম্পর্কে খবর নিচ্ছে পুলিশ।

তদন্তে নেমে বেশ কয়েকটি প্রশ্নের জবাব খুঁজছে পুলিশ। যেমন, বন্দিদের হাতে লঙ্কাগুঁড়ো ভর্তি টিফিন বাক্সটি কী ভাবে এল? বন্দিদের যখন জেলের মূল অংশ থেকে বের করে এনে জেল চত্বরে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়, বা আদালত থেকে ফিরে এসে তাদের নামানো হয় তখন প্রধান ফটক বন্ধ রাখাই নিয়ম। এ ক্ষেত্রে গেটটি খোলা থাকে কী করে? কারা দফতরের এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, এই প্রশ্নটি তাঁদেরও মনেও জেগেছে।

পুলিশের দিকেও কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। কারণ আদালতে নিয়ে যাওয়া ও ফিরিয়ে আনার এই পর্বে নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকে পুলিশের হাতে। অভিযোগ, আদালত থেকে প্রিজন ভ্যানে ওঠার ফাঁকেই লঙ্কাগুঁড়ো ভর্তি টিফিন বাক্সটি এক বন্দির হাতে আসে। অনেক ক্ষেত্রেই বন্দিদের পরিবার তাদের হাতে খাবার দেয়। সেটা পুলিশ মেনে নেয়। তবে সে ক্ষেত্রে পুলিশ পরীক্ষা করে দেখে। এ ক্ষেত্রে তেমন করা হয়নি।

prabal gangyopadhyay chaibasa jail prisoners fled
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy