প্রকৃতি থেকে পাওয়া উপাদানের সাহায্যে ত্বকচর্চার জনপ্রিয়তা চিরকালই রয়েছে। রাসায়নিক-সমৃদ্ধ পণ্য থেকে সরে এসে উদ্ভিজ্জ উপাদান ব্যবহার করতে পছন্দ করেন অনেকে। আর তাঁদের জন্যই নয়া পন্থার কথা বলা হচ্ছে। ত্বকের যত্নের জন্য বাঁশের অসংখ্য উপকারিতা রয়েছে। আর তাই সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং রূপচর্চার জন্য বাঁশ কার্যকরী হতে পারে।
পুষ্টিতে ভরপুর বাঁশ ত্বকের জন্য বিভিন্ন কী কী ভাবে উপকারী?
সিলিকা সমৃদ্ধ: বাঁশে উচ্চ মাত্রার সিলিকা থাকে, যা কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে, ত্বকের স্থিতিস্থাপকতাকে উন্নত করে এবং বলিরেখা কমায়।
হাইড্রেটিং এবং ময়েশ্চারাইজ়িং ক্ষমতা রয়েছে: বাঁশের নির্যাস আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে। তাই বাঁশের ব্যবহারে কোমল, নরম হয়ে উঠতে পারে ত্বক।
বার্ধক্যের ছাপ রোধ করতে পারে: অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর বাঁশ। ফ্রি র্যাডিক্যালের সঙ্গে মোকাবিলা করে অকালবার্ধক্য রোধ করতে সাহায্য করে। ফলে ত্বকে চট করে বয়সের ছাপ পড়ে না।
প্রদাহনাশী গুণ রয়েছে: বাঁশে প্রাকৃতিক প্রদাহনাশী গুণ রয়েছে, যা ব্রণের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয় এবং তা সংবেদনশীল ত্বকের জন্য উপযুক্ত।
ডিটক্সিফাইং এবং পিউরিফাইং: ত্বক থেকে বিষাক্ত পদার্থ বার করতে পারে। ত্বকের ছিদ্র খুলে দিতে পারে বলে ত্বককে উজ্জ্বল করে তোলে।
বাঁশের সাহায্যে কী ভাবে ত্বকচর্চা করবেন?
বাঁশের নির্যাস থেকে বাড়িতেই বানিয়ে নেওয়া যায় ফেস ক্লিনজ়ার, ফেস মাস্ক, টোনার, স্ক্রাব, লিপ বাম। তবে বাংলায় কোন কোন জিনিস সহজলভ্য, সে কথা ভেবে কেবল ফেস ক্লিনজ়ার, ফেস মাস্ক এবং স্ক্রাবের প্রস্তুতপ্রণালী দেওয়া হল।
১. মৃদু এক্সফোলিয়েশনের জন্য বাঁশের ফেস ক্লিনজ়ার
উপকরণ:
১ টেবিল চামচ বাঁশের গুঁড়ো (মিহি করে গুঁড়ো করা বাঁশের নির্যাস)
১ টেবিল চামচ চালের গুঁড়ো
২ টেবিল চামচ গোলাপ জল
আধ চা চামচ মধু
প্রণালী
একটি পাত্রে সমস্ত উপকরণ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। ভেজা ত্বকে লাগান এবং এক মিনিটের জন্য বৃত্তাকারে হাত ঘুরিয়ে আলতো করে মাসাজ করুন। হালকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বক থেকে ময়লা এবং তেল দূর করে আর্দ্রতা ধরে রাখে। মৃদু এক্সফোলিয়েটর হিসেবে কাজ করে বলে জ্বালা হয় না ত্বকে।

বাঁশের নির্যাস থেকে বাড়িতেই বানিয়ে নেওয়া যায় ফেস ক্লিনজ়ার, ফেস মাস্ক, টোনার, স্ক্রাব, লিপ বাম। ছবি: সংগৃহীত।
২. উজ্জ্বল ত্বকের জন্য হাইড্রেটিং বাঁশের ফেস মাস্ক
উপকরণ:
১ টেবিল চামচ বাঁশের নির্যাস বা বাঁশের গুঁড়ো
২ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল
১ চা চামচ দই
কয়েক ফোঁটা রোজহিপ অয়েল (অনলাইনে সহজেই কিনতে পাওয়া যাবে। না পেলে অন্য কোনও হালকা তেলও নেওয়া যায়।)
প্রণালী
সব উপকরণ মিশিয়ে একটি মসৃণ পেস্ট তৈরি করুন। পরিষ্কার ত্বকের উপর সমান ভাবে মেখে রাখুন ১৫-২০ মিনিট মতো। ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এবং পরে হালকা ময়েশ্চারাইজ়ার লাগিয়ে নিন। এটি ত্বকের আর্দ্রতা বাড়ায় এবং জ্বালা কমায়। ত্বককে সতেজ এবং উজ্জ্বল দেখায়।
আরও পড়ুন:
৩. নরম ও মসৃণ ত্বকের জন্য বাঁশের বডি স্ক্রাব
উপকরণ:
৩ টেবিল চামচ বাঁশের গুঁড়ো
২ টেবিল চামচ ব্রাউন সুগার
৩ টেবিল চামচ নারকেল তেল
কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েল
প্রণালী
সমস্ত উপকরণ মিশিয়ে ঘন স্ক্রাবের মতো ঘনত্ব তৈরি করুন। ভেজা ত্বকে বৃত্তাকারে হাত ঘুরিয়ে আলতো করে মাসাজ করুন। গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি রুক্ষ ত্বককে মসৃণ করে এবং ত্বকের ছিদ্র খুলে দেয়। প্রাকৃতিক ভাবে ত্বককে আর্দ্র করে বলে ত্বক কোমল ও নরম করে।