Advertisement
০৯ ডিসেম্বর ২০২৩
asthma

শীতের শুরুতেই অ্যাজমাকে জব্দ করুন, শ্বাসকষ্ট রুখতে মানুন এ সব

এই অসুখ সম্পূর্ণ নিরাময় না হলেও কিছু বিশেষ নিয়মে তাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সতর্ক থাকুন বিশেষ কয়েকটি বিষয়ে।

অ্যাজমা রুখতে শীতের শুরুতে খেয়াল রাখুন বিশেষ কয়েকটি ক্ষেত্রে। ছবি: আইস্টক।

অ্যাজমা রুখতে শীতের শুরুতে খেয়াল রাখুন বিশেষ কয়েকটি ক্ষেত্রে। ছবি: আইস্টক।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৯ ১২:৫০
Share: Save:

শীত প্রায় দোরগোড়ায়। সকালে রোদের কিছুটা জেল্লা থাকলেও সন্ধে ঘনালেই বাতাসে হিমেল আমেজ। ঋতু পরিবর্তনের সব আয়োজনই সারা। জাঁকিয়ে বসছে আবহাওয়া বদলের অসুখবিসুখও। এমন সময় থেকেই ভয় তাড়া করে অ্যাজমা রোগীদের। এমন মরসুমে শ্বাস নেওয়া ঝকমারি হয়ে ওঠে তাঁদের কাছে। হাওয়াবাতাসে দূষণ-দোষে শ্বাস নেওয়ার ঝঞ্ঝাট তো আছেই, সঙ্গে মরসুম বদলে শীত ঢুকে পড়ায় বাড়তে থাকে বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, টান।

বিশেষজ্ঞরা শ্বাসকষ্ট বা অ্যাজমাকে ‘বংশগত অসুখ’-এর তকমা দিলেও আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, দূষণের জেরে অ্যালার্জির কারণেও এই অসুখে আক্রান্ত হতে পারেন য়ে কেউ। হু-এর হিসেব অনুযায়ী এই মুহূর্তে ২০ কোটি ভারতীয় ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমায় আক্রান্ত। সাধারণত অ্যাজমা বাড়ে শ্বাসনালীর প্রদাহের ফলে। এই অসুখে ফুসফুসে বাতাস ঢোকার পথগুলো সরু হয়ে ফুলে যায়। মিউকাসও জমতে থাকে সেই পথে। ফলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।

হাঁপানির লক্ষণ: ফুসফুস বিশেষজ্ঞ সমীরণ সেনগুপ্তের মতে, এই অসুখে শ্বাস নেওয়ার সময় শাঁ শাঁ করে আওয়াজ হতে থাকে অনেকের ক্ষেত্রে। শ্বাসকষ্টের প্রভাবে রাতে না ঘুমোতে পারা, রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাশির দমক বাড়া, ঘন ঘন শ্বাস, সারা শরীরে বিজবিজে ঘাম, অল্পেই বুকে কফ জমে যাওয়া, শ্বাস নিতে না পারার দমবন্ধ কষ্ট এই অসুখের প্রধান কয়েকটা লক্ষণ।

আরও পড়ুন: ডায়াবিটিস রুখতে প্রোটিন ইঞ্জেকশনের ভাবনা ভারতীয় গবেষকদের! কতটা কার্যকর?

শিশুদের জন্যও ঘরেই ব্যবস্থা রাখুন মাস্ক ও ইনহেলার।

তবে কিছু বিষয়ে সচেতন না হলে এই অসুখ যে কোনও সময় বেড়ে যেতে পারে। কুয়াশা, ধোঁয়া, রাসায়নিকের উপস্থিতি, বিশেষ কোনও গন্ধ, গ্যাস, ধুলো ইত্যাদি থেকে অ্যাজমা বাড়তে পারে। যে যে বিষয়ে অ্যালার্জি রয়েছে তাকে অবহেলা করলে অ্যালার্জি প্রভাবে বাড়তে পারে অ্যাজমা। হাওয়ার ঘুরে বেড়ানো, খালি চোখে দেখতে না পাওয়া ফুলের রেণু, পশু-পাখির রোম, ঠান্ডা পানীয়, পোকা অনেক কিছু থেকেই এই অসুখ বাড়তে পারে। অ্যালার্জির উৎস জানতে পারলে তাই এই রোগের চিকিৎসা অনেকটা সহজ হয়।

এই অসুখ সম্পূর্ণ নিরাময় না হলেও কিছু বিশেষ নিয়মে তাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। নিয়ম মেনে চিকিৎসা করানোই সুস্থ থাকার একমাত্র পথ। তবে তার সঙ্গে সতর্ক থাকুন বিশেষ কয়েকটি বিষয়ে।

অ্যালার্জি রয়েছে, এমন খাবার নৈব নৈব চ। অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা যায়, কোনও একটি খাবারে অ্যালার্জি এক সময় থাকলেও এখন হয়তো কেটে গিয়েছে, আবার অ্যালার্জি বাড়ে এমন কোনও খাবার ভুল করে খেয়ে ফেলেও অ্যালার্জি হয়নি। কোনওটাতেই নিশ্চিন্ত হয়ে যাবেন না। নতুন করে অ্যালার্জি তৈরি করতে পারে যে কোনও খাবার আবার অ্যালার্জি রয়েছে এমন খাবারে কয়েক বার কিছু না হলেও পরে তা ফিরে আসতেই পারে। তাই টানের কষ্ট থাকলে অ্যালার্জি টেস্ট করাতে থাকুন মাঝেমধ্যেই। অফিস শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হলে অবশ্যই কান-মাথা ঢেকে বসুন। গায়ে রাখুন পাতলা চাদর। শীতে শোওয়ার সময়ও কান-মাথা ঢেকে ঘুমোন।ঘাম হচ্ছে কি না কেয়াল রাখুন। ঘাম হলে গরম পোশাক খুলুন। ঘাম বসে ঠান্ডা লাগলেও বিপদ বাড়বে। হাতের কাছেই থাক ইনহেলার। যখন তখন কাজে আসতে পারে। গরম চা হাঁপানির টানে উপশমের কাজ করে। তবে দুধ চা একেবারেই খাবেন না। অ্যাসিড রিফ্লাক্স বাড়িয়ে দেয় হাঁপানির টান। চলতে পারে গ্রিন টি বা লিকার চা।

আরও পড়ুন: জগিং বা দৌড়ের জেরে পেশীর চোট-আঘাত কাটিয়ে উঠবেন কী ভাবে

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

পশু-পাখির রোমে অ্যালার্জি থাকলে ঋতুবদলের সময় পোষ্যদের সঙ্গও এড়িয়ে চলতে হতে পারে। ঠান্ডা লেগেছে বুঝলেই চিকিৎসকের কাছে যান। অল্প সর্ষের তেল হাতের তালুতে নিয়ে বুকে মাসাজ করলেও কিছুটা আরাম পাবেন। ইউক্যালিপটাস তেল হাঁপানিতে খুব কার্যকর। গরম জলে দু‍‌'ফোটা এই তেল ফেলে ভেপার নিলে উপশম পাওয়া যায় ঠান্ডা পানীয়, আইসক্রিম, ফ্রিজে পাতা দই না খেয়ে বরং গরম গরম স্যুপ খান। এতে উপকার পাবেন। হাঁপানির টান উঠলে পিঠে বালিশ রেখে আধশোয়া হয়ে থাকলে খানিকটা আরাম পাবেন। কিছু কিছু ব্যায়ামে নিয়ন্ত্রণে থাকে অসুখ। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে সেই সব ব্যায়াম রপ্ত করুন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE