স্বাস্থ্য রক্ষায় নামী সংস্থার মধু খাচ্ছেন? নাকি মধুর আড়ালে আপনার শরীরে ঢুকছে অন্য কিছু, যা উল্টে ডেকে আনতে পারে ক্ষতি! বুধবার দিল্লির পরিবেশ গবেষণা সংস্থা ‘সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট’ (সিএসই)-এর সাংবাদিক বৈঠক এই প্রশ্নই তুলে দিয়েছে। তাদের তদন্তমূলক কর্মকাণ্ডে জানা গিয়েছে, এ দেশের বেশির ভাগ নামী সংস্থার মধুতেই রয়েছে ভেজাল! এবং সে ভেজাল নেহাতই চিনি বা গুড় নয়, বরং চাল বা অন্য কোনও দানা থেকে রাসায়নিক উপায়ে তৈরি মিষ্টি রস।
মূলত চিন থেকে সেই রস এ দেশে সুক্রোজ় এবং ফ্রুক্টোজ় নামে আমদানি হয়। তবে এ দেশের উত্তরাখণ্ডেও সেই রস বা সিরাপ তৈরির কারখানা চালু হয়েছে বলে সিএসই-র ডিরেক্টর জেনারেল সুনীতা নারায়ণ জানান। তবে এই প্রথম নয়, ২০১০ সালেই সিএসই-র তদন্তে উঠে এসেছিল, মধুর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিবায়োটিক মিলছে। সুনীতা বলেন, ‘‘কোভিড পরিস্থিতিতে প্রচুর লোকে মধু খাচ্ছেন। এই ভেজাল মধু আসলে তাঁদের ক্ষতি করবে। আবার মৌমাছিপালকেরাও ক্ষতির মুখে পড়ছেন।’’ বস্তুত, এই জাতীয় ভুট্টার (কর্ন) সিরাপ খাওয়ার ফলে আমেরিকায় নাগরিকদের স্থূলতা বাড়ছে।
দেশের মধ্যে এমন বড় আকারে ভেজাল মধুর কারবার চললেও কেন্দ্রীয় সরকার কেন তা জানে না সেই প্রশ্ন উঠেছে। এ প্রসঙ্গেই সিএসই জানিয়েছে, গত কয়েক বছরে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ফুড সেফটি স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড সেফটি অথরিটি অব ইন্ডিয়া’ মধুর ব্যাপারে নির্দেশিকা বদলেছে। তাতে আখের থেকে তৈরি চিনি মেশানো হয়েছে কি না, তা ধরার ব্যবস্থা থাকলেও ‘ট্রেস মেকার ফর রাইস সিরাপ’ (টিএমআর) এবং ‘নিউক্লিয়ার ম্যাগনেটিক রেজ়োন্যান্স’ (এনএমআর)-এর মতো উন্নত পরীক্ষা বাদ দেওয়া হয়। সুনীতা জানান, দেশের মধ্যে পাশ করলেও জার্মান একটি ল্যাবরেটরিতে এই পরীক্ষাতেই ফেল করেছে দেশের ভেষজপণ্য প্রস্তুতকারী নামী সংস্থাগুলির অনেকে।