ফাইল চিত্র
যে শহরে আমি বসবাস করি সেই উপসালা সুইডেনের অন্যতম প্রাচীন শহর। রাজধানী স্টকহলম থেকে ৭১ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত দেশের চতুর্থ বৃহত্তম শহর এবং লোকসংখ্যা ১ লক্ষ ৭০ হাজার। শুধু তাই নয়, এই শহরে সমগ্র স্ক্যানডেনেভিয়ান অঞ্চলের (সুইডেন, ডেনমার্ক ও নরওয়ে) প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় উপসালা ইউনিভার্সিটি ও সব চেয়ে বড় গির্জাও রয়েছে।
এখন পৃথিবীর সব দেশই নানা ভাবে নোভেল করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯-কে নিয়ন্ত্রণ করার সার্বিক চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু সুইডেনের জনস্বাস্থ্য বিভাগের কাজ করার পদ্ধতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। যেখানে আমরা চতুর্দিক থেকে শুনছি লকডাউন এবং সম্পূর্ণ যাতায়াতে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে, সেখানে সুইডেনের সরকার ও জনস্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশে খুবই কম নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। সাধারণ ভাবে নির্দেশ দেওয়া আছে, বারবার হাত ধুতে হবে ও পারস্পরিক দুরত্ব বজায় রেখে চলতে হবে। শপিং মলে দোকান খোলা। তবে সিনেমা হল বন্ধ। রেস্তরাঁ বা কাফে কখনওই বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়নি। প্রথমে বলা হয়েছিল ৫০০ জনের বেশি জমায়েত করা যাবে না। পরে অবশ্য জমায়েতের সংখ্যা কমিয়ে ৫০ করা হয়।
উপসালাতে দু’টি বিশ্ববিদ্যালয় আছে— উপসালা ইউনিভার্সিটি ও সুইডিশ ইউনিভার্সিটি অব এগ্রিকালচারাল সায়েন্সেস। তাই এই শহরে ছাত্রছাত্রীদেরই সংখ্যা বেশি। ইউনিভার্সিটি ও হাইস্কুল ছুটি দিয়ে অনলাইনে পড়াশোনা চালালেও ছোট বাচ্চাদের সমস্ত স্কুল খোলা। এর কারণ হল বাচ্চারা বাড়ি না থাকলে মা-বাবারা যাঁরা জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত তাঁরা কাজে যোগ দিতে পারবেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলির বিভিন্ন বিভাগ গবেষণার জন্য খোলা আছে, যদিও ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোমের’ সুবিধাও রয়েছে।
এখানে শুধু বয়স্ক এবং অসুস্থ্ ব্যক্তিদেরই করোনার পরীক্ষা করা হচ্ছে। অল্পবয়সিদের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে যে অল্প বিস্তর সংক্রমণ থাকলে বাড়িতে থাকতে হবে এবং সামাজিক মেলামেশা বন্ধ রাখতে হবে। তা হলেই দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ কম পড়বে। যে কোনও সরকারি নীতির মতো এই নীতি বা নির্দেশিকা সবাই যে সমর্থন করছে তা নয়, কিন্তু বেশির ভাগ লোক এই বিশ্বাস রাখছে যে এ দেশে এই পদ্ধতিই কাজ করবে।
(লেখক সুইডিশ ইউনিভার্সিটি অব এগ্রিকালচারাল সায়েন্সেসের গবেষক)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy