Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
গান শোনা থেকে শুরু করে ফোন রিসিভ করা... এমন অনেক কাজই করা যায় এর সাহায্যে। বিশদে চিনে নিন ব্লুটুথকে
Bluetooth

ব্লুটুথের সাত-সতেরো

এবার জেনে নিন, এমন কোন স্মার্ট-গ্যাজেট কিনতে পারেন, যাতে আপনার দৈনন্দিন জীবনটা আরও একটু সহজ হয়ে যাবে!

আরুণি মুখোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২০ ০০:০২
Share: Save:

অবসরে আপনার মনে হল, পছন্দের ‘অমুক’ গানটা অনেক দিন শোনেননি! পাশে রাখা ব্লুটুথ স্পিকারটি চালু করে, স্মার্টফোনের সঙ্গে সিঙ্ক করে গান চালু করলেন। স্মার্টফোনের ব্লুটুথটি চালু করার মুহূর্ত থেকেই বিশেষ রেডিয়ো ফ্রিকোয়েন্সি আপনার চারপাশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। এর পর সেই ফ্রিকোয়েন্সি ‘ক্যাচ’ করেছে স্পিকারটি। তাই আপনি গানটি শুনতে পেয়েছেন। ফ্রিকোয়েন্সির ওয়েভের মাধ্যমে দুই বা ততোধিক ডিভাইস ‘সিঙ্ক’ করার পর ডিভাইসগুলির মধ্যে একটি নেটওয়র্ক তৈরি হয়, যাকে টেকনিক্যাল ভাষায় বলা হয় ‘পিকোনেট’। অনেকে বলেন, ব্লুটুথ ডিভাইসের রেঞ্জ নাকি ১০ মিটার পর্যন্ত থাকে। কোন ব্লুটুথ ডিভাইসের কভারেজ কতটা হবে, তা নির্ভর করে ডিভাইসের ব্লুটুথের মেকানিজ়মের উপর। কিছু ব্লুটুথ ডিভাইসের কভারেজ ১০০ মিটার পর্যন্তও হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে যে ব্লুটুথ যত শক্তিশালী, তার ব্যাটারির খরচও ততই বেশি। সাধারণত, ব্লুটুথের ফ্রিকোয়েন্সি রেঞ্জ হয়ে থাকে ২.৪০২ থেকে ২.৪৮০ গিগাহার্ৎজ়ের মধ্যে।

ভুল ধারণা

ব্লুটুথ ও ওয়াইফাই একসঙ্গে চালু করলে নাকি কোনওটিই ঠিক ভাবে কাজ করে না। বিষয়টা ঠিক নয়! প্রসঙ্গত, ব্লুটুথ সেকেন্ডে ১৬০০ বার নিজের ফ্রিকোয়েন্সি বদল করতে পারে। একে ‘অ্যাডভান্সড ফ্রিকোয়েন্সি হপিং মেকানিজ়ম’ বলে। মূল বা মাস্টার ডিভাইস প্রথমে নিজের ফ্রিকোয়েন্সি বদল করে, সিঙ্কড বা স্লেভ ডিভাইসে বার্তা পাঠায়। এর পর অন্য ডিভাইসগুলিও নিজেদের ফ্রিকোয়েন্সি মাস্টারের সঙ্গে মিলিয়ে নেয়। এর ফাঁকেই চলতে থাকে তথ্যের আদান-প্রদান। বিষয়টি এতটাই দ্রুত হয় যে, ওয়াইফাই হোক কিংবা অন্য কোনও ফ্রিকোয়েন্সি ব্লুটুথের সংযোগে বাধা তৈরি করতে পারে না।

এবার জেনে নিন, এমন কোন স্মার্ট-গ্যাজেট কিনতে পারেন, যাতে আপনার দৈনন্দিন জীবনটা আরও একটু সহজ হয়ে যাবে!

• প্রথমেই উল্লেখ করতে হয় ব্লুটুথ ইয়ারফোনের। এর বড় সুবিধে হল, হেডফোনের তার জট পেকে যাওয়ার সমস্যা থাকে না, ক্যারি করতেও সুবিধে। তবে ব্লুটুথ ইয়ারফোনের সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। এর নির্দিষ্ট ব্যাটারি ব্যাকআপ থাকে। তাই ব্যবহার করুন, ব্যাটারি ব্যাকআপের বিষয়টি মাথায় রেখে।

• অ্যাপল তো বটেই, এ ছাড়াও বেশ কিছু নামী সংস্থার দামি ডেস্কটপের সঙ্গে এখন ব্লুটুথ মাউস এবং কি-বোর্ড থাকছে। কারণ একটাই, তারের জটিলতা থেকে মুক্তি। এই গ্যাজেটের সাহায্যে ডেস্কটপ থেকে ইচ্ছে মতো দূরত্বে বসে অনায়াসে কাজ করা যায়।

• অনেকেই স্মার্টওয়াচের দিকে ঝুঁকছেন। হাত-ঘড়িটিকে যদি স্মার্টফোনের সঙ্গে সিঙ্ক করিয়ে রাখেন, তা হলে কোনও ফোন এলে স্মার্টওয়াচ থেকেই তা রিসিভ করতে পারবেন। শুধু তা-ই নয়, কেউ মেসেজ পাঠালে, তা ভেসে উঠবে স্মার্টওয়াচে। পকেটের ফোন বার না করেই টেক্সটের উত্তরও দিতে পারবেন।

• বাড়ির বৈঠকখানা হোক বা সাধের গাড়ি, মিউজ়িক সিস্টেম কিনতে গেলে ব্লুটুথ প্রযুক্তি রয়েছে কি না দেখে নিন। এই প্রযুক্তি থাকলে কখন এফএম’এ পছন্দের গান বাজানো হবে, সেই অপেক্ষায় থাকতে হবে না। পেনড্রাইভে ‘ফেভারিট সং’এর ফাইল লোড করে রাখার কথাও ভুলে যান। দু’টি ডিভাইসকে সিঙ্ক করিয়ে স্মার্টফোনের বোতাম টিপেই পছন্দের গান শুনতে পারবেন।

• ব্লুটুথ প্রযুক্তির সাহায্যে ফ্ল্যাটের দরজাও লক করতে পারেন। আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার মাউন্টেন ভ্যালির একটি স্টার্টআপ সংস্থা ‘অ্যাপিগি’ ওয়াইফাই এবং ব্লুটুথ প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে তালা (ডিভাইস) তৈরি করেছে, যেটিকে স্মার্টফোনের সঙ্গে সিঙ্ক করে দুনিয়ার যে কোনও প্রান্ত থেকেই চালানো সম্ভব। আপনার অনুপস্থিতিতে বাড়িতে কোনও আত্মীয় বা বন্ধু এলে, স্মার্টফোনের বোতাম টিপে দরজাও খুলে দিতে পারবেন অনায়াসে।

তবে কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে। অনেকেই প্রয়োজন মিটে গেলেও, স্মার্টফোনে ব্লুটুথ চালু করে রাখেন। এ ক্ষেত্রে স্মার্টফোনটি ‘ডিসকভারেবল’ কিংবা ‘ভিজিবল’ অবস্থা থাকলে, প্রযুক্তিতে পটু যে কেউ আপনার ফোনটি হ্যাক করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ফোনে থাকা তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাবে। তাই প্রয়োজন মিটে গেলে ব্লুটুথ অফ করে দিন। ডিভাইসে স্ট্রং পাসওয়র্ডও দিতে পারেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bluetooth Smart Watch Ear Phones Head Phones
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE