মাথার ত্বক এবং চুলের স্বাস্থ্যরক্ষায় তেল মাখা, শ্যাম্পু করার নিয়মে ব্যাঘাত ঘটে না। কিন্তু ছোট ছোট ভুলের কারণে রোজের নিয়ম ফলপ্রসূ হয় না। তার মধ্যে অবশ্যই একটি হল চুল আঁচড়ানোর ব্রাশ এবং চিরুনির অপরিচ্ছন্নতা। প্রতি দিন ব্যবহারের পর ব্রাশে-চিরুনিতে আটকে থাকে ধুলো, তেল, খুশকি ও চুল। তার উপর দিয়েই রোজ আঁচড়ানোর ফলে চুলের গুণ নষ্ট হতে থাকে। তাই সপ্তাহে অন্তত এক বার ব্রাশ এবং চিরুনি পরিষ্কার করা উচিত।
অনেকেই চুল ভাল ভাবে সেট করার জন্য সরু চিরুনির বদলে মোটা ব্রাশ ব্যবহার করেন। ব্রাশের বোর্ডে যাবতীয় ময়লা জমা হতে থাকে। সময়ের অভাবে হোক অথবা সতর্ক না হওয়ার কারণে অনেকেই বিষয়টাকে আমল দেন না। দিনের পর দিনে ময়লা ব্রাশ দিয়েই চুল আঁচড়াতে থাকেন। তাই নিয়মিত ব্রাশ পরিষ্কার করতে হবে নিজের চুলের স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্যই।
কত বার পরিষ্কার করবেন
· যাঁরা প্রতি দিন ব্রাশ করেন বা হেয়ার সিরাম, স্প্রে, জেল ইত্যাদি ব্যবহার করেন, তাঁদের সপ্তাহে অন্তত এক বার ব্রাশ পরিষ্কার করা উচিত।
· চুল পাতলা হলে বা সিরাম, জেল জাতীয় দ্রব্য ব্যবহার কম হলে দু’সপ্তাহে এক বার ধুলেই যথেষ্ট। নিয়মিত পরিষ্কার রাখলে মাথার ত্বকে ময়লা জমে না এবং চুল ঝলমলে থাকে।
চিরুনি ও ব্রাশ পরিষ্কারের কৌশল। ছবি: সংগৃহীত।
কী ভাবে পরিষ্কার করবেন, তার জন্য কী কী সামগ্রী প্রয়োজন
এক বাটি হালকা গরম জল
সামান্য শ্যাম্পু
পুরনো টুথব্রাশ বা পরিষ্কার করার ছোট ব্রাশ
পরিচ্ছন্ন তোয়ালে
ধাপে ধাপে চুলের ব্রাশ পরিষ্কারের পদ্ধতি
প্রথম ধাপ: ব্রাশে আটকানো চুলগুলি আঙুল বা চিরুনি দিয়ে আলতো করে তুলে ফেলুন।
দ্বিতীয় ধাপ: হালকা গরম জলে সামান্য শ্যাম্পু মিশিয়ে গুলে নিন। সেই জলে ১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন ব্রাশটি।
তৃতীয় ধাপ: তার পর জল থেকে তুলে নিয়ে টুথব্রাশ দিয়ে ব্রাশের দাঁতের ফাঁকে ফাঁকে জমে থাকা ময়লা তুলে ফেলুন ঘষে ঘষে।
চতুর্থ ধাপ: পরিষ্কার জলে ধুয়ে নিয়ে তোয়ালের উপর উল্টো করে শুকোতে দিন। একই নিয়ম মেনে পরিষ্কার করুন চিরুনিও।
কোন ব্রাশ কী ভাবে ধোবেন
· কাঠের হ্যান্ডেলযুক্ত ব্রাশ সম্পূর্ণ জলে ডুবিয়ে রাখবেন না, এতে কাঠ ফেটে যেতে পারে। কেবল ব্রাশের মুখটিই ভিজিয়ে রাখুন।
· নাইলন বা প্লাস্টিকের ব্রাশ তুলনামূলক ভাবে সহজে ধোয়া যায়, তবে গরম জল খুব বেশি ব্যবহার না করাই ভাল। জলে বেকিং সোডা ব্যবহার করতে পারেন।
ব্রাশ ব্যবহারের পর নিয়মিত ঝেড়ে নেওয়ার অভ্যাস রাখলে পরিষ্কার করা আরও সহজ হয়।
কখন ব্রাশ বদলানো উচিত
ব্রাশের দাঁত যদি বেঁকে যায়, ভেঙে যায় বা ধোয়ার পরেও দুর্গন্ধ থেকে যায়, বুঝে নিন নতুন ব্রাশ কেনার সময় এসেছে। পুরনো ও ময়লা ব্রাশ ব্যবহার করলে চুলে জট পড়ে বেশি, মাথার ত্বকে অস্বস্তি হয়, এমনকি চুল ঝরাও বেড়ে যেতে পারে। অন্যের ব্রাশ ব্যবহার না করাই ভাল। আবার নিজের ব্রাশও অন্যকে দেওয়া উচিত নয়।
চুল সুন্দর রাখতে দামি পণ্য নয়, দরকার পরিচ্ছন্ন থাকার অভ্যাস। নিয়মিত ব্রাশ পরিষ্কার রাখলে চুল হয় হালকা, চকচকে ও সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। অতএব, নিজের সাপ্তাহিক রুটিন থেকে মাত্র ১০টি মিনিট খরচ করে ব্রাশ পরিষ্কার করুন। তাতেই চুলের স্বাস্থ্য বজায় থাকবে।