Advertisement
২৩ অক্টোবর ২০২৪
liver

নিয়ম মানতে না পেরে লিভারের উপর রোজই অত্যাচার? এ ভাবে সারিয়ে তুলুন রোগ

লিভার ভাল রাখতে মেনে চলুন কিছু জরুরি নিয়ম। ছবি: আইস্টক।

লিভার ভাল রাখতে মেনে চলুন কিছু জরুরি নিয়ম। ছবি: আইস্টক।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৯ ১২:৩৪
Share: Save:

সারা দিনের ইঁদুরদৌড়। তার উপর নামমাত্র খাওয়া, কখনও বা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি খেয়ে ফেলা। আবার সপ্তাহান্তে ছোটবড় পার্টিতে মদ্যপান। কম ঘুম আর বেশি কাজের এই দুনিয়ায় এ ভাবেই দিন কাটে অধিকাংশ মানুষের। অনিয়মিত জীবনের সঙ্গে শখের বা অভ্যাসের মদ্যপান মিশিয়ে তাকে আরও জটিল করে তোলেন অনেকেই। সঙ্গে অবশ্যই চলে ওষুধ খেয়ে চলার প্রবণতা। উদ্দেশ্য, লিভারের যেটুকু ক্ষতি হচ্ছে, তা পুষিয়ে দেওয়া।

‘‘এই ধরনের ভাবনা যদি আপনার মনেও উঁকি দেয়, তবে তা আজই ঝেড়ে ফেলুন। অনিয়ম সত্ত্বেও লিভার ভাল রাখার মতো ওষুধ চিকিৎসাশাস্ত্রে নেই। আসলে লিভার ভাল থাকে নিয়মে, ওষুধে নয়।’’ সোজাসাপটা মত গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট ভাস্কর পালের।

তাঁর মতে, যে সব ওষুধ আমরা আকছার খেয়ে থাকি বা লিভারের জন্য চিকিৎসকরা দিয়ে থাকেন, তাদের ভূমিকা ক্ষতিগ্রস্ত লিভারের আরও ক্ষতি রুখে দেওয়া এবং প্রয়োজনীয় ও সম্ভবপর ক্ষতিপূরণ। তবে সে সব ওষুধ খেলেও নিয়ম মানতেই হয়। অনিয়মও করে যাব, আবার ওষুধ খাব, এই যুক্তিতে অসুখ দূরে রাখা যায় না। কাজেই লিভার যাতে সত্যিই ভাল থাকে সে দিকে নজর দেওয়াই বেশি জরুরি। তবে লিভার এমন একটি অঙ্গ যা খারাপের পথে এগোতে শুরু করলেও নিয়ম মানতে শুরু করলে আবার তাকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব। তাই জীবনযাপনের ধরন বদলে লিভারকে আরাম দিন।

আরও পড়ুন: ক্যালোরি বাড়লেও এই ডায়েটে মোটা হওয়ার কোনও সুযোগই নেই!

লো ক্যালোরি ডায়েটে রাখুন আস্থা।

বদলের ফরমান

প্রতি দিন একটানা আধ ঘণ্টা-৪০ মিনিট হাঁটুন বা আধ ঘণ্টা শরীরচর্চা করুন। মেদবাহুল্য না রুখতে পারলে লিভার ভাল রাখা অসম্ভব। ফ্যাটি লিভার রুখতে প্রায়ই বাইরে খাওয়া বন্ধ করতে হবে। কারণ এর সঙ্গেই যুক্ত কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড ও ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের নানাবিধ সমস্যা, যাকে ‘মেটাবলিক সিনড্রোম’ বলে। তাই ‘‘ফ্যাটি লিভার? ও সকলেরই থাকে’’— এ সব বলে এড়িয়ে যাবেন না। ফ্যাটি লিভার ঠেকাতে লো ক্যালোরি ডায়েটে ভরসা রাখুন। ভাজা-তেলমশলা-মিষ্টি-ফাস্টফুড এ সব বাদ দিতে পারলেই ভাল। একান্তই দু’-এক দিন খেতে চাইলে বাড়িতে খান। যতটা পারেন নামমাত্র তেল ব্যবহার করে। কিছু কিছু ভাজা ডুবো তেল ছাড়া হয় না, সে সব এড়িয়ে চলুন। খুব ইচ্ছে করলে মাসে এক-আধ বার খান। আজকাল তেলেও নানা ক্ষতিকর উপাদান থাকে। সব শরীরে সকল প্রকার তেল ভাল নয়। তাই তেল বাছার জন্য ভরসা রাখুন পুষ্টিবিদের উপর। ভারতে লিভার খারাপ হয়ে যাওয়া মানুষের মধ্যে অধিকাংশই মদ্যপায়ী। মদ্যপানের পরিমাণও এক এক জনের শরীরের ক্ষমতার উপর নির্ভর করে। আপাত ভাবে ক্ষতি হচ্ছে না ভাবলেও জানবেন, দু’-এক পেগেও ক্ষতি হয় লিভারের। সিরোসিস অব লিভার ও লিভারের অন্যান্য রোগ ঠেকাতে তাই মদ্যপান ছাড়তেই হবে। একান্ত না পারলে প্রতি তিন মাস অন্তর লিভার ফাংশন পরীক্ষা করে দেখুন। তবে মদ বর্জনই লিভারকে সুস্থ রাখার সেরা উপায়।

আরও পড়ুন: খুব কষ্ট করার দরকার নেই, এই সব সহজ উপায়েই জল বাঁচাতে পারেন প্রতি দিন

হেপাটাইটিস বি ঠেকাতে বি ভাইরাসের টিকা আবশ্যিক৷

লিভারকে ভাল রাখতে শুধু খাবার নয়, জলের দিকেও নজর দিন। হেপাটাইটিসের আক্রমণ সরাতে জল খুব কার্যকর ভূমিকা নেয়। হেপাটাইটিস বি ঠেকাতে বি ভাইরাসের টিকা নিন৷ আর হেপাটাইটিস সি ঠেকাতে রক্তের বিষয়ে সতর্ক থাকুন৷ দরকারে এমন কোনও ব্লাড ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করুন, যাঁরা হেপাটাইটিস সি স্ক্রিনিং করেন। ইঞ্জেকশন নিলে সিরিঞ্জ যাতে নতুন ও জীবাণুমুক্ত থাকে সে দিকে খেয়াল রাখুন। ওষুধের ক্ষেত্রেও সচেতন থাকুন। এমন কোনও ওষুধ খাবেন না, যা চিকিৎসক পরামর্শ দেননি। লিভারের ওষুধের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE