Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কর্মী নেই, বাতিল হল রক্তদান শিবির

দীর্ঘ ছ’মাস ধরে রক্তের সঙ্কট চলছে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে। সঙ্কট মেটাতে ঠিক করা হয়েছিল রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হবে। সাহায্যে এগিয়ে এসেছিল স্থানীয় একটি সংস্থা। স্থির হয়, দাসপুরের লাউদা ভূতনাথ সঙ্ঘ ক্লাবের প্রাক্তন সম্পাদক সুনীল ধাড়ার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হবে রবিবার।

রক্তদান শিবির উপলক্ষে ছাপানো আমন্ত্রণপত্র। —নিজস্ব চিত্র।

রক্তদান শিবির উপলক্ষে ছাপানো আমন্ত্রণপত্র। —নিজস্ব চিত্র।

অভিজিৎ চক্রবর্তী
ঘাটাল শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৫ ০০:৪৩
Share: Save:

দীর্ঘ ছ’মাস ধরে রক্তের সঙ্কট চলছে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে। সঙ্কট মেটাতে ঠিক করা হয়েছিল রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হবে। সাহায্যে এগিয়ে এসেছিল স্থানীয় একটি সংস্থা। স্থির হয়, দাসপুরের লাউদা ভূতনাথ সঙ্ঘ ক্লাবের প্রাক্তন সম্পাদক সুনীল ধাড়ার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হবে রবিবার। কিন্তু বাস্তবে রবিবার কোনও রক্তদান শিবিরের আয়োজনই করা গেল না। ক্লাব কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, শনিবার সকালে হাসপাতালের সুপার মৌখিক ভাবে জানিয়ে দেন, কর্মীর অভাবে ওই ক্যাম্প বাতিল হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। কেন এমন হল, খোঁজ নিচ্ছি।’’

রক্তের সঙ্কট নিয়ে বিভিন্ন ভাবে বিড়ম্বনায় পড়েছে ঘাটাল হাসপাতাল। রক্তাল্পতা না থাকার অজুহাতে বহু রোগীকে রেফারও করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অনেক সময়, রোগীর পরিজনরাও রক্ত দিয়েও পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন। অবস্থা ঠেকাতে রক্তদান শিবিরের পরিকল্পনা করেছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এগিয়ে এসেছিল স্থানীয় ক্লাব। ক্লাবের সম্পাদক সঞ্জয় ধাড়া বলেন, “এটা আমাদের এক মাস ধরে পরিকল্পনা চলছে। নিয়ম মাফিক আবেদন করেছিলাম। কাঠখড় পুড়িয়ে অনুমতিও মিলেছিল। কিন্তু আচমকাই হাসপাতালে তরফে জানানো হয়, শিবিরে কেউ যেতে পারবে না।’’ কিন্তু শিবির না হওয়ার কারণ কী? এ প্রসঙ্গে ঘাটাল হাসপাতালের সুপার দেবদুলাল মুখোপাধ্যায় বলেন, “কর্মীর অভাবেই ওই শিবির বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি।”

অথচ, হাসপাতাল সূত্রের খবর, এ দিন ব্লাড ব্যাঙ্কে কর্মীর অভাব ছিল না। ব্লাড ব্যাঙ্কের মেডিক্যাল অফিসার দুর্গাশঙ্কর দাস বলেন, “আমি কোনও মন্তব্য করব না।” হাসপাতাল সূত্রের খবর, সব কিছু পযার্প্ত থাকা সত্ত্বেও ব্লাড ব্যাঙ্কের একাংশ কর্মী ও অফিসারের কাজ না করার মানসিকতার ফলেই এমন ঘটনা। অথচ, এই ঘাটাল ব্লাড ব্যাঙ্ক এক সময় গোটা রাজ্যে সেরার শিরোপা পেয়েছিল। সেই হাসপাতালেরই এমন হাল হওয়ায় ক্ষুব্ধ ঘাটালের বাসিন্দা থেকে হাসপাতালের কর্মী-সহ সংশ্লিষ্ট সকলেই। জানা গিয়েছে, বারবার একাধিক সংস্থা শিবিরের আয়োজন করে অনুমতির জন্য হাসপাতালে এসেও ফিরে যায়। এ ব্যাপারে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “অভিযোগ আমি পেয়েছি। এর তদন্তও শুরু হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তবে ক্লাবের প্রচেষ্টা বিফল হয়নি। যোগাযোগ করা হয় বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করি। সেই হাসপাতালের সাহায্যে এ দিন ৫ জন মহিলা সহ ৫৪ জন রক্ত দেন। শিবিরে ছিলেন দাসপুরের বিধায়ক মমতা ভুঁইয়া, তৃণমূলের দাসপুর-১ ব্লক সভাপতি সুকুমার পাত্র, সুনীল ভৌমিক সহ বিশিষ্টরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্লাবের এক কর্মকর্তার সাফ কথা, “আমরা ঘাটাল হাসপাতালের ওই চিঠি-সহ আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ এমন ঘটনায় হতবাক দাসপুর-১ ব্লক সভাপতি সুকুমারবাবুও। তাঁর কথায়, ‘‘কথা দিয়েও কেন এমন হল বুঝতে পারছি না। আমরাও খোঁজ নেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE