অতিরক্ত ধূমপান করলে পুরুষদের টেস্টোস্টেরন হরমোনের কার্যক্ষমতা কমে গিয়ে হাড় পলকা হতে শুরু করে,
নিয়ম করে মদ্যপান করলে শরীরে নতুন হাড় তৈরির পদ্ধতি ব্যাহত হয় বলে হাড় ভঙ্গুর হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে,
বংশে থাকলে অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি অনেকটাই বেশি। যদিও এ বিষয়ে এখনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি কিন্তু ধারণা করা হয় যে যাঁদের হাড়ের গঠনে কোনও বিচ্যুতি আছে তাঁদের মধ্যে হাড় ক্ষয়ে যাওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। তাই পরিবারে এই অসুখের ইতিহাস থাকলে ছোট থেকেই সাবধান হওয়া উচিত।
আরও পড়ুন: আক্রান্তের সিংহভাগই মহিলা, মাইগ্রেনের সমস্যা সমাধানে এগুলি মাথায় রাখতেই হবে
সুদীপ্ত ঘোষ জানালেন যে অস্টিওপোরোসিসের সব থেকে বড় সমস্যা রোগটা আসে নিঃশব্দে। যখন আচমকা পড়ে গিয়ে হাড় ভেঙে যায় তখনই চিকিৎসা করাতে গিয়ে রোগের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানা যায়। পিঠের দিকে অল্পস্বল্প ব্যথা দিয়ে অসুখের সূত্রপাত হলেও বেশিরভাগ মানুষ অবহেলা করেন। যখন বেশি ব্যথা হয়, তখন বুঝতে হবে হাড়ের ক্ষয় অনেক বেড়ে গেছে। নিঃশব্দে রোগের বিস্তার হয় বলে অনেকে একে 'সাইলেন্ট থিফ' বলেন।
এই সমস্যা আটকে দিতে শুরুতেই রোগ নির্ণয় করে সুস্থ জীবনযাপন মেনে চলতে হবে। বংশে নেক ফিমার ফ্র্যাকচার বা বৃদ্ধ বয়সে পড়ে গিয়ে চোট পাওয়ার ইতিহাস থাকলে ছোট থেকেই সুস্থ জীবনযাপন মেনে চলা উচিত। ৪০ পেরনোর পর থেকে বিএমডি অর্থাৎ বোন মিনারেল ডেনসিটি টেস্ট করে হাড়ের অবস্থা জেনে নিয়ে ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে রোদ্দুর লাগান এবং ভিটামিন ডি ৩ ও ক্যালসিয়াম খাওয়া শুরু করতে হবে। মনে রাখবেন ভিটামিন ডি সপ্তাহে ১ দিন খেতে হয়। ভাল কাজ হবে বলে রোজ খেলে হাইপারভিটামিনোসিস হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এছাড়া নিয়ম করে ওয়েট বিয়ারিং এক্সারসাইজ ও সপ্তাহে ন্যূনতম ৫ দিন, ৩০ মিনিট করে হাঁটা জরুরি, এমনই বললেন সুদীপ্ত ঘোষ।
হাড়ে ঘুণ ধরা আটকাতে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের ওপর জোর দেওয়া উচিত, পরামর্শ নিউট্রিশনিস্ট ইন্দ্রাণী ঘোষের। ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার রাখুন রোজের ডায়েটে। দুধ, দই, ছানা খাওয়া সবথেকে ভাল, যাঁদের মিল্ক অ্যালার্জি আছে তাঁদের সয়াবিনের দুধ, টোফু খাওয়া দরকার। এছাড়া ক্যালসিয়াম পাবেন যে কোনও সবুজ শাক সবজিতেও।
আরও পড়ুন: ‘হার্ড ইমিউনিটি’ গড়ে উঠতে আর কত দিন, ভ্যাকসিনই বা কবে?
পালং শাক, নটে শাক, বিনস, বাঁধাকপি, ব্রকোলি, কড়াইশুঁটি, সহ সময়ের সবজি ও ফল রাখুন রোজকার ডায়েটে পরামর্শ ইন্দ্রাণীর। এছাড়া মাছ, চিকেন, ডিমও খাওয়া দরকার। যাঁদের অল্প বয়সে মেনোপজ হয়েছে তাঁদের তো বটেই অন্যদেরও প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেলস, ফ্যাটের সমন্বয়ে সুষম খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিয়মিত শরীরচর্চা করা উচিত বলে ইন্দ্রাণীর পরামর্শ। হাড় মজবুত রাখতে নিয়ম করে ব্যায়াম করুন, মন ভাল রাখুন, কোনও সমস্যা হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।