Advertisement
E-Paper

সাত দিনেই স্বৈরতন্ত্রের ঝোঁক দেখছে কংগ্রেস

এক ব্যক্তির হাতে সব ক্ষমতা চলে যাওয়ার জুজু ভোট প্রচারেও দেখাতে চেয়েছিল কংগ্রেস। ভোটে তার ফল হয়েছে উল্টো। তবু মোদী সরকারের সাত দিনের গতিপ্রকৃতি দেখেই নতুন করে সেই প্রসঙ্গ সামনে আনতে চাইছেন কংগ্রেস নেতারা। মোদী সরকার সম্পর্কে মানুষের মনে আশঙ্কা গেঁথে দিতে তাঁদের প্রশ্ন, তা হলে কি দেশ স্বৈরাচারী শাসনের পথে যাচ্ছে? দলীয় সূত্রের খবর, হাইকম্যান্ডের নির্দেশেই কংগ্রেস মুখপাত্র আজ মুখ খোলেন মোদী সরকারের কাজকর্মের সমালোচনায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৪ ০৩:১১

এক ব্যক্তির হাতে সব ক্ষমতা চলে যাওয়ার জুজু ভোট প্রচারেও দেখাতে চেয়েছিল কংগ্রেস। ভোটে তার ফল হয়েছে উল্টো। তবু মোদী সরকারের সাত দিনের গতিপ্রকৃতি দেখেই নতুন করে সেই প্রসঙ্গ সামনে আনতে চাইছেন কংগ্রেস নেতারা। মোদী সরকার সম্পর্কে মানুষের মনে আশঙ্কা গেঁথে দিতে তাঁদের প্রশ্ন, তা হলে কি দেশ স্বৈরাচারী শাসনের পথে যাচ্ছে? দলীয় সূত্রের খবর, হাইকম্যান্ডের নির্দেশেই কংগ্রেস মুখপাত্র আজ মুখ খোলেন মোদী সরকারের কাজকর্মের সমালোচনায়।

এ ব্যাপারে কংগ্রেসের টেবিলে আপাতত রয়েছে দু’টি বিষয়। এক, অবসরপ্রাপ্ত আমলা নৃপেন্দ্র মিশ্রকে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি হিসেবে নিয়োগের জন্য অর্ডিন্যান্স জারি করা। কংগ্রেসের মতে, যা অনৈতিক কাজ। দুই, মনমোহন সিংহের জমানায় গঠিত ৩০টি মন্ত্রিগোষ্ঠী ভেঙে দেওয়া।

এই দুই ক্ষেত্রেই সরকারের তরফে অবশ্য যুক্তি রয়েছে। নৃপেন্দ্র মিশ্রকে নিয়োগের ক্ষেত্রে তাঁর যোগ্যতা ও পারদর্শিতাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। আর মন্ত্রিগোষ্ঠী ভেঙে দেওয়া নিয়ে সরকারের বক্তব্য, সিদ্ধান্ত রূপায়ণের গতি বাড়াতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এতে মন্ত্রীদের দায়বদ্ধতাও বাড়বে।

যদিও কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করতে গিয়ে দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা আজ বলেন, “যে ভাবে অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়েছে তা নীতিবিরুদ্ধ।” অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানায় টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি (ট্রাই) গড়ার সময়ই এই প্রতিষ্ঠানটির গঠনতন্ত্র নিয়ে আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, ট্রাই চেয়ারম্যান পদে যাঁকে নিয়োগ করা হবে, তিনি পরবর্তী কালে কোনও সরকারি পদ গ্রহণ করতে পারবেন না। এই কথা উল্লেখ করে কংগ্রেস মুখপাত্র বলেন, “স্বার্থের কোনও সংঘাত যাতে না হয়, সে জন্যই আইনে এই ধারা রাখা হয়েছিল। কিন্তু দেখা গেল, প্রধানমন্ত্রী বেপরোয়া। নিজের প্রয়োজনে তিনি আইনও ভেঙে দিতে পারেন।” নৃপেন্দ্রর নিয়োগ নিয়ে সুরজেওয়ালা এই প্রশ্নও তোলেন যে, দেশে কি আর কোনও যোগ্য ব্যক্তি নেই!

মন্ত্রিগোষ্ঠী ভেঙে দেওয়া নিয়ে কংগ্রেসের বক্তব্য, নব্বইয়ের দশকে নরসিংহ রাও সরকার ও পরে বাজপেয়ীর আমলে বিভিন্ন বিষয়ে বহু মন্ত্রিগোষ্ঠী তৈরি হয়েছিল। তার কারণ ছিল বিবিধ। এক, নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন মন্ত্রকের মধ্যে মতের বিরোধ কমিয়ে আনা। দুই, প্রস্তাবিত কোনও নীতি চূড়ান্ত করার আগে মেজেঘষে সেটিকে যথাসম্ভব ত্রুটিমুক্ত করা। কিন্তু কেন্দ্রের নতুন সরকার মন্ত্রিগোষ্ঠীগুলি ভেঙে দেওয়ার পরে প্রশ্ন উঠছে, নীতি নির্ধারণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কি কেবল এক জন ব্যক্তির মেধা ও বুদ্ধিমত্তার ওপরেই ভরসা করছে সরকার? এটা কি মন্ত্রিসভার সামগ্রিক দায়বদ্ধতা থেকে বিচ্যুতি নয়? এই প্রশ্নগুলিকে সামনে রেখে সুরজেওয়ালা বলেন, “এখনই এ ব্যাপারে কোনও মত কংগ্রেস দিচ্ছে না। কিন্তু দেশকে সতর্ক করাও গঠনমূলক বিরোধিতার মধ্যে পড়ে।”

লোকসভা ভোটে বেনজির ভাবে হেরে কংগ্রেস এখন এতটাই বিধ্বস্ত যে, কার্যত মোদী সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খোলার মতো অবস্থায়ও নেই তারা। তা ছাড়া, মাত্র সাত দিন হয়েছে নতুন সরকারের। এখনই তার সমালোচনায় খুব বেশি সরব হলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কাও রয়েছে। মানুষের মনে হতে পারে, ক্ষমতা খুইয়ে কংগ্রেস এই ক’দিনেই অসহিষ্ণু হয়ে পড়েছে। এই সব কারণে এখনই সরকারের বিরুদ্ধে তেড়েফুঁড়ে নামার ব্যাপারে দ্বিধাও রয়েছে কংগ্রেসে। তবে দলীয় সূত্র বলছে, হাইকম্যান্ডের নির্দেশ গঠনমূলক বিরোধিতা করে যেতে হবে। মূলত সেই কারণেই, মৃদু ভাবে হলেও কয়েকটি প্রশ্নকে সামনে রেখে মোদী সরকারের সমালোচনা শুরু করে দিল কংগ্রেস।

autocracy nda congress bjp
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy