Advertisement
E-Paper

সভাপতি বাছতে ফাঁকা ব্যালট যুব কংগ্রেসের

রাজ্যে বিরোধী শিবিরে থাকাকালীন সংগঠনের অন্দরে সংস্কার প্রক্রিয়ায় হাত দিয়েছে সিপিএম। দেশে ক্ষমতার বাইরে চলে গিয়ে কংগ্রেসে গণতন্ত্র আমদানি করতে একই ভাবে সক্রিয় হয়েছেন রাহুল গাঁধীও। নেতাদের চমকে দিয়ে এ বার যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি বেছে নেওয়ার জন্য গোপন ব্যালটে ভোট সেরে নেওয়া হয়েছে একেবারে নিঃশব্দে! লোকসভা ভোটে দলের প্রার্থী বাছাই করার জন্য এ বার কিছু আসনে পরীক্ষামূলক ভাবে আমেরিকার ‘প্রাইমারি’র ধাঁচে সাংগঠনিক নির্বাচন করাতে চেয়েছিলেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৩২

রাজ্যে বিরোধী শিবিরে থাকাকালীন সংগঠনের অন্দরে সংস্কার প্রক্রিয়ায় হাত দিয়েছে সিপিএম। দেশে ক্ষমতার বাইরে চলে গিয়ে কংগ্রেসে গণতন্ত্র আমদানি করতে একই ভাবে সক্রিয় হয়েছেন রাহুল গাঁধীও। নেতাদের চমকে দিয়ে এ বার যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি বেছে নেওয়ার জন্য গোপন ব্যালটে ভোট সেরে নেওয়া হয়েছে একেবারে নিঃশব্দে!

লোকসভা ভোটে দলের প্রার্থী বাছাই করার জন্য এ বার কিছু আসনে পরীক্ষামূলক ভাবে আমেরিকার ‘প্রাইমারি’র ধাঁচে সাংগঠনিক নির্বাচন করাতে চেয়েছিলেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল। সেই পরীক্ষা খুব সফল হয়েছিল, এমন বলা যাবে না। সাংগঠনিক নির্বাচনের তালিকায় উত্তর কলকাতা কেন্দ্রের নাম থাকলেও সেই আসনে সর্বসম্মত প্রার্থী হিসাবে সোমেন মিত্রের নামই সুপারিশ করেছিল বাংলার কংগ্রেস। লোকসভা ভোটের ফলেও গোটা দেশে প্রায় ধুয়েমুছে গিয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু নির্বাচনের ধাক্কায় না দমে সংগঠনের অন্দরে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চালু করতে এখনও মরিয়া রাহুল। যার ইঙ্গিত মিলছে যুব কংগ্রেসের সভাপতি পদের জন্য নির্বাচনের প্রক্রিয়ায়। কংগ্রেসের একাংশ রাহুলের এমন উদ্যোগে খুশি। আবার অন্য একাংশের মতে, এ সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে গিয়ে দলের মধ্যেই কাজিয়া বাড়ছে। বাইরে সে ভাবে আন্দোলন আর দানা বাঁধছে না!

যুব কংগ্রেস সূত্রের খবর, সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি রাজীব শতভও এ বার জানতেন না হঠাৎ নির্বাচনের মুখোমুখি হতে হবে! সংগঠনের জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছিল দিল্লিতে। যুব কংগ্রেসের সব রাজ্যের সভাপতিরাই স্বাভাবিক ভাবে সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সেই বৈঠকেই প্রায় আচমকা ব্যালট পেপার ধরিয়ে দেওয়া হয় যুব কংগ্রেসের পদাধিকারীদের হাতে! সর্বভারতীয় সভাপতি পদের জন্য পাঁচটি নাম বেছে নিতে বলা হয় সেই ব্যালটে। দলের এক যুব নেতার কথায়, “নামের কোনও প্যানেল দিয়ে যে ভাবে ভোট দিতে বলা হয়, এখানে কিন্তু সেই রকম ব্যবস্থা ছিল না। প্রত্যেককে পাঁচটি নাম বেছে দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। চাইলে কেউ নিজের নামও প্রস্তাব করতে পারেন!”

গোপন ব্যালটের ফলাফল এখনও প্রকাশিত নয়। যুব কংগ্রেস এবং তার দায়িত্বপ্রাপ্ত নানা স্তরের নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা চালাচ্ছেন রাহুল। যুব কংগ্রেস সূত্রের ইঙ্গিত, আর দিন দশেকের মধ্যে ভোটের নির্যাস সামনে চলে আসবে। তার পরেই সংগঠনের পরবর্তী পরিকল্পনা ঠিক হবে। যুব কংগ্রেসের এক সর্বভারতীয় নেতার বক্তব্য, “নতুন কিছু চালু করতে গেলে কিছু সমস্যা হয়ই। নির্বাচনের ব্যবস্থা মেনে নিতেও কোথাও হয়তো সমস্যা হবে। তবে শীর্ষ নেতৃত্বের পছন্দের কাউকে মনোনয়নের চেয়ে নির্বাচন করানো তো ভাল!” অতীতে কংগ্রেসের পদাধিকারীর নির্বাচনকে ঘিরে তুলকালামের ইতিহাস আছে কংগ্রেসে। অনতি অতীতে এ রাজ্যে যুব কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনকে ঘিরেই রণক্ষেত্র হয়েছিল কলকাতার নজরুল মঞ্চ। সেই দিক থেকে রাহুলের এ বারের পরীক্ষা প্রায় নির্ঝঞ্ঝাটে উতরেছে বলতে হবে!

সর্বভারতীয় স্তরে সাংগঠনিক নির্বাচনের পর্ব মিটে যাওয়ার পরে আজ, সোমবারই সারদা-কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ চেয়ে কলকাতায় রাস্তায় নামছে রাজ্য যুব কংগ্রেস। ইতস্তত পথে নামলেও প্রদেশ কংগ্রেস অবশ্য এখনও আন্দোলন গুছিয়ে উঠতে পারেনি। নেতৃত্ব নিয়ে প্রদেশ স্তরের কাজিয়া বরং দিনে দিনে বড় আকার নিচ্ছে! কাল, মঙ্গলবারই দিল্লিতে প্রদেশ নেতাদের সঙ্গে দ্বিতীয় দফার আলোচনায় বসবেন রাহুল। প্রদেশ নেতারা সেখানে রাহুলের কাছে ‘ভিশন ডকুমেন্ট’ জমা দেবেন। প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরীর নেতৃত্ব নিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁদের অনেকেই। পরবর্তী কালে প্রদেশ সভাপতি বাছার জন্যও কি যুব কংগ্রেসের মতো ফাঁকা ব্যালট দেওয়া যেতে পারে? প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতার জবাব, “তা হলে প্রত্যেকে এক জন করে আলাদা সভাপতি বাছবেন!”

rahul gandhi sandipan chakrabarty national president of youth congress rajiv satav
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy