Advertisement
E-Paper

ঘড়িতে বনেদিয়ানা! মণিবন্ধে বাঁধা সময়-বলা যন্ত্র নীরবে জানাবে কালোত্তীর্ণ আভিজাত্যের কথা

রাজা, বাদশাহ, জমিদারেরা সোনায় মোড়া সোনার চেন দেওয়া ঘড়ি পকেটে রাখতেন। পরবর্তী কালে ঘড়ি আমজনতার নাগালে এলেও তার ‘স্টেটাস সিম্বল’ ভাবমূর্তি বদলায়নি।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২৫ ১৬:১১
ঘড়ি যখন আভিজাত্যের প্রতীক!

ঘড়ি যখন আভিজাত্যের প্রতীক! ছবি : সংগৃহীত।

কব্জিতে বাঁধা ঘড়িটি কি শুধুই সময় বলে? তা-ই যদি হতো, তবে যা হোক একটা কিনে হাতে পরে নিলেই তো হয়ে যেত! তা না করে ঘড়ির জন্য তারকারা কোটি কোটি ডলার ব্যয় করতে যান কেন? সাধারণ মানুষই বা কেন ঘড়ি কিনতে গেলে সাধ্য অনুযায়ী অর্থ ব্যয়ে কার্পণ্য করেন না? কারণ, হাতে বাঁধা ওই সময় বলার যন্ত্রটি কেবল যন্ত্র নয়— অলঙ্কার! যা আবার বহু ক্ষেত্রে পরিধানকারীর সামাজিক মর্যাদাও নিরূপণ করে দেয়।

এককালে সমাজের উচ্চস্তরের মানুষেরই অলঙ্কার ছিল ঘড়ি। রাজা, বাদশাহ, জমিদারেরা সোনায় মোড়া সোনার চেন দেওয়া ঘড়ি পকেটে রাখতেন। পরবর্তী কালে ঘড়ি আমজনতার নাগালে এলেও তার ‘স্টেটাস সিম্বল’ ভাবমূর্তি বদলাল না। ফলে ঘড়ির জন্য শৌখিন মানুষজন দরাজ দিল হলেন। প্রয়োজনে সাধ্যের বাইরে গিয়েও অর্থ ব্যয় করতে দ্বিধা করলেন না। কিন্তু সেই অর্থ ব্যয় করার কি কোনও সীমা হয়! মধ্যবিত্তেরা হয়তো সেরা ঘড়িটির জন্য ৫০ হাজারে গিয়ে থামলেন। উচ্চ মধ্যবিত্ত খরচ করলেন লাখ-দেড় লাখ। ধনীরা লাখের ধার না ধেরে পৌঁছলেন কোটিতে। এই হিসাব রোজই বাড়তে থাকবে। তবে এর বাইরে কিছু এমন ঘড়িও আছে, দাম দিয়ে যার মূল্য মাপা যায় না। সেই সব ঘড়ি হল কালোত্তীর্ণ। ঘড়ির দুনিয়ায় যাকে বলে ‘ভিন্টেজ’।

নকশার আড়ম্বর নয়, অনাড়ম্বরই সেই সব ঘড়ির মূল কথা। তাদের প্রত্যেকটি নকশার নেপথ্যে আছে কোনও না কোনও গল্প। আছে ঘড়ি তৈরির হারিয়ে যাওয়া পদ্ধতিও। যাঁরা ইতিহাস ভালবাসেন, পুরনো জিনিস পছন্দ করেন, তাঁদের কাছে এমন ঘড়ি অমূল্য। কারণ এ ঘড়ি হাতের মণিবন্ধে বাঁধা থাকলে উচ্চকিত জাঁকজমকের পাশে থেকেও আলাদা করে চোখে পড়ে। নিরুচ্চারে বলে যায় আভিজাত্যের কথা।

১। ভালকেন ক্রিকেট

বিশ্বের প্রথম মেকানিক্যাল অ্যালার্ম হাত ঘড়ি। পঞ্চাশের দশকে ওই ঘড়ি তৈরি করেছিল সুইস ব্র্যান্ড ভালকেন। শোনা যায়, ওই ঘড়ি পরতেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যান। পরবর্তী কালে এর নানা রকমের সংস্করণ বাজারে আসে। যার মধ্যে ১৯৭০ সালের একটি মডেল সে যুগের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের অফিসে পরার ঘড়ি হিসাবে জনপ্রিয় হয়। আজও যার আবেদন এড়াতে পারেন না ঘড়ি সংগ্রাহকেরা।

২। রোলেক্স পকেটওয়াচ

ঘড়ির দুনিয়ায় রোলেক্সের মর্যাদা কতটা, তা যাঁরা এ বিষয়ে সামান্যতম খবরও রাখেন, তাঁরা জানেন। ভিন্টেজ ঘড়ির সংগ্রহেও রোলেক্স অনেকের থেকে এগিয়ে। তবে তার মধ্যেও সেরার সেরা বলতে হয় রোলেক্সের চেন দেওয়া পকেট ঘড়িকে। পাতলা সাদা ডায়ালে গোটা গোটা কালো অক্ষরে লেখা সংখ্যা। সরু কাঁটা। যেটুকু দরকার তার বাইরে এক চিলতেও বাড়তি কিছু নেই। ডায়ালের সঙ্গে একটি ছোট্ট ত্রিভূজের মতো আঁকশিতে জোড়া চেন। যা পকেটের সঙ্গে ক্লিপ দিয়ে জুড়ে দিতে হবে। চেন দেওয়া রোলেক্সের পকেট ঘড়ি এ যুগেও আভিজাত্যের শেষ কথা।

৩। মোভাডো টাইম-ওনলি

১৯৫০ সালে তৈরি অটোমেটিক ঘড়ি। ১৮ ক্যারাটের রোজ় গোল্ডে তৈরি ডায়াল। তার উপরে সংখ্যার বদলে রোজ গোল্ডেরই ১২টি দাগ। রয়েছে ক্রোনোগ্রাফ। তবে তা-ও একেবারে বাহুল্যবর্জিত। ঘড়ির নকশার ওই আড়ম্বরহীনতার জন্যই সম্ভবত সুইস ঘড়ি নির্মাতা মোভাডো মডেলের নাম দিয়েছিলেন ‘টাইম ওনলি’। কোনও রকম জটিলতা ছাড়া সময় দেখার বন্দোবস্তই এই ঘড়ির মূল কথা।

৪। ওমেগা সিমাস্টার্স’ ১৯৫০

১৯৪৮ সালে ঘড়ি নির্মাতা ওমেগা তাদের ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রথম তৈরি করে একটি টেকসই এবং জলরোধক ঘড়ি। তাঁরা চেয়েছিলেন এমন একটি ঘড়ি বানাতে, যা বাইরে বেড়াতে গেলে যে কোনও পরিস্থিতিতে পরা যাবে। জলে নষ্ট হবে না, সহজে ভাঙবে না। পরে ১৯৫০ সালে সেই ঘড়িতে আরও কিছু পরিবর্তন আনা হয়। ঘড়িটি অটোমেটিক বানানো হয়। ঘড়ির আধারটি বানানো হয় পালিশহীন স্টেনলেস স্টিল দিয়ে। ডায়ালটিতেও দেওয়া হয় মৌচাকের নকশা। এ ছাড়া রোজ় গোল্ডের একটি মডেলও তৈরি করা হয় সিমাস্টার্স-এর। এখনও ওই ঘড়ি অভিজাত মহলে জনপ্রিয়। পোলো ম্যাচ হোক বা সন্ধ্যার ককটেল পার্টি, সিমাস্টার্স এখনও বহু শৌখিনীর পছন্দের ঘড়ি।

৫। লঞ্জিনেস টাইম-ওনলি

ভিন্টেজ ঘড়ির জগতে এই ঘড়িরও কদর রয়েছে। মোভাডোর টাইম-ওনলির মতোই লঞ্জিনেসের টাইম-ওনলি সম্পূর্ণ অনাড়ম্বর। খাঁটি চামড়ার বাদামি বেল্ট, পাতলা সোনালি কেসে একটু বড় নীল ডায়াল। তার উপর মোটা ক্রিস্টালের পরত। আর তিনটি সোনালি কাঁটা। ব্যস। সহজ এবং স্মার্ট।

Vintage Watch Watch Fashion Fashion Accessories for Men
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy