Advertisement
১৮ মে ২০২৪
coronavirus lockdown

ওয়ার্ক ফ্রম হোম? কাজ করার সময় এগুলো মেনে চলছেন তো!

বাড়িতে আমরা ল্যাপটপ বা ডেস্কটপের সামনে সঠিক ভাবে বসি কি? বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন?

বাড়ি থেকে কাজের সময় এ ভাবেই বসা উচিত। -ফাইল ছবি।

বাড়ি থেকে কাজের সময় এ ভাবেই বসা উচিত। -ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২০ ১৩:১৩
Share: Save:

লকডাউনের ফলে এখন আমাদের কার্যত গৃহবন্দি হয়েই থাকতে হচ্ছে দিন-রাতের প্রায় সবটুকু সময়। কিন্তু তারই মধ্যে আমাদের অনেককেই অফিসের কাজ করতে হচ্ছে বাড়ি থেকে। ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’। আর সেটা করতে হচ্ছে বাড়িতে ডেস্কটপ বা ল্যাপটপের সামনে বসে। অফিসে আমরা যে ভাবে বসে কাজ করি, বাড়ি থেকে কাজ করার সময় অনেকেই সে ভাবে করি না। বাড়িতে আছি বলি কিছুটা ‘রিল্যাক্সড মুডে’ থাকতে চাই। কাজটাও সে ভাবেই করতে চাই। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাড়ি থেকে কাজের সময় ডেস্কটপ বা ল্যাপটপের সামনে সঠিক ভাবে না বসলে পরে আমাদের নানা রকমের শারীরিক সমস্যায় ভুগতে হতে পারে। তার ফলে আমাদের মাংসপেশিতে খিঁচুনি (‘স্প্যাজম’) হতে পারে। মেরুদণ্ডে প্রচণ্ড যন্ত্রণাজনিত অসুখ হতে পারে। ঘাড় ও কাঁধেও হতে পারে খুব যন্ত্রণা। যা আমাদের ভোগাতে পারে সারাটা জীবন। এ ছাড়াও এখন অনেককেই বাড়ি থেকে অফিস ও বাড়ির যাবতীয় কাজ করতে হচ্ছে বলে শারীরিক ও মানসিক দু’ধরনের রোগেই আমাদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, বাড়ি থেকে অফিসের কাজের সময় আমরা অনেকেই ল্যাপটপ বা ডেস্কটপের সামনে সঠিক ভাবে বসি না বলে আমাদের মেরুদণ্ড, মাংসপেশি ও হাড়ের উপর খুব চাপ পড়ে। যার জন্য মেরুদণ্ড, মাংসপেশি ও হাড়ে খুব যন্ত্রণা হয়। আমাদের দুর্বল করে দেয়।

সঠিক ভাবে বসে কাজ করতে না পারলে আমাদের শরীরে রক্ত সংবহনেও ব্যাঘাত ঘটে। তাতে নানা রকমের অসুখ হয় ধমনীর। শুধু তাই নয়, সঠিক ভাবে বসে কাজ না করলে আমাদের শ্বাসকষ্টজনিত নানা অসুখেও আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।

কী কী ভাবে বসা ঠিক নয়?

বিছানায় বসে হাঁটুর উপর ল্যাপটপ রেখে কাজ করতে আমরা অনেকেই অভ্যস্ত। এটা ঠিক নয়, বলছেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের বক্তব্য, এর ফলে পিঠের নীচের দিকের অংশ ও পায়ে যন্ত্রণাজনিত অসুখ হতে পারে। এমনকী, হতে পারে স্লিপ ডিস্কের মতো জটিল রোগও।

বিছানায় বসে এ ভাবে ল্যাপটপে কাজ করা উচিত নয়। - ফাইল ছবি।

এ ছাড়াও সারা ক্ষণ বিছানায় বসে কাজ করলে পরে আর বিছানায় শুয়ে আমাদের ঘুম আসতে চাইবে না। কারণ, সে ক্ষেত্রে বিছানায় বসে কাজ করতেই অভ্যস্ত হয়ে ওঠে আমাদের শরীর। বিছানায় বসে কাজ করার অভ্যাস পরে আমাদের নানা ধরনের স্নায়ুরোগেরও কারণ হয়ে উঠতে পারে। মেরুদণ্ডে বাড়তি চাপ পড়ে বলে তা পরে স্লিপ ডিস্কের মতো জটিল অসুখেরও কারণ হয়ে ওঠে।

আরও পড়ুন: করোনার টিকা তৈরিতে এগিয়ে অক্সফোর্ড, পরীক্ষায় সফল হলে বাজারে আসতে পারে সেপ্টেম্বরে

আরও পড়ুন: কাঁপুনি, মাথার যন্ত্রণা? এ গুলোও করোনার উপসর্গ হতে পারে, বলছে মার্কিন স্বাস্থ্য সংস্থা

হাল্কা ব্যায়াম করে নেওয়া ভাল

বাড়ি থেকে ল্যাপটপ বা ডেস্কটপে অফিসের কাজ শুরু করার আগে একটু হাল্কা ব্যায়াম করে নিতে পারলে খুব ভাল হয়, জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। অন্তত আধ ঘণ্টার জন্য। কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও এটা করা যেতে পারে। এতে আমাদের শরীরে রক্ত সংবহন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক থাকে।

চেয়ারে বেশি ক্ষণ না বসাই শ্রেয়

তবে বাড়ি থেকে অফিসের কাজ ল্যাপটপ বা ডেস্কটপেও করেন, তা হলে বেশি ক্ষণ চেয়ারে বসে সেটা না করাটাই উচিত। চিকিৎসকেরা বলছেন, সে ক্ষেত্রে ঘড়িতে আধ ঘণ্টা অন্তর অ্যালার্ম দিয়ে রাখা উচিত। যাতে আধ ঘণ্টা অন্তর চেয়ার থেকে উঠে একটু হাঁটা-চলা করে নিতে পারেন। অন্তত মিনিটপাঁচেকের জন্য। বাড়ির চার পাশে এক বা দু’বার পাক মেরেও আসতে পারেন ওই সময়।

কোন চেয়ারে বসবেন?

বাড়ি থেকে অফিসের কাজ করার সময় কোন চেয়ারে বসবেন, সেটা বেছে নেওয়াটাও খুব জরুরি। এমন চেয়ারে বসবেন, যার পিছনে হেলান দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। সোজা হয়ে চেয়ারে বসার জন্য পিঠে একটা বালিশ বা চেয়ারের উপর একটা বালিশ রাখতে পারেন। যত সোজা হয়ে বসে কাজ করবেন, ততই আপনার মেরুদণ্ড সঠিক থাকবে। ল্যাপটপ বা ডেস্কটপও আপনার থেকে অন্তত এক ফুট দূরত্বে থাকলেই সবচেয়ে ভাল হয়।

এমন চেয়ারে বসা উচিত, যাতে পিছনে হেলান দিতে পারেন। -ফাইল ছবি।

বসার সময় পা কী ভাবে রাখবেন?

চেয়ারে বসে কাজ করার সময় মাটিতে রাখা দু’টি পায়ের মধ্যে যাতে বেশ কিছুটা দূরত্ব থাকে তার উপর নজর রাখতে হবে। না হলে পেশিতে টান ধরতে পারে। যাকে বলা হয়, ‘মাস্‌ল ক্র্যাম্প’। এর থেকে পিঠ ও পায়েও অসম্ভব যন্ত্রণাজনিত রোগ হতে পারে, জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE