ইনস্টাগ্রামে রাজত্ব করছে বাবল স্কিনকেয়ার। এই মাস্ক লাগিয়ে রাখলে সাবানের ফেনার মতো বুদ্বুদে মুখ ভরে যায়। সুগন্ধি এই মাস্ক যেমন মজার, তেমনই কাজের। ত্বক উজ্জ্বল ও পরিষ্কার করে। ব্রণ, র্যাশ, ব্ল্যাক হেডসের সমস্যা দূর করে।
বাবল মাস্ক কী
এই মাস্ক-এর জন্ম কোরিয়ায়। বিশেষ ধরনের অক্সিজেনেশন প্রক্রিয়ায় মাস্কটি ত্বকের টক্সিক পদার্থ, ধুলো ময়লা পরিষ্কার করে দেয়। এটি লাগানো মাত্র মুখে ‘ফোম’ দেখা দেয় অর্থাৎ ‘ফেনা’-র মতো ফুলে ফুলে ওঠে। তবে, তা মুখ থেকে পিছলে পড়ে যায় না। ত্বককে তরুণ রাখতে যে অক্সিজেন ফেসিয়াল করা হয়, এই বাবল মাস্ক কিছুটা সে রকম ভাবেই কাজ করে। তবে, অক্সিজেন ফেসিয়ালে ত্বকের মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস বা কনসেনট্রেটেড অক্সিজেন প্রবেশ করানো হয়। বাবল মাস্ক তৈরির সময় প্রেশারাইজ়ড অক্সিজেন ঢুকিয়ে রাখা হয়। তাই মুখে লাগালে, বাবল তৈরি করে। এর মধ্যে কোলাজেন, অ্যাক্টিভেটেড চারকোল প্রভৃতি বিশেষ উপাদানও থাকে। অক্সিজেন কোষে পৌঁছনোমাত্র ত্বক ‘ব্রিদ’ করতে শুরু করে। রক্ত সঞ্চালনও বাড়ে। তখন ওই বিশেষ উপাদানগুলির কাজ করতে সুবিধে হয়। ত্বককে পরিষ্কার করে লালিত্য বাড়িয়ে তোলে।
উপকার অনেক
বাবল মাস্কের প্রধান কাজ ত্বকের বিবর্ণতা দূর করা। এটি কোষে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়িয়ে ঔজ্জ্বল্য ফেরায়। তাই বয়সের ছাপ মুছতে খুব কার্যকর। রোমকূপের মুখ খুলে এক্সফোলিয়েশনেও সাহায্য করে। তাই স্ক্রাবিংয়ের কাজও হয়ে যায়। অ্যাকনে, ব্ল্যাকহেডস কমে। ময়শ্চারাইজ়ও করে। চোখ-মুখে ক্লান্তির ছোপ পড়লেও, বাবল মাস্ক ব্যবহারে পরিষ্কার হয়ে যায়।
‘‘অ্যাক্টিভেটেড চারকোল থাকায় এই মাস্ক ত্বকের তেল শুষে নেয়। ব্রণর সমস্যা কমে। তাই যে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে খুব বেশি ব্রণ-র সমস্যা, তাদের মধ্যে এই নতুন মাস্কের জনপ্রিয়তা লক্ষ করেছি,’’ বললেন চর্মরোগবিশেষজ্ঞ সন্দীপন ধর। ঘাম, তেল, ময়লা জমলেও তো র্যাশ দেখা দেয়। এই সব সমস্যারও দুর্দান্ত সমাধান পাবেন এই মাস্কে।
ব্যবহার পদ্ধতি
• ঈষদুষ্ণ জল ও ক্লেনজ়ার দিয়ে মুখ ভাল ভাবে পরিষ্কার করে নিন। এতে রোমকূপগুলো খুলে যাবে। মাস্কের কাজ করতে সুবিধে হবে।
• মুখ আলতো করে মুছে মাস্ক লাগাবেন। সাধারণত ১৫ মিনিট মাস্ক লাগিয়ে রিল্যাক্স করতে হয়।
• আপনার কেনা প্যাকেজে ক্রিম আকারে মাস্কটি থাকলে, স্প্যাচুলা ব্যবহার করে মাস্কের মতো করে লাগিয়ে নিন। ‘প্যাকেজড মাস্ক’-এর ক্ষেত্রে খুব সন্তর্পণে তা মুখের উপর বসিয়ে নিতে হবে। চোখের অংশে ও চুলে মোটেই মাস্ক লাগাবেন না।
• নির্ধারিত সময়ের পর মাস্কটি ঈষদুষ্ণ জলে ধুয়ে নিন। ত্বকে বুদ্বুদের যে অংশটি লেগে থাকে, তা আলতো ঘষে তুলে নিন। ত্বকের পেশিও আরাম পাবে।
• এর পর সেরাম লাগালে মাস্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। শেষে ময়শ্চারাইজ়ার মাসাজ করে নিন।
• কেনার সময়ে দেখে নেবেন, কত দিনের মধ্যে ব্যবহার করতে হবে।
• অ্যান্টি-এজিং ট্রিটমেন্ট ও খুব শুষ্ক ত্বকের ক্ষেত্রে কোকোনাট আলট্রা হাইড্রেটিং মাস্ক উপকারী। ডার্ক স্পট থেকে রেহাই চাইলে ভিটামিন সি যুক্ত মাস্ক ও পিগমেন্টেশন রোধে ডিপ পিউরিফাইং মাস্ক বাছতে পারেন। সব ধরনের ত্বকের জন্য কার্বোনেটেড বাবল মাস্ক বা ফ্রুটি অ্যাসিড যুক্ত মাস্ক ভাল। বিশেষ অনুষ্ঠানে সাজার জন্য সেরা চারকোল সমৃদ্ধ বাবল মাস্ক।
• সপ্তাহে দু’বার বাবল মাস্ক ব্যবহার করলে ভাল ফল পাবেন।
রূপবিশেষজ্ঞের দাবি, বাবল মাস্কে ত্বকে অল্প সংবেদন বোধ হতে পারে। কিন্তু অস্বস্তি কিংবা জ্বলুনি হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। আর যদি তা হয়, তবে মাস্কটিতে কোনও ত্রুটি রয়েছে বলেই ধরে নিতে হবে। তাই পুজোর আগে আস্থা রেখে দেখতে পারেন এই যত্নের বুদ্বুদে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy