Advertisement
০৫ মে ২০২৪
ghee

খাবার পাতে রোজ ঘি, না কি একেবারেই বাদ দেবেন তা?

ঘি-মাখনের বদলে ঘরে ঘরে এখন রিফাইন্ড তেলের রমরমা। সেই তেল কি ঘি-মাখনের চেয়েও স্বাস্থ্যকর?

ঘি খাবেন না কি খাবেন না? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা? ছবি: শাটারস্টক।

ঘি খাবেন না কি খাবেন না? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা? ছবি: শাটারস্টক।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ ১১:৫১
Share: Save:

ঘি মানেই ওজন বাড়ার চোখরাঙানি— এমন ধারণা পোষণ করেন অধিকাংশ মানুষই। তাই মেদ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডায়েট থেকে নিজেরাই বাদ দিয়ে দেন ঘি-মাখন। এ দিকে বিশেষ কিছু রান্নায় স্বাদ বাড়াতে ঘি-মাখনের জুড়ি নেই। তা হলে কি ঘি-মাখন বাদ দিয়েই স্বাদকোরকের সঙ্গে আপস করতে হবে এ বার থেকে?

ঘিয়ের বদলে ঘরে ঘরে এখন রিফাইন্ড তেলের রমরমা। সেই তেল কি ঘিয়ের চেয়েও স্বাস্থ্যকর? এমন প্রশ্ন উঠতেই সহজ করে তা বুঝিয়ে দিলেন পুষ্টিবিদ সুমেধা সিংহ। তাঁর মতে, ‘‘মেদ বাড়ার ভয়ে ডায়েট থেকে সহজেই আমরা বাদ দিয়ে দিই ঘি বা মাখন। কিন্তু পরিমিত ঘি কোষের ফ্যাট সলিউবল টক্সিন বার করে দেয়।এটি ফ্যাট পরিপাকে বিশেষ সাহায্য করে। ফলে শরীরের অতিরিক্ত ফ্যাট সহজেই শক্তিতে রূপান্তরিতহয়ে দ্রুত ওজন কমে।”

ডায়েটেপরিমিত ঘি থাকলে তা কখনওই ক্ষতি করে না বলে মত জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামীরও। বরং ঘি বাদ দেওয়ার চেয়ে জাঙ্ক ফুড বা ফাস্ট ফুড বন্ধ করারই পক্ষপাতী তিনি।

আরও পড়ুন: কেবল খেতে নয়, এই সব কারণেও দেওয়া হয় লাঞ্চ ব্রেক!

জাঙ্ক ফুড ছেড়ে ঘিয়ে মন দেওয়ায় লাভ দেখছেন গবেষকরা। ছবি: পিক্সঅ্যাবে।

সুবর্ণবাবুর কথায়,“তেলে ভাজা খাবার বা জাঙ্ক ফুড ছেড়ে যদি বাড়িতেই অল্প ঘি দিয়ে ভেজে কোনও খাবার খেতে পারেন তা বেশি স্বাস্থ্যকর। ঘি কোষ থেকে দ্রবণযোগ্য টক্সিনকে বার করে দেয়। রুটি বা পরোটায় ঘি মাখিয়ে খাওয়াও অনেকে বাদ দেন। কিন্তু দিনে এক বার অল্প ঘিয়ে রুটি বা পরোটা ভেজে খেলে রুটির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কমে যায় ও হজমে সুবিধা হয়। এ ছাড়া ঘি রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়।”

ঘি খাওয়া নিয়ে সারা বিশ্ব জুড়েই নানা গবেষণা চলেছে বিভিন্ন সময়ে। ‘আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব হেলথকেয়ার অ্যান্ড টেকনোলজি’-র গবেষকরা যেমন বলছেন, ঘি-তে উপস্থিত বিউটাইরিক অ্যাসিড ইনটেস্টাইনাল ওয়াল বা অন্ত্র ভাল রাখতে সাহায্য করে। এবং এর ফ্যাটের প্রায় পুরোটাই শরীরের শক্তিতে পরিণত হয়। তবে যে কোনও খাবারের মতোই ঘিয়ের ব্যবহারও যথেচ্ছ হলে তবেই তা ক্ষতি করে।

আরও পড়ুন: এই সব উপসর্গ দেখা দিলেই সাবধান হোন, অজান্তেই মূত্রনালিতে সংক্রমণ হচ্ছে না তো?

পুষ্টিবিদদের মতে, ঘিয়ের পুরোটাই ফ্যাট। এক চামচ ঘি থেকে প্রায় ১৫০ ক্যালোরি শক্তি মেলে। যাঁরা ডায়াবেটিস, ওবেসিটি ইত্যাদি ক্রনিক অসুখে আক্রান্ত, তাঁদের জন্যও জাঙ্ক ফুড বা ফাস্ট ফুডের চেয়ে ভাল ঘি। পরিমিত পরিমাণে কাঁচা ঘি খেলেও সে ক্ষেত্রে শরীরের কোনও ক্ষতি নেই, উল্টে উপকারই পাবেন।

এমনিতেই ঘি প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাকটিরিয়াল ও অ্যান্টিসেপটিক। তার উপর ঘিয়ের গলনাঙ্ক অনেক বেশি হওয়ায় উচ্চ তাপমাত্রায় রেখে তা দিয়ে কিছু ভাজলে সেই খাবারের মধ্যে কোনও বিষাক্ত উপাদানও জমা হয় না।

সুতরাং ভেজাল ঘি এড়িয়ে ভাল ঘিয়ের ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্তঘি নিয়ে ভয় নেই। নিশ্চিন্তে পরিমিত ঘিয়ে বানিয়ে ফেলতেই পারেন ঘি-ধোসা থেকে ফ্রায়েড রাইসের মতো জিভে জল আনা নানা রেসিপি!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ghee Health Tips Fitness Tips
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE