নতুন বছরের গোড়া থেকেই সংস্কারের ঝোড়ো ইনিংস শুরু করতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
গত পাঁচ দিনে তিনটি বড় সংস্কারের সিদ্ধান্ত অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে নিয়ে এসেছে মোদী সরকার। আগামী ক’দিনে এমন আরও কিছু অর্ডিন্যান্স নিয়ে আসতে চলেছে কেন্দ্র। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্যসভায় বিরোধীদের চাপের জন্য সংস্কারের কাজ আটকে থাকতে পারে না। তাই সংসদে হইচইয়ের জেরে সংস্কারের যে সব বিল আটকে গিয়েছে, সেগুলি দ্রুত অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে আইনে পরিণত করতে হবে।
সংসদের পরের অধিবেশনে লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে বিলগুলি পাশ করাতে চাইবে সরকার। ফের যদি এগুলি রাজ্যসভায় আটকে যায়, তা হলে সংসদের যৌথ অধিবেশন ডেকে একসঙ্গে সবক’টি বিল পাশ করানোর চেষ্টা করা হবে।
গত সপ্তাহে বিমা ও কয়লা বিল অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে নিয়ে আসার পর আজ শিল্পমহলের বহু দিনের চাহিদা মেনে জমি বিলটিরও অর্ডিন্যান্স নিয়ে এসেছে সরকার। অর্থ মন্ত্রকের সূত্রের মতে, এর পরে খনিজ সম্পদ বন্টন ও কর্পোরেট বিবাদ মেটানো সংক্রান্ত অর্ডিন্যান্স আনা হবে।
আজ প্রধানমন্ত্রী ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র ওয়ার্কশপে বলেন, “গোটা সরকারিতন্ত্র এখন চাঙ্গা হয়ে গিয়েছে। আইন পরিবর্তন করে সংস্কারের প্রক্রিয়াকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই আমরা।” তাঁর মন্তব্য, সরকারি সংস্কৃতির ‘এবিসিডি’ (এ- অ্যাভয়ড অর্থাৎ এড়িয়ে যাওয়া, বি- বাইপাস অর্থাৎ পাশ কাটানো, সি- কনফিউজ অর্থাৎ বিভ্রান্তি, ডি- ডিলে অর্থাৎ দেরি করা) বদলে দিতে চেয়েছি, যাতে দায়িত্ব ও শৃঙ্খলার পথ ধরে সাফল্য অর্জন করা যেতে পারে।” কাজের সংস্কৃতিকে তিনি ‘এবিসিডি’ থেকে ‘রোড’ বা ‘আরওএডি’ (আর- রেসপনসিবিলিটি- দায়িত্ব, ও- ওনারশিপ- মালিকানার নিয়ন্ত্রণ , এ- অ্যাকাউন্টিবিলিটি- দায়বদ্ধতা, ডি- ডিসিপ্লিন অর্থাৎ শৃঙ্খলা)-তে নিয়ে যেতে চান বলেই জানিয়েছেন মোদী।
মন্ত্রিসভার এক সদস্য বলেন, “লোকসভা নির্বাচনের সময় দেওয়া মোদীর প্রতিশ্রুতি যাতে পালন করা সম্ভব না হয়, সে জন্যই বিরোধীরা বিলগুলি দেরি করিয়ে দিতে চাইছে। কিন্তু এই প্রচেষ্টা সফল হবে না। সংস্কারের বিষয়ে এসপার-ওসপারের লড়াইয়ে নেমেছেন প্রধানমন্ত্রী।” প্রধানমন্ত্রী আজ একশোটি স্মার্ট সিটি নিয়ে বেঙ্কাইয়া নায়ডুকে দ্রুত এগোতে বলেন। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন মোদী।
কয়লা বিল নিয়ে অর্ডিন্যান্স এনে জেটলি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো বিরোধীদের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন। বোঝাতে চেয়েছিলেন, যাঁরা এর বিরোধিতা করবেন, তাঁরা উন্নয়নের বিরোধী বলে প্রচার করা হবে। আজ প্রধানমন্ত্রীও দেশের পূর্ব প্রান্তে খনিজ সম্পদের যথাযথ ব্যবহারের উপর জোর দেন।
তবু সরকার জানে, অর্ডিন্যান্সের ভিত্তিতে কতটা বিনিয়োগ করা যেতে পারে, সে প্রশ্ন ও আশঙ্কা শিল্পমহলের ভিতরে এখনও রয়েছে। একে দূর করার চেষ্টা করছে সরকার। শিল্পমহলকে বোঝানো হচ্ছে, রাজ্যসভার ‘কাঁটা’ আর থাকছেই না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy