বাড়িতে আটকে থেকে বিরক্ত হয়ে পড়ছে ছোট থেকে বড় সকলেই। ছোটদের সামলাতে গিয়ে বাবা মায়েরা হিমশিম খাচ্ছেন। বাড়ছে মনের সমস্যা। স্পেশাল চাইল্ডদের ঠিক মত চেক-আপ হচ্ছে না, বাদ পড়ছে নানা থেরাপি। ফলে সমস্যা বাড়ছে তাদেরও। ছোটদের ডিপ্রেশন, অ্যাংজাইটি সহ মনের নানা সমস্যা মোকাবিলা করতে হবে বাড়ির বড়দের। তবে দরকার হলে পেশাদার মনোবিদের সাহায্য নিতেই হবে।
প্রায় চারমাস হল স্কুল পড়ুয়ারা গৃহবন্দি। হয়তো পুজোর আগে পর্যন্ত এই বন্দি দশা চলবে। স্কুল পড়ুয়াদের এই পরিস্থিতিতে সময় কাটানোর অভ্যাস ছিল না। আর সেই কারণেই ওরা ক্রমশ অধৈর্য হয়ে উঠছে, বেশি সমস্যা হচ্ছে বয়ঃসন্ধির ছেলেমেয়েদের। এদের মধ্যে ডিপ্রেশন ও তার প্রকাশ হিসেবে রাগ বাড়ছে, বললেন মনোরোগ চিকিৎসক শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী। শহর ও মফঃস্বলের ছেলেমেয়েদের সমস্যা তুলনামূলক ভাবে কিছুটা বেশি। যদিও বেশিরভাগ স্কুলে অনলাইন ক্লাস চলছে, কিন্তু তার সময়সীমা ছাত্রছাত্রীদের মন ভাল রাখার জন্য যথেষ্ট নয়। ৩ – ৪ ঘণ্টা ক্লাসের পর সারা দিন বলতে গেলে তাদের হাতে অনন্ত সময়। স্কুলে গিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে গল্পগুজব, খেলাধুলো, ঝগড়া সবই বন্ধ লকডাউনে। এদিকে ওদের ভরপুর এনার্জি। কিন্তু তা প্রকাশের অভাবেই সমস্যা বাড়ছে।
শর্মিষ্ঠা দেবীর মত, যাঁদের একান্নবর্তী পরিবার নয়, ফ্ল্যাটে থাকেন, তাঁদের বাড়ির ছোটদের সমস্যা অনেক বেশি। বেশিরভাগ বাবা মা ব্যস্ত থাকেন তাঁদের অফিসের কাজ নিয়ে। বাড়িও সামলাতে হয়, তাই ছোটকে সময় দেওয়ার কথা আর মাথায় থাকে না। বাবা-মা অনলাইন ক্লাসের পর ছোটকে চুপ করে বসে পড়াশোনা করতে বলে তাঁদের দায়িত্ব শেষ করছেন অনেক ক্ষেত্রে। ক্লাসের সময় ছাড়া মোবাইল বা ল্যাপটপে খেলা করলে বা চ্যাট করলে বকাবকি ও মারধর করছেন। এর জন্য ছোটদের মধ্যে ডিপ্রেশন ও রাগের প্রকাশ হিসেবে চিৎকার করা বা জিনিসপত্র ছুড়ে ভেঙে ফেলার মত অসংযত আচরণ দেখা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে বাবা মায়ের সঙ্গে সঙ্গে স্কুল শিক্ষকদেরও কিছু দায়িত্ব পালন করতে হবে বলে মনে করেন মনোরোগ চিকিৎসক শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী।