Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সাধারণ অ্যালার্জিও হতে পারে মারাত্মক

গাছে জল দিতে গিয়ে হাতে ভীমরুলের কামড় খেয়েছিলেন হাওড়ার সজল দাস। সঙ্গে সঙ্গেই চুন লাগিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ঘণ্টা দু’য়েক পর থেকেই শরীরের বিভিন্ন জায়গা ফুলে উঠতে থাকে। শুরু হয় চুলকানি। কমেনি হাতের যন্ত্রণাও। প্রথমে পাত্তা দেননি সজল বাবু।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৫ ১১:২৫
Share: Save:

গাছে জল দিতে গিয়ে হাতে ভীমরুলের কামড় খেয়েছিলেন হাওড়ার সজল দাস। সঙ্গে সঙ্গেই চুন লাগিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ঘণ্টা দু’য়েক পর থেকেই শরীরের বিভিন্ন জায়গা ফুলে উঠতে থাকে। শুরু হয় চুলকানি। কমেনি হাতের যন্ত্রণাও। প্রথমে পাত্তা দেননি সজল বাবু। অ্যালার্জি কমানোর জন্য লেবুর জল খেয়েছিলেন। কিন্তু পর দিন থেকেই শুরু হল শ্বাসকষ্ট। বুকে অসহ্য ব্যথা। ক্রমশই নেতিয়ে পড়তে থাকলেন তিনি। ভর্তি করতে হল হাসপাতালে।

নতুন গহনা পরেই চামড়ায় জ্বলুনি শুরু হয়েছিল অমৃতার। গহনা খুলে রাখলেও জ্বলুনি কমেনি। চামড়ায় দেখা দিয়েছিল লাল দাগ এবং ছোট ছোট ফুসকুড়ি। ক্যালামিন লোশনেও কমেনি। বরং সময় গড়াতেই শুরু হয়েছিল শ্বাসকষ্ট। হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল অমৃতাকেও।

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এই দুটি ক্ষেত্রেই দায়ী সময় মতো অ্যালার্জির চিকিৎসা না হওয়া। ঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু না হওয়ায় ওই দুজনের শরীরেই তৈরি হয়েছিল এক বিশেষ অ্যান্টিবডি আর তা থেকেই দেখা দিয়েছিল শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা। ডাক্তারি পরিভাষায় যার নাম অ্যানাফাইলেক্সিস। যা দীর্ঘদিন ধরেই চিকিৎসকদের দুশ্চিন্তার কারণ।

কেন হয় অ্যানাফাইলেক্সিস?

চিকিৎসকদের মতে, অ্যালার্জিই এর জন্য দায়ী। দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতার অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়াই হল অ্যালার্জি। খুব সাধারণ কিছু জিনিস যেমন ধুলো, ফুলের পরাগ, খাবার, পতঙ্গের কামড় (এদেরকে বলা হয় অ্যালার্জেন) থেকেই অ্যালার্জি হয়। বেশিরভাগ মানুষের দেহেই এগুলির কোনও প্রভাব পড়ে না। কিন্তু যাদের অ্যালার্জির প্রবণতা আছে তাদের ক্ষেত্রে এগুলি থেকেই দেখা দিতে পারে নানা সমস্যা। ইন্ডিয়ান সোসাইটি ফর পেডিয়াট্রিক ডারমাটোলজির সভাপতি চিকিৎসক সন্দীপন ধর বলেন, ‘‘এমনিতে কত লোকেই তো ডিম, চিংড়ি কিংবা বেগুন খেয়ে দিব্যি আছে। কিন্তু যাদের সমস্যা হয় তাদের ক্ষেত্রে ব্যপারটা মারাত্মক আকার নিতে পারে।’’

সন্দীপনবাবু জানান, কোনও রকম অ্যালার্জি হলেই শরীরে ইমিউনোগ্লোবিউলিন ই (আইজিই) নামে এক অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। এটি অ্যালার্জেনগুলির সঙ্গে লড়াই করতে শুরু করে। কিন্তু শরীরে আইজিই-এর পরিমাণ বাড়তে থাকলেই বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ রাজীব মালাকার জানাচ্ছেন, অ্যানাফাইলেক্সিসের প্রধান লক্ষণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ‘কার্ডিয়াক ফেলিওর’-এর সঙ্গে মিলে যায়। তাতে সমস্যায় পড়েন চিকিৎসকেরা।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, একটু সচেতন হলেই এর হাত থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। তাঁদের বক্তব্য, সামান্য অ্যালার্জি দেখা দেওয়া মাত্রই অ্যালার্জিনাশক ওষুধ খেতে হবে। যদি দু’দিন পরেও না কমে নিজে নিজে চিকিৎসা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

allergy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE