Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
cervical cancer

সারভাইকাল ক্যানসার নয় তো? এই সব লক্ষণ দেখলেই ডাক্তার দেখান

চিকিৎসকদের মতে, এই ধরনের ক্যানসারের বেশ কিছু লক্ষণ দেখেও এ নিয়ে সচেতন হওয়া যায়।

এইচপিভি হানা দিলে এই অসুখের কোনও বাহ্যিক চিহ্ন থাকে না। ছবি: শাটারস্টক।

এইচপিভি হানা দিলে এই অসুখের কোনও বাহ্যিক চিহ্ন থাকে না। ছবি: শাটারস্টক।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৯ ১২:৫১
Share: Save:

দেশ উন্নত হোক বা তৃতীয় বিশ্বের তালিকায়, মেয়েরা নিজেদের শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে একেবারেই সচেতন নয়, তাই সারভাইকাল ক্যানসারে আক্রান্ত মেয়েদের সংখ্যাও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ফি বছর। এমনটাই মত, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ক্যানসার সংক্রান্ত সমীক্ষায়। এই সমীক্ষার সঙ্গে সহমত পোষণ করছেন রাজ্যের ক্যানসার বিশেষজ্ঞরাও। তাঁদের অনেকের মতে, তুলনায় উন্নত দেশের নাগরিকরা সচেতন ও উন্নত জীবনযাপনের কারণে এই রোগ থেকে নিরাপদ থাকলেও সচেতনতার অভাব নেই, এ কথা জোর দিয়ে একেবারেই বলা যাবে না।

তবে উন্নত দেশে সারভাইকাল ক্যানসার শনাক্ত করার জন্য মেয়েরা ‘পেপস স্মেয়ার টেস্ট’-এর শরণ নিলেও এ দেশে সামাজিক ও পারিবারিক নানা কারণে এই পরীক্ষা করাতে কুণ্ঠা দেখা যায়।

সারভাইকাল ক্যানসারের কারণ

হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি)-এর হানাতেও এই অসুখ দানা বাঁধে শরীরে। তবে এই ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করা ছাড়াও সারভাইকাল ক্যানসারের আর একটি প্রধান কারণ অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্ক। ২০ বছরের কম বয়সিদের এই রোগ সাধারণত হয় না। সাধারণত ৩৮ থেকে ৪২ বছর বয়সিরাই এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। বয়স ৬০ পেরলেও এটি হতে পারে, তবে সংখ্যা তুলনামূলক কম। দীর্ঘ দিন ধরে এই ধরনের সম্পর্কের ফলে জরায়ু-মুখের কোষগুলি পরিরর্তিত হতে থাকে। এই পরিবর্তনই ক্যানসারকে ডেকে আনে। এ ছাড়া এইচপিভি হানা দিলে এর কোনও বাহ্যিক চিহ্ন থাকে না। সাধারণত, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দেড় থেকে দু’বছরের মধ্যেই এই ভাইরাস থেকে শরীরকে মুক্ত করে। কিন্তু কোনও ভাবে তা না করতে পারলে ক্যানসারের শিকার হতে হয়।

আরও পড়ুন: ঘন ঘন অ্যাসিডিটি ও বদহজমের সমস্যা? সামলে ফেলুন এ সব উপায়ে

ক্যানসার বিশেষজ্ঞ সোমনাথ সরকারের মতে, ‘‘বয়স ১০ পেরলেই এই রোগ প্রতিহত করার টিকা নেওয়া যায়। এই অসুখ গোপন না করে বরং ধরা পড়ার পরই উপযুক্ত চিকিৎসা শুরু করা প্রয়োজন। নিয়ম মেনে চিকিৎসা করালে যেমন জরায়ু-মুখ ক্যানসার সেরেও যায়, তেমনই দেরি করলে বা রোগ চেপে রাখলে তা প্রাণও কাড়ে।’’ চিকিৎসকদের মতে, এই ধরনের ক্যানসারের বেশ কিছু লক্ষণ দেখেও এ নিয়ে সচেতন হওয়া যায়।

বয়স ১০ পেরলেই সারভাইকাল ক্যানসার প্রতিরোধের টিকা নেওয়ান কন্যা সন্তানকে। ছবি: শাটারস্টক।

লক্ষণ

এই ক্যানসারের জন্য নির্দিষ্ট কোনও অঞ্চল সীমাবদ্ধ নয়। বরং জরায়ুর যে কোনও অংশেই এই ক্যানসারের হানা লক্ষ করা যায়। সাদা বা দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব, অনিয়মিত পিরিয়ড, মেনোপজের পরেও হঠাৎই রক্তপাত, তলপেটে বা কোমরে ব্যথা— ইত্যাদি সামনে এলেই সচেতন হতে হবে।

আরও পড়ুন: পুজোয় অনিয়মে ওজন বেড়েছে? মেদ ঝরাতে পাতে নিন এই অব্যর্থ খাবার

কোথায় কোথায় সাবধানতা

কোনও ভাবেই কন্যা সন্তানের বিয়ে আঠারোর আগে নয়। বাড়াবাড়ি রকমের পলিসিস্টিক ওভারি, বন্ধ্যাত্ব এ সব থাকলে সচেতন হোন। গর্ভনিরোধক ওষুধ খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ইচ্ছা মতো ওষুধ নেবেন না। পলিসিস্টিক ওভারি থাকলে তেল-মশলা এড়িয়ে খাওয়াদাওয়া করুন, সুস্থ জীবনযাপনে অভ্যস্ত হন। পিরিয়ড চলাকালীন অতিরিক্ত রক্তপাত, অস্বাভাবিক ব্যথা হলে সচেতন হোন। সঙ্গীর একাধিক যৌনসঙ্গী আছে কি না বা সঙ্গী কোনও প্রকার যৌনরোগে আক্রান্ত কি না জানতে হবে তা-ও। অধিক বা ঘন ঘন সন্তান প্রসবে রাশ টানতে হবে অবশ্যই। ধূমপান ছেড়ে দিতে হবে একেবারেই। এমনকি পরোক্ষ ধূমপানেও টানতে হবে রাশ। সুষম আহার, ভিটামিন এ, সি সমৃদ্ধ ফল, শাকসব্জি, খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যসম্মত, সুশৃঙ্খল জীবন যাপনে জোর দিতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE