অফিস ট্যুর হোক বা নিছক বেড়ানো—সফরের ক্লান্তির ছাপ পড়ে মুখেচোখেও। যে সময় নিজেকে আরও ঝকঝকে দেখাতে চাইছেন, সেই সময় যদি মুখ-চোখ কালচে দেখায়, কার ভাল লাগে? মেকআপ দিয়েও সব সময় সব খুঁত ঢাকা যায় না। তবে এক রাতের মধ্যেই মুখ-চোখের ক্লান্তি উধাও হতে পারে সহজ উপায়ে। শুধু সঙ্গে রাখুন কয়েকটি শিট মাস্ক।
জিনিসটি মুখের আকারের মতোই পাতলা-নরম কাপড়ের হয়, যা ত্বকের উপযোগী বিভিন্ন সিরামে ভেজানো অবস্থায় পাওয়া যায়। দেখতে ফেশিয়াল মাস্কের মতোই। প্যাকেটবন্দি অবস্থায় থাকে। ব্যবহারে ঝক্কি নেই। শুধু মুখ পরিষ্কার করে শিটটি চোখ, নাক, ঠোঁটের জায়গা বুঝে খাপের মতো বসিয়ে দিলেই হল। তার পর আধ ঘণ্টা গান শুনতে পারেন, বিছানায় গা এলিয়ে বিশ্রামও নিতে পারেন। শোয়ার আগে শিট মাস্কটি তুলে নিয়ে এতে থাকা তরলটি হালকা মাসাজ করে ত্বকে মিশিয়ে দিলেই হবে। রাতভর ঘুমের সময় শিট মাস্কের সিরাম বা তরল ত্বকের খেয়াল রাখবে। সকালে উঠে পাবেন ঝকঝকে মুখ, তরতাজা ত্বক।
আরও পড়ুন:
শিট মাস্কের কাজ কী?
ত্বককে ভিতর থেকে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে শিট মাস্ক।
এতে থাকা ভিটামিন, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ তরল ত্বককে পুষ্টি জোগায়।
ত্বকের কালচে ভাব দূর করে, বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে।
দ্রুত ত্বকে জেল্লা ফেরাতে সাহায্য করে।
সালোঁয় যাওয়ার বা সময় নিয়ে ফেশিয়ালের সুযোগ না থাকলে শিট মাস্ক অত্যন্ত কাজের। ছোট্ট জিনিসটি ব্যাগে ভরে ফেলা যায়। ব্যবহারবিধিও সহজ বলে এর কদর বাড়ছে।
সফরের সময় কোন ধরনের শিট মাস্ক রাখবেন সঙ্গে?
রেটিনল শিট মাস্ক: প্রসাধনীর জগতে রেটিনল এখন ভীষণ ভাবে চর্চিত। ভিটামিন এ থেকে প্রাপ্ত রেটিনল বলিরেখা কমাতে, কোষ পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করে। অক্সিডেটিভ স্ট্রেস হ্রাস করে বলিরেখা কমিয়ে দেয়। ত্বকের উন্মুক্ত রন্ধ্র সঙ্কুচিত করতে সাহায্য করে। বয়স হলে মুখে যে সব লক্ষণ স্পষ্ট হয়ে ওঠে, তা কমানোর জন্য একাই একশো রেটিনল। সঙ্গে তাই এটি রাখতেই পারেন। রাতে ব্যবহার করলে সকালে ঝকঝকে হয়ে উঠবে মুখ।
ভিটামিন সি শিট মাস্ক: ত্বককে আর্দ্র রাখতে, বলিরেখা কমাতে ভিটামিন সি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। ত্বকের কালচে ভাব বা পিগমেন্টেশন দূর হয় ভিটামিন সি-র ব্যবহারে।
ত্বকের জন্য জরুরি হল কোলাজেন নামক প্রোটিন। এই প্রোটিনের অভাব হলেই চামড়া কুঁচকে যেতে পারে। কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে ভিটামিন সি। ভিটামিন সি শিট মাস্ক রাতেেই ব্যবহার করা ভাল। দিনে ব্যবহার করে তার পর রোদে বেরোলে ত্বক কালচে হয়ে যেতে পারে।
গোল্ডেন শিট মাস্ক: ফেশিয়ালের জগতে যেমন গোল্ড ফেশিয়াল জনপ্রিয় তেমনই রয়েছে গোল্ডেন শিট মাস্ক। ত্বকে দ্রুত সালোঁর ফেশিয়ালের মতো জেল্লা আনতে এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। মুখের চামড়া টানটান এবং সুন্দর করে তুলতে এটি কার্যকর।
নায়াসিনামাইড শিট মাস্ক: মুখের কোনও অংশ একটু বেশি কালচে? মুখের ত্বকের বর্ণ অসমান হলে নায়াসিনামাইড শিট মাস্ক ভাল। দ্রুত ত্বকে জেল্লা আনতে সাহায্য করে এই মাস্ক। রাতে এটি ব্যবহার করতে পারেন। অফিস ট্যুরে গিয়ে মিটিং বা বিশেষ অনুষ্ঠান থাকলে তার আগেও এই মাস্কটি ব্যবহার করা যায়।
হায়ালুরোনিক অ্যাসিড শিট মাস্ক: ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে এই অ্যাসিড। আর্দ্রতার অভাব হলেই ত্বক রুক্ষ দেখাবে। হায়ালুরোনিক অ্যাসিডে থাকা প্রদাহনাশক উপাদান ত্বকের জ্বালাভাব কমাতে সাহায্য করে। এটি ত্বক তেলতেলে করে তোলে না, অথচ আর্দ্রতার জোগান দেয়।
পাঁচ ধরনের শিট মাস্কই ভাল। এর বাইরেও অনেক রকম শিট মাস্ক পাওয়া যায়। প্রয়োজন অনুযায়ী এর মধ্যে যে কোনও একটি ব্যবহার করতে পারেন।