ময়েশ্চারাইজ়ার নয়, তেলের মতো পাতলাও নয়। শীতে মাখার ক্রিমের তালিকাতেও তাকে ফেলা যায় না। মাখনের মতো মোলায়েম, ঘন, ক্রিমের মতো জিনিসটি হল বডি বাটার। প্রবল শীতে, রুক্ষ আবহাওয়ায় যখন লোশন, ময়েশ্চারাইজ়ারের পক্ষে ত্বকের আর্দ্রতা বেশি ক্ষণ ধরে রাখা সম্ভব হয় না, তখন কাজ করে ‘বডি বাটার’। এতে থাকে ভিটামিন, এসেনশিয়াল অয়েল এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। গা, হাত-পায়ে মাখা যায় এটি। বিশেষত শুষ্ক কনুই, হাঁটু বা পায়ের পাতার জন্য বডি বাটার বিশেষ উপযোগী।
নাম যেমন বাটার এটি তৈরিও হয় বাটার দিয়েই। তবে খাবার মাখন নয়, শিয়া, কোকো নামক বাটার হল এর মূল উপকরণ। আফ্রিকার শিয়া গাছের ফল থেকে তৈরি হয় শিয়া বাটার। ত্বকের পরিচর্যায় এই উপকরণটি অত্যন্ত ভাল। এতে থাকে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। কোকো বীজ থেকে তৈরি হয় কোকো বাটার। বলিরেখা দূর করতে, ত্বকের জেল্লা বৃদ্ধিতে এই উপাদানটি বিশেষ কার্যকর।
উপকারিতা
আর্দ্রতা ধরে রাখে: বডি বাটারে সাধারণত শিয়া বাটার, কোকো বাটার বা আমন্ড অয়েলের মতো উপাদান থাকে। এগুলো ত্বকের গভীরে গিয়ে আর্দ্রতা জোগায়। যাদের ত্বক খুব বেশি খসখসে বা রুক্ষ, তাদের জন্য এটি বিশেষ কার্যকর।
আরও পড়ুন:
শীতের সুরক্ষা
ত্বক লোশন দ্রুত শুষে নিয়ে রুক্ষ হয়ে যায়। কিন্তু বডি বাটার ত্বকের উপর একটি আর্দ্রতার পরত তৈরি করে, যা দীর্ঘ সময় ত্বক নরম রাখে। চট করে খড়ি ফোটে না বা ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় না।
বিশেষ যত্ন
শরীরের কিছু অংশ যেমন—কনুই, হাঁটু এবং গোড়ালি খুব দ্রুত রুক্ষ হয়ে যায়। এই জায়গাগুলোতে বডি বাটার মাখলে দ্রুত খসখসে ভাব দূর হয় এবং চামড়া নরম থাকে।
ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি
পুষ্টির অভাবে ত্বক অনেক সময় নিস্তেজ দেখায়। বডি বাটারে থাকা ভিটামিন (বিশেষ করে ভিটামিন ই) ত্বককে ভিতর থেকে সুস্থ রাখে, ফলে ত্বক উজ্জ্বল ও সজীব দেখায়।
বাজারচলতি রকমারি বডি বাটারই আছে। তবে জিনিসটি কতটা খাঁটি তা নিয়ে যদি সংশয় থাকে, তা হলে ভাল মানের শিয়া, কোকো বাটার আনিয়ে বাড়িতেই তা দিয়ে বানাতে পারেন বিশেষ ক্রিম। নিয়মিত ব্যবহারে ফাটা গোড়ালি, খসখসে কনুইয়ে আসবে জেল্লা। হাত-পা দেখাবে মোমের মতো।
কী ভাবে বানাবেন?
উপকরণ
৫ টেবিল চামচ শিয়া বাটার
৫ টেবিল চামচ কোকো বাটার
২ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল অথবা হোহোবা অয়েল
২-৩টি ভিটামিন ই ক্যাপসুল
পদ্ধতি
গরম জলের উপর একটি পাত্র বসিয়ে তাতে জমাট বাঁধা শিয়া এবং কোকো বাটার নিন। তাপে মাখন নরম হয়ে গেলে তাপ থেকে সরিয়ে খুব ভাল করে ফেটাতে থাকুন, যতক্ষণ না ক্রিমের মতো হয়ে উঠছে। এতে মেশান অলিভ অয়েল বা হোহাবা অয়েল। ২-৩টি ভিটামিন ই ক্যাপসুল ফাটিয়ে তার ভিতরের তরল ঢেলে দিন। এবার মিশ্রণটি কাচের পরিষ্কার শিশি বা পাত্রে ভরে রাখুন।
পা ফাটার সমস্যা থাকলে
ঈষদুষ্ণ জলে পা ডুবিয়ে রাখুন ১০ মিনিট। পিউমিক স্টোন দিয়ে পা ঘষে পরিষ্কার করে নিন। জল মুছে বডি বাটার লাগিয়ে মোজা পরে নিন। নিয়মিত ব্যবহারে পা ফাটা কমবে।
স্নানের পরে
স্নানের পর গায়ে হালকা জল থাকা অবস্থাতেই সারা শরীরে বডি বাটার মেখে মাসাজ় করুন। নিয়ম করে মাখলে শীতেও ত্বক থাকবে নরম, সুন্দর।