প্রতীকী ছবি।
অনেকেরই উত্তর কলকাতার বনেদি বাড়ি পছন্দ। খোলা ছাদ, টানা বারান্দা, বড় বড় জানলা-দরজা, উঁচু কড়ি বরগা দেওয়া সিলিং, কুরুশের কাজ করা পরদা-টেবিলের কভার আর কাঠের সাবেকি ধাঁচের আসবাব পেলে আর কিছু চাই না। কিন্তু সে আর এখন সকলের জোটে কোথায়? কংক্রিটের জঙ্গলে এখন প্রায় সকলেরই দেশলাই বাক্সের মতো ফ্ল্যাট বাড়ি। তাতে এই সাবেকি অন্দরসজ্জা খুব যে মানায় তা নয়। মনের মতো কিছু আসবাব হয়তো পেয়েও গেলেন, কিন্তু বাজার থেকে সেগুলি কিনতে গেলেই পকেটে বড্ড টান পড়ে। অত খরচ করা অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয় না। ফলে ইচ্ছেগুলি মনের মধ্যে চেপে রেখে বেশির ভাগ মানুষ ছোটেন কৃত্রিম কাঠের একই ধরনের আসবাব কিনতে।
কিন্তু একটু বুদ্ধি এবং সৃজনশীলতা থাকলেই আপনি ঘর সাজাতে পারেন মনের মতো। আশপাশের জিনিসই নতুন ভাবে সাজিয়ে দেখুন। আসবাবের পিছনে বেশি বাজেট না থাকলেও অন্দরসজ্জার অন্য টুকিটাকির দিকে নজর দিন। তা হলেই ঘরে আনতে পারবেন সাবেকিয়ানা। রইল কিছু সহজ ফিকির।
ঘরের রং
অনেক সময়ে ঘরের রংও অনেকটা অন্দরসজ্জার আমেজ বদলে দিতে পারে। পান্না সবুজ, রোজ-গোল্ড, গাঢ় নীলের মতো কিছু রং ঘরের যে কোনও একটা দেওয়ালে করতে পারেন। সেই দেওয়ালটাই মন দিয়ে সাজান। কিছু পুরনো পোস্টার প্রিন্ট আউট বার করে বাঁধিয়ে রাখতে পারেন। কিংবা একটু অন্য ধরনের আয়নাও ঝোলাতে পারেন।
সোফার কভার
সোফার কভার কিংবা কুশনের কভারের গাঢ় রঙের ভেলভেট কাপড় ব্যবহার করুন। অনেকগুলি রং মিলিয়ে মিশিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে ভয় পাবেন না। ভিক্টোরিয়ান যুগের ছোঁয়া পেতে চাইলে গোলাপের নকশা করা বা অন্য কোনও ফুলের নকশা করা কুশন কভারও বেছে নিতে পারেন।
পিতলের শো-পিস
ঘর সাজানোর সামগ্রীতে যদি পিতল ব্যবহার করতে পারেন, তা হলেও অন্দরসজ্জা বদলে যায়। যে কোনও বাঙালি বাড়িতে বহু পুরনো পিতলের বাসন পড়েই থাকে। সেগুলি বার করে ঘষে-মেজে পালিশ করিয়ে নিন। তার পর একটু সৃজনশীলতার সঙ্গে ব্যবহার করুন। ধরুন বিশাল একটা পিতলের থালা সেন্টারটেবিলে ট্রে হিসেবে ব্যবহার করে তার উপর গাছ রাখতে পারেন। কিংবা পিতলের গ্লাসে জল দিয়ে ফুল সাজাতে পারেন। বাটিতে পপ্যুরি রাখতে পারেন। আবার অনেকের বাড়িতে পিতলের বালতিও থাকে। সেগুলি কায়দা করে আলোর শেড হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।
কার্পেট-শতরঞ্জি
দামি কাঠের বইয়ের আলমারি বা বসার ঘরের ক্যাবিনেট কেনার হয়তো বাজেট না থাকতে পারে, কিন্তু রং-বেরঙের কার্পেট, শতরঞ্জি তো কিনতেই পারেন। অনেক সাবেক নকশা করা কার্পেটের দাম এখন নাগালের মধ্যে চলে এসেছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিভিন্ন গ্রাম থেকে আনা হাতের কাজ করা নানা রকম কার্পেট আপনি এখন খোঁজ করলেই বাজারে পেয়ে যাবেন। সেগুলি কিনে ঘরের বিভিন্ন কোণে রাখতে পারেন।
ওয়াল পেপার
অত্যন্ত কম খরচে ঘরে সাবেকি ছোঁয়া আনতে চাইলে নানা রকম নকশা করা ওয়াল পেপার লাগিয়ে ফেলুন। এখন সব রঙের সংস্থাই এই ধরনের ডিজাইনার ওয়াল পেপার রাখে। বাড়ির প্রিয় ঘরটি বেছে পছন্দসই একটি ওয়াল পেপার লাগিয়ে নিতে পারেন।
মোজায়িক টাইল্স
ভিট্রিফাইয়েড বা গ্রানাইট টাইলের আমলে মোজায়িক টাইল নেহাতই সেকেলে হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কিছু সুন্দর নকশা করা টাইল বার করে যদি রান্নাঘরের একটা দেওয়ালে বা বাড়ির অন্য কোনও দেওয়ালের বুদ্ধি করে কোলাজের মতো লাগিয়ে নিতে পারেন, তা হলে ঘরের ভোল বদল হতে বেশি সময় লাগবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy