ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি অপর্ণা সেন। অন্য দিকে, মঙ্গলবারই শহরে ডেঙ্গিতে মারা গেল এক কিশোর।
গত ৪ সেপ্টেম্বর জ্বর ও পেট ফোলা নিয়ে অপর্ণা সেনকে ই এম বাইপাস সংলগ্ন এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর বমিও হচ্ছিল। সে দিনই তাঁর রক্ত পরীক্ষা হয়। ৫ তারিখ রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টে ডেঙ্গির জীবাণু মেলে। রক্তে অণুচক্রিকাও অনেক কম ছিল। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক রাজীব শীল জানান, এখন তিনি বিপন্মুক্ত। দুর্বলতা থাকলেও ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন।
ডেঙ্গিতে শহরের যে কিশোরের মৃত্যু হয়েছে, তার নাম সৃজিত সাহা (১২)। বাড়ি ১৪ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার বিপ্লবী বারীন ঘোষ সরণিতে। গত কয়েক দিনে ওই রোগে আক্রান্ত হয়ে একাধিক মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে মতানৈক্য ছিল পুরসভা ও সরকারি হাসপাতালের রিপোর্টে। কিন্তু এ দিন পুরসভার তরফেই ডেঙ্গিতে ওই ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনা জানানো হয়।
পুর-প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, সল্টলেকের বি ডি স্কুলের ছাত্র সৃজিত ২ সেপ্টেম্বর থেকে জ্বরে আক্রান্ত ছিল। ৭ সেপ্টেম্বর তার ম্যালেরিয়া ও টাইফয়েডের পরীক্ষা হলেও ডেঙ্গি পরীক্ষা হয়নি। অবস্থার অবনতি হতে ৮ সেপ্টেম্বর তাকে দক্ষিণ কলকাতার এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতাল ডেঙ্গি পরীক্ষার জন্য তার রক্ত এক বিশেষ কেন্দ্রে পাঠায়। এলাইজা পদ্ধতির সাহায্যে রক্ত পরীক্ষায় জানা যায়, তার ডেঙ্গি হয়েছে। ততক্ষণে ব্লাড কাউন্ট অনেক নেমে যাওয়ায় ওই কিশোরকে বাঁচানো যায়নি।
মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ জানান, ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে বছরের শুরু থেকেই শহরে সচেতনতা প্রচার চলছে। জ্বর হলেই নিকটবর্তী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে রক্ত পরীক্ষা করানোর কথা বলা হচ্ছে। তবুও জ্বর হওয়ার পাঁচ দিনের মধ্যে ওই কিশোরের ডেঙ্গি পরীক্ষা হয়নি। যখন তা হল, তখন তার শেষ অবস্থা। ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক বলে অতীনবাবু জানান, সচেতনতার অভাবেই এমন হয়েছে।
পুর স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, ওই এলাকায় মশা নিবারণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ওই ছাত্র বি ডি স্কুলে পড়ত। স্কুল থেকে জ্বর নিয়েই সে বাড়ি ফেরে। তাই কোথায় মশা কামড়েছে, চিহ্নিত করা শক্ত। অতীনবাবু জানান, ২০১২ সালে শহরে ডেঙ্গির প্রকোপ বেড়েছিল। সে বার আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৮০০। মৃত্যু হয় দু’জনের। ২০১৩-এ সংখ্যাটা কমে। কেউ মারা যাননি। এ বার ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শহরে আক্রান্তের সংখ্যা ২৪। মৃত্যু হল এক জনের। অতীনবাবু জানান, সচেতনতার জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রায় পাঁচশো সভা হয়েছে। এলইডি ভ্যানে প্রচার চলছে। জ্বর হলেই রক্ত পরীক্ষা করাতে হোর্ডিং, ব্যানার, হ্যান্ডবিল দেওয়া হয়েছে। তার পরেও সময়ে রক্ত পরীক্ষা না করানোর ফলে এক জনের মৃত্যু দুর্ভাগ্যজনক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy